বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫, ০১:০৭ অপরাহ্ন

দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : শুক্রবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২৩

দেশের বাইরের ম্যাচ হলেও ইডেন গার্ডেন্সের দর্শকভর্তি গ্যালারি এদিন গলা ফাটিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য। নিজেদের দর্শকদের পাশাপাশি স্থানীয়দের সমর্থন পেলেও ভাগ্যবিধাতাকে খুশি করতে পারেনি প্রোটিয়ারা। অস্ট্রেলিয়াকে ছোট লক্ষ্য দিয়েও বল হাতে তুমুল লড়াই করেছিল টেম্বা বাভুমার দল। তবে আরও একবার সেমিতেই আটকে গেল দক্ষিণ আফ্রিকার বিশ্বকাপ মিশন।

বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে রোমাঞ্চকর এক সেমিফাইনাল ম্যাচ দেখেছে ক্রিকেট ভক্তরা। দিনশেষে স্নায়ুচাপ সামলে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৩ উইকেটে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। এই হারে ওয়ানডে বিশ্বকাপে পাঁচবার সেমিফাইনাল থেকে বাদ পড়ল প্রোটিয়ারা।   

টস জিতে ব্যাট করতে নেমে অস্ট্রেলিয়াকে মাত্র ২১৩ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। এগিয়ে থেকে ইনিংস বিরতিতে যাওয়ার পর রান তাড়ার শুরুটাও দারুণ হয়েছিল অজিদের। তবে ম্যাচে ফিরে দারুণ লড়াই করেছে বাভুমার দল। চাপের মুখে আরও একবার ব্যর্থ প্রোটিয়ারা। ডি কক-হেন্ডরিকসদের ক্যাচ মিসের সুযোগ নিয়ে ১৬ বল বাকি থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় অস্ট্রেলিয়া।   

ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ঝোড়ো ব্যাটিং করেছেন অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনার ট্রাভিস হেড এবং ডেভিড ওয়ার্নার। দুই ওপেনার মিলে ৬ ওভারে ৬০ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকাকে শুরুতেই ভয়াবহ চাপে ফেলে দেন। এইডেন মার্করাম এবং কাগিসো রাবাদা পরপর দুই ওভারে দুই উইকেট নিয়ে ম্যাচে ফেরান দক্ষিণ আফ্রিকাকে।

তৃতীয় উইকেটে গুরুত্বপূর্ণ ৪৫ রানের জুটি গড়েন ট্রাভিস হেড এবং স্টিভেন স্মিথ। প্রথম বলেই ট্রাভিস হেডকে ফিরিয়ে সেই জুটি ভাঙেন কেশভ মহারাজ। তৃতীয় উইকেটে মার্নাস লাবুশেন এবং স্মিথের ২৭ রানের জুটিতে জয়টা আরও সহজ হয়ে যায় অজিদের। তবে দ্রুত সময়ে ব্যবধানে লাবুশেন এবং ম্যাক্সওয়েলকে ফিরিয়ে লড়াই জমিয়ে তোলেন শামসি।

দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচে ফেরার আশা ধুলোয় মিশিয়ে দেয় স্মিথ ও জশ ইংলিস জুটি। তারা দুজনে মিলে যোগ করেন ৩৭ রান। স্মিথকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন জেরাল্ড কোয়েতজে। লম্বা সময় টিকে থাকা স্মিথকে ফিরতে হয় ৬২ বলে ৩০ রানের ইনিংস খেলে।

স্মিথ ফেরার পর স্টার্ককে সঙ্গে নিয়ে ভালোভাবেই এগিয়ে যাচ্ছিলেন ইংলিস। অস্ট্রেলিয়া যখন জয় থেকে ২০ রান দূরে তখন সাজঘরে ফেরেন ইংলিস। কোয়েতজের বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যান ৪৯ বলে ২৮ রান করা অস্ট্রেলিয়ার উইকেটকিপার ব্যাটার। তবে ঠাণ্ডা মাথায় ম্যাচ শেষ করেন কামিন্স ও স্টার্ক। 

এর আগে বোলিংয়ে নেমে প্রথম থেকেই প্রোটিয়াদের চেপে ধরেন স্টার্ক-হ্যাজেলউড। রানের খাতা খোলার আগে সাজঘরের পথ ধরেন বাভুমা। মিচেল স্টার্ক আর জশ হ্যাজেলউডের গতি ও সুইংয়ে কাবু হয়ে এরপর একে একে সাজঘরের পথ ধরেন কুইন্টন ডি কক (৩), রসি ফন ডার ডুসেন (৬) ও এইডেন মারক্রাম (১০)। 

মাত্র ২৪ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে প্রোটিয়ারা। পঞ্চম উইকেটে দলের হাল ধরেন হেইনরিখ ক্লাসেন ও ডেভিড মিলার। অজি পেসারদের তোপ সামলে দুজনে গড়েন ৯৫ রানের জুটি। দলীয় ১১৯ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় প্রোটিয়ারা। পার্ট টাইম বোলার ট্রাভিস হেডের স্পিনে পরাস্ত হন ক্লাসেন। ৪৮ বলে ৪ চার ও ২ ছক্কায় ৪৭ রান করে বোল্ড হন তিনি। ক্রিজে এসে এ স্পিনারকে সামলাতে ব্যর্থ হন মার্কো ইয়ানসেনও। প্রথম বলেই লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি।

একপ্রান্ত আগলে রেখে লড়াই চালিয়ে যান মিলার। সপ্তম উইকেটে তাকে সঙ্গ দেন জেরাল্ড কোয়েতজি। তার সঙ্গে ৫৩ রানের জুটি গড়েন মিলার। কিন্তু আক্ষেপে পুড়ে ৪৪তম ওভারে মাঠ ছাড়তে হয় কোয়েতজিকে। প্যাট কামিন্সের করা স্লোয়ার বাউন্স তার গ্লাভস অতিক্রম করে বাহুতে আলতো স্পর্শ করে জশ ইংলিসের হাতে যায়। ইংলিস-কামিন্সের আবেদনে সাড়া দিয়ে আঙুল তুলেন ফিল্ড আম্পায়ার নিতিন মেনন। সংশয় থাকায় রিভিউ নিতে মিলারের পরামর্শ নেন কোয়েতজি। কিন্তু তিনি না করে দেন। পরক্ষণেই টেলিভিশন রিপ্লেতে দেখা যায় বল তার গ্লাভস নয়, বাহু স্পর্শ করে উইকেটরক্ষকের হাতে গিয়েছিল।

এরপর ক্রিজে এসে মিলারকে সঙ্গ দিতে পারেননি কেশভ মহারাজ। ৮ বলে ৪ রান করে স্টার্কের শিকার হন তিনি। একপ্রান্ত আগলে রেখে সেঞ্চুরি তুলে নেন মিলার। শেষ পর্যন্ত ১১৬ বলে ৮ চার ও ৫ ছক্কায় ১০১ রান করে কামিন্স ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে হেডের হাতে ধরা পড়েন তিনি। ৪৭.২ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে দলের রান তখন ২০৩। শেষদিকে কাগিসো রাবাদার ১২ বলে ১০ রানের ইনিংসে সংগ্রহ ২১২ রানে পৌঁছায় প্রোটিয়ারা।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS