শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:০০ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ
স্পিনিং শিল্প রক্ষার দাবিতে শ্রমিক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংবাদ সম্মেলন ভৈরবে রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেনের ধাক্কায় বৃদ্ধের মৃত্যু বটিয়াঘাটায় সদর ইউনিয়ন যুবদলের দোয়া মাহফিল বটিয়াঘাটায় দেশ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি ও সুস্থ্তা কামনায় দোয়া ও মাহফিল অনুষ্ঠিত ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশন প্লাটফর্মে রেলওয়ে সেবার সম্পর্কিত গণ শুনানী অনুষ্ঠিত ’রবি ওয়াইফাই’ কিনে মালদ্বীপ, নেপাল ও কক্সবাজার ভ্রমণের সুযোগ শীতের পোশাকের যত্ন জনতা ব্যাংকের বিপুল অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের পাঁচটি নতুন মামলা ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট ১২ ফেব্রুয়ারি ইসলামী ব্যাংকের ৪২তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত

স্পিনিং শিল্প রক্ষার দাবিতে শ্রমিক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংবাদ সম্মেলন

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ৩০ Time View

সরকারের ভুল নীতি টেক্সটাইল শিল্পকে আরও ভোগাচ্ছে। যার খেসারত দিতে হচ্ছে এ খাতে কর্মরত শ্রমিক, কর্মকর্তা-কর্মচারীকে। এরইমধ্যে ৩৫টি কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এতে প্রায় লক্ষাধিক শ্রমিক কর্মহীন হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। বাকি কারখানাগুলোতে ৪০ ভাগ ক্যাপাসিটিতে উৎপাদন চলছে। এখনই পদক্ষেপ না নিলে এ শিল্পের ধস ঠেকানো যাবে না। শিল্পকে বাঁচাতে নগদ প্রণোদনা বাড়ানো, নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ ও বিদেশি সুতা আমদানিতে সেইফগার্ড শুল্ক বসানো উচিত।

আজ বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে স্পিনিং শিল্প রক্ষার দাবিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন এই শিল্পে কর্মরত শ্রমিক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সালমা গ্রুপের প্রধান পরিচালক কর্মকর্তা ইঞ্জিনিয়ার আজহার আলী।

লিখিত বক্তব্যে ইঞ্জিনিয়ার আজহার আলী বলেন, গত কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে এই শিল্পের ওপর দিয়ে ঝড় বয়ে যাচ্ছে। কোভিড-১৯, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ডলার ও জ্বালানি সংকটের কারণে উৎপাদন খরচ বেড়েছে। ইতোমধ্যেই প্রায় ৪০ ভাগ শিল্প কারখানার উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে প্রায় লক্ষাধিক শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তা বেকার হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বাকি শিল্প কারখানাগুলো ক্রমান্বয়ে বন্ধ হওয়ার পথে। এমতাবস্থায়  শিল্পকে বাচাঁতে আশু পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি ৭ দফা দাবি তুলে ধরেন। এগুলো হলো- দেশি সুতা ব্যবহারে ১০ শতাংশ নগদ প্রণোদনা, গ্যাস-বিদ্যুৎ বিলে ৩০ শতাংশ ছাড়, সুতা আমদানি বন্ধে এন্টি ডাম্পিং ট্যাক্স বা সেইফ গার্ড ডিউটি প্রয়োগ, ইডিএফ ফান্ড পুনর্বহাল, গামের্ন্টস রপ্তানির উৎপাদন খরচের ৭০ শতাংশ কাচামাল স্থানীয় উৎস থেকে কেনার বাধ্যবাধকতা আরোপ করা, রিসাইকেল পণ্য উৎপাদনে অতিরিক্ত ৫ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া।

এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ শাহীনুল হক বলেন, এক সময় স্পিনিং মিলে ২৫ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া হতো, সে কারণে দেশে টেক্সটাইল কারখানা গড়ে ওঠে। আওয়ামী লীগ সরকার সেটি কমিয়ে দেড় শতাংশে নামিয়ে এনেছে। প্রণোদনা কমানোর মাধ্যমে এই শিল্পের কফিনে শেষ পেরেক মারা হয়। কারণ সরকার যখন প্রণোদনা কমিয়ে দেয়, তখন ভারত সুতা রপ্তানিতে ১১ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া শুরু করে। এ কারণে কম দামে ভারতের সুতা দেশে প্রবেশ করতে শুরু করে।

তিনি আরও বলেন, এখনো যে প্রণোদনা দেওয়া হয়, তার টাকা পেতে দেশের মিল-কারখানাগুলোকে এক বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। পক্ষান্তরে ভারতে ৩ দিনের মধ্যে প্রণোদনার টাকা ছাড় করা হয়। দেশের সুতার তুলনায় কম দামে ভারতের সুতা দেশে আসতে শুরু করে। ২২ মাস যাবৎ ইডিএফের (রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল) সীমা কমানোয় মিলগুলোর ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল সংকুচিত হয়েছে। জ্বালানির দাম বাড়ানোর কারণে সুতার উৎপাদন খরচ বেড়েছে। উৎপাদন খরচ অনুযায়ী সুতার দাম না পাওয়া গেলে আগামী ৬ মাস থেকে এক বছর পর মিলগুলো চালানো যাবে না।

আইইবির গার্মেন্টস বিভাগের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মহিউদ্দিন আহমেদ সেলিম বলেন, স্পিনিং মিলগুলো মুখ থুবড়ে পড়লে শ্রমিকদের কী হবে- তা ধারণাও করা যাচ্ছে না। এজন্য এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে। ৬ মাস বা এক বছর পর সিদ্ধান্ত নিলে বাংলাদেশে এই শিল্প টিকিয়ে রাখা যাবে না।

ইনস্টিটিউশন অব টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড টেকনোলজিস্টসের (আইটিইটি) সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার এনায়েত হোসেন বলেন, এখনই টেক্সটাইল শিল্পের সমস্যা নিরসন করতে না পারলে অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। এই খাতের ওপর অন্তত ৬৩টা খাত নির্ভরশীল। তাছাড়া শ্রমিক কর্মসংস্থানহীন হয়ে পড়লে সামাজিক অবক্ষয় দেখা দিতে পারে।

বাদশা মিয়া টেক্সটাইলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খোরশেদ বলেন, স্থানীয় গার্মেন্টসগুলো দেশীয় সুতা কিনতে চায়। কেজিপ্রতি সাড়ে ৪ ডলারে সুতা কিনেও তারা রপ্তানি করেছে, এখন ৩ ডলারে কিনছে না। অনেক সময় বায়ারদের সুপারিশের কারণে বিদেশ থেকে সুতা-কাপড় কিনতে হয়। এই জায়গায় নীতি সহায়তা দেওয়া উচিত।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন যমুনা গ্রুপের পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার এবিএম সিরাজুল ইসলাম, আহমেদ গ্রুপের উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার শান্তিময় দত্ত, আরমাডা গ্রুপের পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার আবুল কালাম আজাদ, গ্রিনটেক্স স্পিনিংয়ের নির্বাহী পরিচালক রুহুল আমিন প্রমুখ।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS