ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি: কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ক্রিকেট খেলা নিয়ে সংঘর্ষে বাড়ি ঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন আহত হয়েছে।
রোববার ( ৭ জুলাই) সকাল ১০টায় উপজেলার কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নের আজরানের বাড়ি ও ফুল মিয়ার বাড়ির মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে ইউপি চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ তথ্য নিশ্চিত করেন ভৈরব থানা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সাহিদুল ইসলাম।
সংঘর্ষকারীরা ভৈরব-ময়মনসিংহ রেললাইনের পাথর নিক্ষেপ করে রেললাইন ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এতে সরকারের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, ৪/৫ দিন পূর্বে কালিকাপ্রসাদ রেলওয়ে স্টেশনের পাশে ক্রিকেট খেলতে গিয়ে ইলমা নামে এক বাচ্চার গায়ে বল লাগায় হৃদয় মিয়া গ্রæপ ও মিহাদ গ্রæপের সাথে ঝগড়া বাদে। পরে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. লিটন মিয়ার নেতৃত্বে এ ঝগড়াটি সমাধান হয়। ৬ জুলাই দুপুরে মিহাদ স্কুলে গেলে হৃদয় গ্রæপ তাকে মারধর করে। এতে বেলা ৩টায় দুই পক্ষ আবার সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এ সময় কালিকাপ্রসাদ বাসস্ট্যান্ড এলাকার জামান মার্কেটের মিহাদ পক্ষের একটি চায়ের দোকান ভাঙচুর করে হৃদয় গ্রæপের লোকজন। এ সময় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হলে হৃদয় মিয়া, ইব্রাহিম মিয়া ও নজরুল মিয়া আহত হয়। স্থানীয় মীমাংসা করবে বলে ঝগড়ার সমাধান করে।
এ বিষয়ে ফুল মিয়া বাড়ির পক্ষে ইছহাক মিয়া বলেন, সংঘর্ষটি স্থানীয় নেতৃবৃন্দ মীমাংসা করেছে তিনদিন আগেই। আজ সকালে আরজানের নেতৃত্বে খা বাড়ির লোকজন এ সংঘর্ষে যোগ দেন। তারা পরিকল্পিতভাবে আজ সকালে আমাদের এলাকার মানুষের উপর হামলা চালিয়েছে।
আরজানের বাড়ির আলিম মিয়া জানান, ছোট বাচ্চারা ক্রিকেট খেলা নিয়ে ঝগড়া করেছে। এক পক্ষ আরেক পক্ষের কাছে ভুল স্বীকার করলে ঝগড়াটি সহজে মিটে যেতো। তা না করে উভয় পক্ষ ঝগড়াই লিপ্ত হয়েছে। ফুল মিয়া বাড়ির লোকজন আমাদের বাড়িতে এসে বাড়ি ঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে।
আজ ৭ জুলাই সকাল ১০টা থেকে থেমে থেমে ২ ঘণ্টা দুই গ্রুপের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে করে ৫/৭টি বাড়ি ঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। এ ঘটনায় আরো ১৩ জনের মতো আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে ১০ জন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন। বাকীরা বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছে।
আহতদের মধ্যে জাবেদ মিয়া (২২), অন্তর মিয়া (২০), রতন (২১), সোহান (২২), জুয়েল (২৩), তাইকুল (২০), জিলানী (২৭) , হৃদয় মিয়া (২২), ইব্রাহিম মিয়া (২৫) ও নজরুল মিয়া (২৬) ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন। এদের মধ্যে জিলানীকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। ৪ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রাখা হয়েছে। এ তথ্য জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার সোহরাব হোসেন সৌরভ। এ ঘটনায় নিরপরাধ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্য কাউসার মিয়া বলেন, মাঠের পাশে আমাদের বাড়ি। দুই পক্ষের সংঘর্ষে আজ আমাদের বাড়ি ঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে। আমরা এর ক্ষতিপূরণ কোথায় পাবো। এর আগেও আমাদের বাড়ি ঘরে হামলা করেছে সংঘর্ষকারীরা।
এ বিষয়ে কালিকাপ্রসাদ ইউপি চেয়ারম্যান লিটন মিয়া জানান, বাড়ির পাশে ক্রিকেট খেললে বল টিনে লাগবে, মানুষের শরীরে লাগবে। কিন্তু এতে করে দা, বল্লম নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হতে হবে বিষয়টি দুঃখজনক। আমি এসে পুলিশে খবর দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখি। এক সপ্তাহ যাবত এ সংঘর্ষ চলছিল। সালিশী দরবারের মধ্যে মীমাংসাও করেছিলাম। একটি কুচক্রী মহলের ইন্দনে দুই পক্ষ আজ মারামারিতে লিপ্ত হয়েছে। আমি সালিশী দরবারের মাধ্যমে বিষয়টি আবার শেষ করার চেষ্টা করছি।
এ বিষয়ে ভৈরব থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বর্তমানে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply