শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:০৬ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ
শহীদ ওসমান হাদীর চেতনা ধারণ করে আধিপত্যবাদভুক্ত দেশ গঠন করতে হবে : জাতীয় ঐক্য জোট নেতৃবৃন্দ শরিফ ওসমান হাদির মাগফিরাত কামনায় চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজে ছাত্রশিবিরের দোয়া মাহফিল মাধবপুর, ডেভিল হান্ট, ফেজ-২ অভিযানে ছাত্রলীগের ২ নেতা গ্রেফতার  প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের টেলিফোনে কথা রূপগঞ্জে পুলিশের অভিযানে দূর্ধর্ষ সন্ত্রাসী নাজমুল হাসান টিপু গ্রেফতার বিমান চলাচল রুটে ড্রোন উড়াতে বেবিচকের নিষেধাজ্ঞা ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে মার্কিন দূতাবাসের শোক প্রকাশ এআইয়ের কুফল: তাছলিমা আক্তার মুক্তা অনিবার্য কারণে ঢাবির বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত মানিকগঞ্জ-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে অনশন

ভৈরবে প্লাস্টিকের তৈরি বস্তায় বাজার সয়লাব

ইমন মাহমুদ লিটন
  • আপডেট : শুক্রবার, ১২ জুলাই, ২০২৪
  • ৩৫৭ Time View

ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি: ব্যাবসা বাণিজ্যের জন্য প্রসিদ্ধ বন্দর নগরী কিশোরগঞ্জের ভৈরবে পণ্য বহনে পাটের তৈরি ব্যাগ বস্তার সংকট থাকায় হাট বাজার সয়লাব হয়ে গেছে নিষিদ্ধ প্লাস্টিকের ব্যাগ আর বস্তায়। ফলে একদিকে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ অপরদিকে লোকসানে পড়ছে পাট শিল্প। ব্যাপারী আর মহাজনরা বলছেন পাটের তৈরি ব্যাগ আর বস্তা খুব একটা পাওয়াই যায় না। যদিও কদাচিৎ পাওয়া যায় তাহলে দাম বেশি।

ক্রেতারা বলেন, প্লাস্টিকের ব্যাগ বস্তা দেখতে আকর্ষণীয় আর দামেও কম এবং সহজলভ্য। যদিও প্লাস্টিকের মোড়কগুলো পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। স্থানীয়রা বলেন পাটের তৈরি মোড়কের স্থান দখল করে নিয়েছে প্লাস্টিকের ব্যাগ আর বস্তা। পাটের পণ্যের ব্যবহার বাড়াতে বাজার মনিটরিং বা মোবাইল কোর্ট না চালানোই প্লাস্টিক ব্যাগ বস্তার ব্যবহার বাড়ছে। 

সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের পাড়ামহল্লা থেকে শুরু করে গ্রামের হাট বাজারে এখন অবাধে ব্যবহার হচ্ছে প্লাস্টিকের তৈরি ব্যাগ আর বস্তা। বাজারের কয়েকটি ধান চাউলের আড়তসহ বিভিন্ন অলিগলিতে গিয়ে দেখা যায় সবজির বাজার থেকে শুরু করে ধান চাউল ডাউল আটা ময়দা রসুন পেঁয়াজ মরিচ সার চিনি গম ভুট্টা, আলু ধনিয়া আদা তুষ কুড়াসহ সব কিছুতেই ব্যবহার হচ্ছে নিষিদ্ধ প্লাস্টিকের মোড়ক। ১৭টি পণ্যে সরকার ঘোষিত পাটজাত মোড়কের ব্যবহারের নির্দেশনা থাকলেও ব্যবসায়ীরা তা না মেনে প্লাস্টিকের ব্যাগ বস্তার ব্যবহার করছে দেদারসে।

স্থানীয় ক্রেতাদের সাথে কথা অনেকেই বলেন, একসময় বাজার অথবা পাড়া মহল্লার দোকানপাটে দোকানিরা ঝুলিয়ে রাখতো পাটের তৈরি ব্যাগ। এখন সে জায়গায় ঝুলিয়ে রাখা হয় প্লাস্টিকের তৈরি ব্যাগ। পণ্য কিনলেই মহাজনরা ক্রেতাদের হাতে ধরিয়ে দিচ্ছে প্লাস্টিকের ব্যাগ অথবা বস্তা। মূলত পাটের তৈরি ব্যাগ বস্তা পর্যাপ্ত না পাওয়াতে এগুলোর ব্যবহার বেড়ে গেছে।

 ভৈরববাজারের মুদি দোকানি ইয়াছিন আরাফাত, হাবুল্লা মিয়া, সুমন মিয়াসহ আরো কয়েকজনের সাথে কথা তারা জানান, পাটের ব্যাগ বস্তা এখন পাওয়াই যায় না। বাধ্য হয়েই প্লাস্টিকের ব্যাগ বস্তা ব্যবহার করতে হচ্ছে। ক্রেতাদেরও চাহিদা এ মোড়কেই।

চটের বস্তা ব্যবসায়ী মোঃ তারা মিয়া বলেন, বর্তমানে বাজারে পাটের বস্তার আমদানি খুবই কম। এজন্য পাটের বস্তার দাম একটু বেশি। প্লাস্টিকের বস্তায় ধান ভরলে ধান নষ্ট হয়ে যাবে। কারণ প্লাস্টিকের বস্তায় কোন হাওয়া বাতাস ঢুকতে পারেনা। অনেক ব্যাপারী পাটের বস্তার অভাবে প্লাস্টিকের বস্তায়  ধান পাঠায়। গরমে সেসব ধান বেশির ভাগই নষ্ট হয়ে যায়। পাটের বস্তার উৎপাদন বাড়াতে সরকার যেন সেই দিকে নজর দেয়।

ধান ব্যাপারি মুশিদ মিয়া  বলেন, পাটের বস্তার দাম একটু বেশি হলেও এর ধারণ ক্ষমতা বেশি। মালামালগুলোও ভাল থাকে। প্লাস্টিকের বস্তার দাম কম হলেও বেশির ভাগ মাল নষ্ট হয়ে যায়। এতে করে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্থ হন।  আড়তদার লোকমান হেকিমসহ আরো কয়েকজন বলেন, মিলাররা যে মোড়কেই ভরে পাঠাক আমরা সেটাই বিক্রি করব। প্লাস্টিকের ব্যাগ বসÍা দেখতে সুন্দর দামেও কম। ক্রেতাদের প্লাস্টিকের বস্তার প্রতি আগ্রহ বেশি। তবে এটা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। সরকারের নিষেধাজ্ঞা মানছেনা মিলাররা। প্লাস্টিকের মোড়ক ব্যবহারের জন্য একমাত্র মিলারই দায়ী। 

ব্যবসায়ী আব্দুল করিম মিয়া বলেন, প্লাস্টিকের বস্তার গায়ে থাকছে পণ্যের উৎপাদন তারিখ,পরিমাণ, ব্যান্ডের নাম, কোম্পানির নাম সব কিছু। তাছাড়া বৃষ্টিতে মালামালের তেমন ক্ষতি হয় না। আরেকটা সুবিধা হল কাম দামে ২৫ থেকে ৩০ কেজির বস্তাও পায়া যায়। বর্তমান বাজারে পাটের বস্তা খুব একটা পাওয়াই যায় না, যদিও পাওয়া যায় তাও দাম অনেক বেশি। 

ভৈরব জব্বার জুট মিলস কর্মকর্তা এস এস বাক্কি বিল্লাহ বলেন, পাট জাতীয় পণ্যের ব্যবহার না থাকায় পাট শিল্পে চলছে এখন দুরবস্থা। পাটের তৈরি বস্তা ও বেগ ব্যবহারের ক্রেতা পাওয়া যায় না। এখন সবাই প্লাস্টিকের বস্তা ও পলিথিন ব্যবহার করে। ধান, চাল, গম, ভুট্টা, সার, চিনি, মরিচ, হলুদ, পেঁয়াজ, আদা, রসুন, ডাল, ধনিয়া, আলু, আটা, ময়দা, তুষ-খুদ-কুড়া এই  ১৭টি পণ্যের সংরক্ষণ ও পরিবহনে পাটজাত মোড়কের ব্যবহারের নির্দেশনা থাকলেও তা মানছেনা কেউ। যার ফলে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে। যে-সব কারখানাগুলো চালু ছিল সে সব কারখানায় কোটি কোটি টাকার উৎপাদিত পণ্য বিক্রি না হওয়ায় পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে। অসংখ্য শ্রমিক বেকার হচ্ছে। সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে হলে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের জোড়ালো উদ্যোগ নিতে হবে।  

ভৈরব পাট উপসহকারী পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা মোঃ সিহাব উদ্দীন বলেন উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর পাট ও পাট বীজ উৎপাদন এবং সম্প্রসারণ বিষয়টি আমি দেখি। বাজার মনিটরিং ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনার জন্য জেলা অফিসার আছেন তিনি এ বিষয়গুলো দেখেন। এর বেশি কিছু আমি বলতে পারছি না।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS