বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:৫৫ অপরাহ্ন

ঢাকা টেস্টে হার, সমতায় সিরিজ শেষ বাংলাদেশের

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : শনিবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২৩

মাত্র ১৩৭ রানের টার্গেট ছুড়ে দিয়ে নিউ জিল্যান্ডকে ভালোভাবেই চেপে ধরেছিল বাংলাদেশ। ৬৯ রানেই তারা তুলে নিয়েছিল কিউইদের ৬ উইকেট। কিন্তু এরপর দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে যান গ্লেন ফিলিপস ও মিচেল স্যান্টনার। সপ্তম উইকেটে তারা দুজন ১২.৫ ওভারে ৫.৪৫ গড়ে ৭০ রানের জুটি গড়ে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। ফিলিপস ৪টি চার ও ১ ছক্কায় ৪০ রানে ও স্যান্টনার ৩ চার ও ১ ছক্কায় ৩৫ রানে অপরাজিত থাকেন।

এই জয়ে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজ ১-১ এর সমতার মধ্য দিয়ে শেষ হলো।

বল হাতে মেহেদী হাসান মিরাজ ৩টি ও তাইজুল ইসলাম ২টি উইকেট নেন। ১টি উইকেট নেন শরীফুল ইসলাম।

ফিলিপস ও স্যান্টনারের সপ্তম উইকেট জুটিতে জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে নিউ জিল্যান্ড। ফিলিপ ৩৪ ও স্যান্টনার ২৮ রানে ব্যাট করছেন। এ জুটি ইতোমধ্যে ৫৬ রান তুলেছে ১০.৩ ওভারে।

৬৯ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর দলের হাল ধরেন গ্লেন ফিলিপস ও মিচেল স্যান্টনার। তারা দুজন দলকে বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করেন। তাদের ব্যাটে ভর করে এগিয়ে যাচ্ছে নিউ জিল্যান্ড।

৫১ রানের মাথায় ব্লানডেল ফেরার পর দেশে-শুনে খেলছিলেন ড্যারিল মিচেল। মারার বল পেলে মারছিলেনও। তাতে তিনি অস্বস্তি বাড়াচ্ছিলেন বাংলাদেশের। তবে দলীয় ৬৯ রানের মাথায় মিরাজ তাকে ফিরিয়ে স্বস্তি ফেরান দলে। এ সময় মিরাজের বলে প্রথম স্লিপে ক্যাচ দেন ড্যারিল। সেটা দারুণ দক্ষতায় লুফে নেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ৩৬ বল খেলে ২টি চারে ১৯ রান করে যান তিনি।

৫১ রানের মাথায় পঞ্চম উইকেট হারায় নিউ জিল্যান্ড। তাইজুল ইসলামের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন টম ব্লানডেল। ২ রান আসে তার ব্যাট থেকে।

৩৩ রানেই ৩ উইকেট হারানোর পর টম ল্যাথাম বেশ আগ্রাসী ব্যাটিং করছিলেন। দলীয় ৪৮ রানের মাথায় তাকে ফিরিয়ে বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তি এনে দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ৩ চারে ২৬ রান আসে ল্যাথামের ব্যাট থেকে।

৩৩ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেট হারালো নিউ জিল্যান্ড। এ সময় মেহেদী হাসান মিরাজের বলে এলবিডব্লিউ হন হেনরি নিকোলস। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি তিনি। ১০ বল খেলে ৩ রান করেন তিনি।

দলীয় ২৪ রানের মাথায় দ্বিতীয় উইকেট হারায় নিউ জিল্যান্ড। তাইজুল ইসলামের বল এগিয়ে এসে মারতে গিয়ে স্ট্যাম্পড হন কেন উইলিয়ামসন। ২৪ বলে ২ চারে ১১ রান আসে তার ব্যাট থেকে।

মধ্যাহ্ন বিরতি থেকে ফিরেই নিউ জিল্যান্ড শিবিরে আঘাত হানলেন শরীফুল ইসলাম। তিনি ফিরিয়েছেন ডেভন কনওয়েকে। দলীয় ৫ রানের মাথায় এলবিডব্লিউন হন কনওয়ে। ১৫ বল খেলে ২ রান করেন তিনি।

১৩৭ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে বিনা উইকেটে ৪ রান তুলে মধ্যাহ্ন বিরতিতে গিয়েছে নিউ জিল্যান্ড। জিততে তাদের এখনও প্রয়োজন ১৩৩ রান। হাতে আছে ১০ উইকেট ও পাঁচ সেশন।

নিউ জিল্যান্ডকে মাত্র ১৩৭ রানের টার্গেট দিল বাংলাদেশ। ৮ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে বাংলাদেশ করতে পারে মাত্র ১৪৪ রান। ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়ার মিছিলে আরেকটি বাজে ব্যাটিংয়ের প্রদর্শণী হলো মিরপুরের ২২ গজে।

ধ্বংসস্তুপে দাঁড়িয়ে ফিফটি পেয়েছেন কেবল জাকির হাসান। ৮৬ বলে ৬ চার ও ১ ছক্কায় ৫৯ রান করেন জাকির। তার পরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৫ রান আসে নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাট থেকে। এছাড়া তিন অঙ্ক ছোঁয়া তাইজুল ইসলাম ১৪ ও মুমিনুল হক করেন ১০ রান। বাকিরা আউট হয়েছেন সিঙ্গেল ডিজিটে।

উইকেট স্পিন সহায়ক হলেও নিউ জিল্যান্ড এমন কোনো কঠিন বোলিং করেনি যে ১৪৪ রানে অলআউট হতে হবে। অতিথিদের ভালো বোলিংয়ের থেকে ব্যাটসম্যানদের দায়টাই বেশি। মুশফিক, মুমিনুল, মিরাজ, সোহান, শাহাদাত প্রত্যেকেই আলগা শট খেলে ফিরেছেন ড্রেসিংরুমে।

বল হাতে এজাজ পাটেল ৫৭ রানে পেয়েছেন ৬ উইকেট। এছাড়া আরেক স্পিনার মিচেল স্ট্যানার পেয়েছেন ৩ উইকেট। টিম সাউদির পকেটে গেছে ১ উইকেট।

সিরিজ ড্র করতে নিউ জিল্যান্ডকে ১৩৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে হবে। উইকেট বিবেচনায় কাজটা সহজ হবে না। ব্যাটিংয়ে ব্যর্থ বাংলাদেশ স্পিনারদের ছোবলে ম্যাচটা জিততে পারে কিনা দেখার।

পানি পানের বিরতির পর প্রথম ওভারে জোড়া উইকেট হারাল বাংলাদেশ। মেহেদী হাসান মিরাজ উইকেট উপহার দিয়ে আসার পর নুরুল হাসান সোহান নিজের উইকেট দেন।

এজাজের লেন্থ বল স্লগ সুইপ করতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ দেন মিরাজ। স্ট্যানার দৌড়ে দারুণ ক্যাচ নিয়ে দলকে সাফল্য এনে দেন। ব্যর্থতার বৃত্তে আটকে থাকা সোহান উইকেটে টিকেন ৩ বল। প্রথম বলটি ডট খেলেন। দ্বিতীয় বলে ফরোয়ার্ড ডিফেন্স করতে গিয়ে মিস করেন। কিউইদের আবেদনে সাড়া দিয়ে আম্পায়ার তাকে আউট দেন। রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান। কিন্তু পরের বলে অদ্ভুতুরে শট খেলে নিজের উইকেট ‘আত্মহত্যা’ করেন।

৯৭ রানে বাংলাদেশ হারাল ৭ উইকেট। লিড কেবল ৮৯ রান।

স্ট্যানারের জোড়া আঘাত, বিপদে বাংলাদেশ পঞ্চম উইকেট হারাল বাংলাদেশ। মুশফিকুর রহিমের পর শাহাদাত হোসেন দিপু ফিরেছেন ড্রেসিংরুমে। দুটি উইকেট নিয়েছেন স্পিনার মিচেল স্ট্যানার। এর আগে দিনের শুরুতে এজাজ পাটেলের বলে আউট হন মুমিনুল হক।

দিনের প্রথম ত্রিশ মিনিটে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে বাংলাদেশ। ৮৮ রানে বাংলাদেশ হারিয়েছে পাঁচ উইকেট। লিড কেবল ৮০ রান।

স্ট্যানারের আর্ম বল জোড়া পায়ে খেলতে গিয়ে খোঁচা দিয়ে স্লিপে ক্যাচ দেন মুশফিক। বিদঘুটে শটে মুশফিক বিদায় নেন ৯ রান করে। শাহাদাত ফরোয়ার্ড ডিফেন্স করতে গিয়ে বল মিস করে এলবিডব্লিউ হন। ৪ রান আসে তার ব্যাট থেকে।

উইকেটে টিকে আছেন জাকির হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজ।

মুমিনুল ফিরলেন দিনের শুরুতে ৩৮ রানে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করা বাংলাদেশ পঞ্চাশ ছুঁয়েছে মুহূর্তেই। কিন্তু নড়বড়ে মুমিনুল হক ড্রেসিংরুমে ফিরেছেন দিনের শুরুতেই।

দিনের দ্বিতীয় ওভারে টিম সাউদের বলে টানা দুই চার হাঁকান জাকির হাসান। প্রথমটি স্লিপ ও গালি দিয়ে বেরিয়ে যায়। পরেরটি ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে। সাউদির পরের ওভারে মুমিনুল হকের ক্যাচ উইকেট কিপার টম ব্লান্ডেল ও প্রথম স্লিপে দাঁড়ানো ডার্ল মিচেলের ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে যায়। ক্যাচ নেওয়ার জন্য কেউই চেষ্টা করেনি।

মুমিনুল আরেকটি সুযোগও পেয়েছিলেন। স্পিনার এজাজ পাটেলের বল এগিয়ে এসে বড় শট খেলতে যান। কিন্তু বল তার ব্যাটের কানায় লেগে টপ এজ হয়ে বেরিয়ে যায়। সেই এজাজ পাটেলের বলেই আউট হন মুমিনুল। তার শর্ট বল পুল করতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হয়েছেন ১৯ বলে ১০ রান করা মুমিনুল।

সংক্ষিপ্ত স্কোর,
প্রথম ইনিংস বাংলাদেশ: ১৭২/১০ ও নিউ জিল্যান্ড: ১৮০/১০।
দ্বিতীয় ইনিংস বাংলাদেশ: ১৪৪/১০ ও নিউ জিল্যান্ড: ১৩৯/৬
ফল: নিউ জিল্যান্ড ৪ উইকেটে জয়ী
ম্যাচসেরা: গ্লেন ফিলিপস সিরিজ সেরা: তাইজুল ইসলাম
সিরিজ: ১-১ এ সমতা।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS