মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:২৩ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ
দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা নেই: মোমিন মেহেদী কালিয়ায় ”আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ” বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে বর্ণঢ্য র্যালি ও আলোচনা সভা মৌলভীবাজার ও লালমনিরহাট সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিক হত্যার প্রতিবাদে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত বকেয়া ফি–চার্জে প্রার্থীতা বাতিল হবে না, জানালো বাংলাদেশ ব্যাংক ময়মনসিংহে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস ২০২৫ উদযাপন ময়মনসিংহে বেগম রোকেয়া দিবসে অদম্য নারীদের সংবর্ধনা প্রদান বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত ‘২৪তম নবীন শিল্পী চারুকলা প্রদর্শনী ২০২৫’ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলন আগামীকাল ১০ ডিসেম্বর সকাল ১১টায় ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহ, ২০২৫ উদযাপন করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নারীর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনী দ্রুত পাশের দাবিতে আলোচনা সভা রাষ্ট্রীয় ন্যারেটিভের অপব্যবহার, “জঙ্গি অভিযান” নাটক এবং বিচারহীনতার বিরুদ্ধে সত্য উদঘাটন ও ন্যায়বিচারের দাবি

মৌলভীবাজার ও লালমনিরহাট সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিক হত্যার প্রতিবাদে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ৪৩ Time View

সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদের উদ্যোগে ৯ ডিসেম্বর ২০২৫ মঙ্গলবার সকাল ১০:৩০ মিনিটে জাতীয় প্রেসক্লাব সম্মুখে মৌলভীবাজার ও লালমনিরহাট সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিক হত্যা এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে ভারতীয় মিডিয়ার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিলে লেঃ কর্নেল খন্দকার ফরিদুল আকবর এর সভাপতিত্বে ও সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদ এর প্রধান সমন্বয় মোঃ মোস্তফা আল ইহযায এর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জিয়া আইনজীবী ফোরাম এর সহ-সভাপতি এডভোকেট এ এম এন আবেদ রাজা, প্রধান আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন জঙ্জু নরমাল বিশ্ববিদ্যালয় চিন এর ভিজিটিং প্রফেসর ড আবু মূসা মোঃ আরিফ বিল্লাহ, ইসলামি বুদ্ধিজীবী ফ্রন্ট এর চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার সৈয়দ আব্দুল হান্নান আল হাদী, জাতীয়তাবাদী তাতীদলের যুগ্ম সম্পাদক ড. মনিরুজ্জামান, আরজেএফ চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম, মিলন মল্লিকা, আব্দুল আলীমসহ লালমনিরহাট ও মৌলভীবাজার থেকে আগত স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।

প্রতিবাদ সভায় সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদ এর প্রধান সমন্বয়ক মোঃ মোস্তফা আল ইহযায বলেন, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি হত্যা যেন নিয়মিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। যে কোনো মুহূর্তে, যে কোনো অজুহাতে সীমান্তে ওপার থেকে আসা গুলি কেড়ে নিতে পারে সীমান্ত এলাকার মানুষের প্রাণ। গত ০৪ ডিসেম্বর দুপুরে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের সীমান্ত এলাকায় কৃষিজমিতে কাজ করতে যান শুকুরাম উরাং। বেলা দেড়টার দিকে বিএসএফ সদস্যরা তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তিনি দৌড়ে কিছুদূর এগিয়ে এসে মাটিতে পড়ে যান। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে কুলাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলেও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। বিএসএফের গুলিতেই মৃত্যু হয় শুকুরাম উরাং (২৫) নামক বাংলাদেশী যুবকের। এছাড়াও ১২ ঘন্টার ব্যবধানে লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ সবুজ ইসলাম (২৫) বাংলাদেশী নাগরিক কে গুলি করে হত্যা করে।

তিনি আরো বলেন, এদিকে গত শনিবার (২৯ নভেম্বর) চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর সীমান্তে শহিদুল ইসলাম নামে এক বাংলাদেশিকে হত্যার পরের দিন (৩০ নভেম্বর) গভীর রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার আন্তর্জাতিক পিলার ৭৬ ও ৭৭ নম্বরের মধ্যবর্তী স্থানে ভারতের নিমতিতা বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা ইব্রাহিম রিংকু এবং মমিন মিয়া নামের দুই বাংলাদেশিকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যার পর মরদেহ পদ্মা নদীতে ফেলে দেওয়া, এমন নির্মমতা পৃথিবীর কোনো সীমান্ত দেখা যায় না।

জিয়া আইনজীবী ফোরাম এর সহ-সভাপতি এডভোকেট এ এম এন আবেদ রাজা বলেন, এক বছরের কিছু বেশি সময়ের মধ্যে মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে পাঁচ বাংলাদেশি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। গেল একবছরে একই সীমান্তে নবম শ্রেণির ছাত্র সাদ্দাম মিয়া, আহাদ আলীসহ প্রাণ হারান তিন বাংলাদেশি। এছাড়া স্থানীয় ছিদ্দিক আলীর পায়ে গুলি লাগে এবং আহত হওয়ায় তৈমুছ মিয়া নামে আরেকজনের হাত কেটে ফেলতে হয়। ২০২৪ সালের পহেলা সেপ্টেম্বর দত্তগ্রাম সীমান্তে স্কুলছাত্রী স্বর্ণা দাস এবং ২০২৫ সালের ৩১ মে একই সীমান্তে প্রদীপ বৈদ্য নিহত হন। সিলেট বিভাগে একই সময়ে মোট ৯ জন নিহত হয়। সিলেটের কানাইঘাট সীমান্তে আব্দুর রহমান, সুনামগঞ্জের মাছিমপুরে সাইদুল ইসলাম ও বাগানবাড়িতে শফিকুল ইসলাম এবং হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে জহুর আলী বিএসএফের গুলিতে প্রাণ হারান। সিলেট-মৌলভীবাজার সীমান্তে বিএসএফের গুলির কারণে আতঙ্কে থাকেন সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষ।

গত ১১ মাসে ৩১ বাংলাদেশি নাগরিক হত্যা এবং গত ১১ বছরে বিএসএফ এর গুলিতে নিহত হয়েছে ৩৪৮ জন। আওয়ামী লীগ আমলেও বছরে অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছে। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য মতে, সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে ২০১৪ সালে ৩২ জন, ২০১৫ সালে ৪৬ জন, ২০১৬ সালে ৩১ জন, ২০১৭ সালে ২ জন, ২০১৮ সালে ১৫ জন, ২০১৯ সালে ৪৩ জন, ২০২০ সালে ৪৯ জন, ২০২১ সালে ১৮ জন, ২০২২ সালে ২৩ জন এবং ২০২৪ সালে ৩০ জন নিহত হয়েছে। ভারত থেকে অবৈধ পুশইন ও বাংলাদেশি নাগরিক হত্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়া দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের ক্ষেত্রে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে বলেন, পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের নতজানু ও দুর্বল পররাষ্ট্র নীতির কারণে বিএসএফ বছরের পর বছর সীমান্তে হত্যাকাণ্ড অব্যাহত রেখেছে। জুলাই বিপ্লব পরবর্তী সময়েও বর্ডার ভায়োলেন্স নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কঠোর অবস্থান না থাকায় সীমান্ত হত্যাকাণ্ড একটি নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনায় রূপ নিয়েছে। আমরা এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি,  অনতিবিলম্বে আন্তর্জাতিক আদালতে সীমান্ত হত্যার বিচার দাবী করছি।

প্রতিবাদ সভা শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে শুরু হয়ে কদম ফোয়ারা ঘুরে আবার প্রেসক্লাবে এসে শেষ হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS