লিটন পাঠান, হবিগঞ্জ প্রতিনিধি: মাধবপুরে কারখানায় সরবরাহ করা গ্যাসের বিল বকেয়া থাকায় বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল, হবিগঞ্জের মাধবপুর নোয়াপাড়া চা বাগানের সংযোগ। এ অবস্থায় টানা দুই বছর চা উৎপাদন বন্ধ থাকায় লোকসানের মুখে পড়ে কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি বকেয়া পরিশোধের পরেও বাগানে গ্যাসের সংযোগ লাইন চালু করা হয়নি। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ মালিক ও শ্রমিক পক্ষ। বাগানের শ্রমিক ও মালিক পক্ষের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নোয়াপাড়া বাগানে গ্যাস সরবরাহ ব্যবস্থা চালু হয়নি। দুই বছর ধরে গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় কারখানাটি বন্ধ রয়েছে। চা পাতা শুকানো সম্ভব হচ্ছে না। পাতা প্রক্রিয়াকরণ ও উৎপাদন বন্ধ থাকায় বাগান প্রতিবছর বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছে। এই পরিস্থিতির কারণে বাগানের প্রায় দুই হাজার শ্রমিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর জীবন ও জীবিকা সংকটে পড়েছে। শ্রমিকরা জানান, তারা নিম্ন আয়ের মানুষ বাগানে কাজ করেই তাদের পরিবার চালান।
দুই বছর ধরে গ্যাস সংযোগ না থাকায় এমনিতেই তাদের ভোগান্তি বর্ণনা করা মতো নয়। এখনও কারখানা বন্ধ রয়েছে গ্যাস সংযোগ না থাকায়। এতে তাদের কষ্ট আরও বাড়বে, বকেয়া টাকা পরিশোধের পরেও গ্যাস সংযোগ না দেওয়ায় শুধু মালিকপক্ষ না, তারাও চিন্তিত। এমন চলতে থাকলে তারা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুইজন শ্রমিক বলেন, গ্যাস না থাকায় দেশের চাশিল্পের গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের পথে। অনেক কষ্টে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছেন। যদি বাগান একেবারে বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে বাগানের দুই হাজার মানুষের পরিবারের জীবন ও জীবিকা সংকটে পড়বে, বাগান ব্যবস্থাপক সোহাগ মাহমুদ জানান, ২০ লাখ টাকার বকেয়া গ্যাস বিল এক মাস আগে পরিশোধ করা হয়েছে। এখনও গ্যাস সংযোগ না পাওয়ায় কারখানা চালু রাখা সম্ভব হয়নি। এতে লোকসানের পরিমাণ বাড়ছেই। গ্যাস সংযোগ পেলে বাগান চালু করা সম্ভব।
নোয়াপাড়া চা বাগানের শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি কমেড নায়েক বলেন, গ্যাস সংযোগ দ্রুত দেওয়া না হলে শ্রমিকরা বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকার কারণে কারখানার যন্ত্রপাতি নষ্ট হওয়ার পথে। অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে অভাবের মাঝেও মালিকপক্ষ বকেয়া পরিশোধ করেছেন বাগান ও শ্রমিকদের জন্য। বাগানে পূর্ণ উদ্যমে উৎপাদন চালু করতে গ্যাস সংযোগ দ্রুত পুনঃস্থাপনে তারা সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান। সাধারণ সম্পাদক মনি বাউড়ি জানান, গ্যাস সংযোগ না থাকায় শুধু শ্রমিকরাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন না, বাগানের উৎপাদনও বন্ধ রয়েছে। সাবেক ইউপি সদস্য শ্যামল বুনার্জি জানান, চা শ্রমিকদের অসন্তোষ দিন দিন বাড়ছে।
যদি গ্যাস সংযোগ না দেওয়া হয় শ্রমিকরা আন্দোলনে নামতে পারে সেক্ষেত্রে আরও সংকট বাড়বে। স্বাভাবিকভাবে সব সমাধান হওয়া জরুরি। জালালাবাদ গ্যাস অ্যান্ড টিডি সিস্টেম লিমিটেড হবিগঞ্জ শাহজিবাজারের ম্যানেজার হুসাইন মো. জুনায়েদ বলেন, নোয়াপাড়া চা বাগানের সব বকেয়া পরিশোধ করা হয়েছে। ঢাকার অনুমোদন পেলেই বাগানে গ্যাস সংযোগ দেওয়া হবে। তারা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছেন।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply