বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:২৭ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ
হামিদ ফেব্রিক্স দর পতনের শীর্ষে প্রগতি ইন্স্যুরেন্স দর বৃদ্ধির শীর্ষে শাহজিবাজার পাওয়ার লেনদেনের শীর্ষে লভ্যাংশ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়েছে গোল্ডেন সন হবিগঞ্জে এই প্রথম নারী পুলিশ সুপার পেলো স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের উদ্যোগে ‘ব্যাংকিং কার্যক্রমে শরি‘আহ পরিপালন’ শীর্ষক ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত কমিউনিটি ব্যাংক ও ট্রপিক্যাল হোমসের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর গ্রাহকদের ডিজিটাল অভিজ্ঞতার মানোন্নয়নে একসাথে কাজ করবে বাংলালিংক ও হুয়াওয়ে শেখ আকতার উদ্দীন আহমেদ আইএফআইসি ব্যাংকে উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে যোগদান করেছেন ভৈরবে প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী ২০২৫ অনুষ্ঠিত

‘বৈষম্য বিরোধী আইনের অন্তর্ভূক্তিমূলক সংশোধন এবং গঠনমূলক প্রয়োগ প্রয়োজন’

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : সোমবার, ১১ এপ্রিল, ২০২২
  • ৫৮ Time View

বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে বৈষম্য বিরোধী বিল ২০২২ উত্থাপন করা হয়েছে। নাগরিক সমাজের বিভিন্ন পর্যায় থেকে বহুদিন ধরেই এমন একটি আইন প্রণয়নের দাবি জানানো হয়েছে। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে মাসে এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশ এর আয়োজনে অনুষ্ঠিত নাগরিক সম্মেলনের ঘোষণাপত্রেও এই আইনের দাবি করা হয়েছিল।

রোববার (১০ এপ্রিল) সংসদে উত্থাপিত বৈষম্য বিরোধী বিলের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে আয়োজিত এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের নেতারা এই দাবির কথা তুলে ধরেন।

এসময় এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, বহুদিন ধরেই নাগরিক প্ল্যাটফর্ম ও তাঁর সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো এই আইন উত্থাপনে ও খসড়া প্রণয়নে সরকারকে সহায়তা করে আসছে। ২০১৭ সালে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের সম্মেলনের একটি ঘোষণাপত্রেও এই আইন উত্থাপনের দাবি করা হয়েছিল। নিঃসন্দেহে, সংবিধানের মৌলিক ধারাগুলোর উপর ভিত্তি করেই এই আইনটি উত্থাপন করা হয়েছে। তবে, এই আইনের সঠিক বাস্তবায়নের জন্যে দৃশ্যমান রাজনৈতিক স্বদিচ্ছা, দক্ষ প্রশাসন ও নাগরিক নজরদারি প্রয়োজন।

নাগরিক প্ল্যাটফর্মেও কোর গ্রুপের সদস্য এবং মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম সভা প্রধান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তিনি জনবান্ধব, বিশেষত এমন নারীবান্ধব আইন উত্থাপনের জন্য সরকারকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, এই আইন উত্থাপন কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এর পেছনের দীর্ঘদিনের সংগ্রামের কথা তিনি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ২০০৭ সালে প্রথম এর কাজ শুরু হয় এবং লক্ষ্য করা হয়, বৈষম্যকে সুনিদির্ষ্টভাবে লক্ষ্য করে কোন আইন নেই। পরবর্তীতে জনমত জরিপের মাধ্যমে ২০১৩ সালে আইন কমিশনে খসড়া জমা দেওয়া হয়। এখন এই আইনটি জনগণের প্রত্যাশাকে প্রতিফলিত করে কিনা সেটা পর্যবেক্ষণ করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। তবে সেজন্যে সঠিক মনিটরিং কমিটি প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।

নাগরিক উদ্যোগের নির্বাহী প্রধান জাকির হোসেন বলেন, ঢাকায় বসে প্রত্যন্ত ও বিচ্ছিন্ন অঞ্চলে কি ধরণের বৈষম্য চর্চা হয়, সেটা বোঝা খুব কঠিন। উত্থাপিত আইনে সুস্পষ্টভাবে কোন শাস্তির বিধান রাখা হয় নাই। এক্ষেত্রে আইনে সুস্পষ্ট শাস্তির বিধান থাকা জরুরি বলে তিনি মনে করেন। তিনি আরও বলেন, বৃহত্তর স্বার্থে মনিটরিং কমিটির মেয়াদ ২ বছরের বিষয়ে কিছুটা নমনীয় হওয়া যেতে পারে।

বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টেও (ব্লাস্ট) নির্বাহী পরিচালক ব্যারিস্টার সারা হোসেন বলেন, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জনগোষ্ঠী (যেমন- হিজড়া, প্রতিবন্ধী, সংখ্যালঘু) তাদের বিরুদ্ধে হওয়া বৈষম্যের ব্যাপারে জানিয়েছেন। সামগ্রিকভাবে একটি আইনের মাধ্যমে সব ধরনের বৈষম্যকে কেন্দ্রীভূত করার এই প্রচেষ্টা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।
তবে, আইনে বৈষম্যের সংজ্ঞায় এখনো কিছু সমস্যা আছে। যেমন – যৌনকর্মীদের পেশা বৈধ কি না; এ ব্যাপারে আইনে স্পষ্ট কিছু বলা নেই। এখানে লক্ষ্যণীয় যে, বৈষম্যের প্রতিকার কিভাবে হবে সেটা এই আইনে স্পষ্ট নয়।

তাছাড়া, রাষ্ট্রের অনেক আইনেই বৈষম্যমূলক ধারা আছে। যেমন – সাক্ষ্য আইনের মাধ্যমে ধর্ষিতার চরিত্র হনন, একজন নারীর কাজী না হতে পারা কিংবা প্রতিবন্ধিদের বিসিএস বা জুডিশিয়াল সার্ভিসে সক্রিয়ভাবে যোগদানের সীমাবদ্ধতা। তাছাড়া, মনিটরিং কমিটির ক্ষমতা, কার্যব্যপ্তি এবং স্বাতন্ত্র্য নিয়েও প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।

সেন্টার ফর পিস অ্যান্ড জাস্টিসের সিনিয়র ফেলো এবং, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ড. ফস্টিনা পেরেইরা বলেন, প্রতিকারের জায়গাটা আরও বিস্তৃত হওয়া উচিত। যেমন- একজন ব্যক্তি একের অধিক ধরনের বৈষম্যের সম্মুখীন হতে পারেন। সেক্ষেত্রে তিনি কী ধরনের প্রতিকার পাবেন, সেটা স্পষ্ট নয়। তাছাড়া, উত্থাপিত আইনে অভিযোগ দায়ের থেকে শুরু করে সবশেষে প্রতিকার পেতে একধরনের প্রশাসনিক দীর্ঘসূত্রিতা লক্ষ্যণীয়। একজন ক্ষতিগ্রস্ত নিজ থেকে অভিযোগ দায়ের করার আগেই ক্ষতিগ্রস্তের জন্যে রাষ্ট্রকে নিজ উদ্যোগে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে উদ্যোগী হওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।

রাজনৈতিক শূণ্যতার প্রেক্ষিতে বর্তমানে আমলাতান্ত্রিক ক্ষমতার ব্যপ্তি ঘটানোর জন্যেই সব ধরনের আইন প্রণিত হয় বলে মনে করেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট-এর আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক। তিনি উত্থাপিত আইনে প্রতিকারের জন্যে যে মনিটরিং কমিটিগুলোর কথা উল্লেখ আছে, তাদের কার্যপ্রক্রিয়া নিয়ে কথা বলেন। পূর্ব অভিজ্ঞতার আলোকে তিনি মনে করেন, অনেকক্ষেত্রেই এই ধরণের আইনে মনিটরিং কমিটি গঠিত হলেও, তাদের কোন ধরণের সভা অনুষ্ঠিত হয় না। ফলে, আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন দেখা যায় না।

নাগরিক প্ল্যাটফর্মের কোর গ্রুপের সদস্য এবং, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বৈষম্যের কাঠামোগত সংজ্ঞায়নে মানসিক প্রতিবন্ধি, বর্ণ বৈষম্য ও এসিডদগ্ধদের অন্তর্ভুক্ত করা উচিৎ। তাছাড়া, এই আইনে ভূমির আইনগত মালিকদের কথা বলা হলেও, প্রথাগতভাবে ভূমির মালিকদের তথা আদিবাসীদের ব্যাপারে কিছু উল্লেখ করা হয়নি। আইনের বাস্তবায়নে প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতার প্রতি আলোকপাত করে তিনি উল্লেখ করেন, একটি বৈষম্য বিরোধী কমিশন গঠন করার মাধ্যমে উত্থাপিত আইনের বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা সেটা দেখা জরুরি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS