রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ০২:৪৬ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ
ঢাকা জেলার মানুষের মাথাপিছু আয়, দেশের মানুষের গড় মাথাপিছু আয়ের প্রায় দ্বিগুণের কাছাকাছি গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও ৬৫৯ জন হাসপাতালে ভর্তি, মৃত্যু হয়নি কারও প্রথম প্রান্তিক প্রকাশ এপেক্স ফুটওয়্যারের লভ্যাংশ ঘোষণা প্রিমিয়ার সিমেন্টের এপেক্স ফুটওয়্যার বিদায়ী সপ্তাহে দরপতনের শীর্ষে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক সাপ্তাহিক দর বৃদ্ধির শীর্ষে ওরিয়ন ইনফিউশন সাপ্তাহিক লেনদেনের শীর্ষে চেতনানাশক ওষুধ মেশানো বিস্কুট খাইয়ে কুড়ুলগাছি বশির উদ্দিনের ইজিবাইক ছিনতাই নিরপেক্ষতা হারানো উপদেষ্টাদের অবিলম্বে উপদেষ্টা পরিষদ থেকে বাদ দিতে হবে: আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। গণভোট ছাড়া জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন বৈধ হবে না: জাতীয় ঐক্য জোটের সমাবেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ

ঢাকা জেলার মানুষের মাথাপিছু আয়, দেশের মানুষের গড় মাথাপিছু আয়ের প্রায় দ্বিগুণের কাছাকাছি

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৫

ঢাকা জেলার মানুষের মাথাপিছু আয় বর্তমানে ৫ হাজার ১৬৩ মার্কিন ডলার। এটি দেশের মানুষের গড় মাথাপিছু আয়ের প্রায় দুই গুণের কাছাকাছি। এছাড়া দেশের মোট জিডিপির ৪৬ শতাংশই ঢাকাকেন্দ্রিক, আর মোট কর্মসংস্থানের ৪০ শতাংশ রয়েছে রাজধানীতে।

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) ইকোনমিক পজিশন ইনডেক্স (ইপিআই) বা অর্থনৈতিক অবস্থান সূচকে এ তথ্য উঠে এসেছে।

শনিবার (২৫ অক্টোবর) রাজধানীর মতিঝিলে ডিসিসিআই কার্যালয়ে এই সূচকের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

সভাপতি তাসকিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক সংস্থা, অর্থনীতিবিদ, গবেষক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং সরকারি–বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব একেএম আসাদুজ্জামান পাটোয়ারী। তিনি জানান, দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের বড় একটি অংশ সম্পন্ন হয় ঢাকা জেলায়। দেশের মোট কর্মসংস্থানের ৪০ শতাংশ আসে এই জেলা থেকে। ঢাকাকে বিবেচনা করা হয় আর্থিক খাতের অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সাড়ে সাতশ’র বেশি কোম্পানির প্রধান কার্যালয় ঢাকা জেলায় অবস্থিত।

আসাদুজ্জামান জানান, দেশের শহুরে জনসংখ্যার ৩২ শতাংশের বাস ঢাকা জেলায়। আর মোট জনসংখ্যার ১১ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ ঢাকায় থাকেন। ঢাকা খুবই শিল্পঘন জেলা। দেশের মোট পণ্য রপ্তানির ৪০ শতাংশের বেশি হয় এ জেলা থেকে। সব মিলিয়ে মোট দেশজ আয়ে (জিডিপি) এককভাবে ৪৬ শতাংশ অবদান রাখছে ঢাকা জেলা।

বিবিএসের তথ্যমতে, বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় এখন (২০২৪-২৫ অর্থবছর) ২ হাজার ৮২০ মার্কিন ডলার। যা এ যাবৎকালের রেকর্ড। এর আগের অর্থবছরের চেয়ে মাথাপিছু আয় বেড়েছে ৮২ ডলার। গত অর্থবছরে মাথাপিছু আয় ছিল ২ হাজার ৭৩৮ ডলার।

ঢাকা চেম্বার জানায়, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০১১ সালে করা জেলাভিত্তিক জিডিপির তথ্যকে ভিত্তি ধরে এ জেলার বিনিয়োগ, ভোগ, ব্যয়, আমদানি, রপ্তানি, আয়তন ও জনসংখ্যা বৃদ্ধি প্রভৃতি বিষয়কে বিবেচনায় নিয়ে ঢাকা জেলার মাথাপিছু আয়ের এ হিসাব অনুমান করা হয়েছে। যদিও ঢাকার মাথাপিছু আয় ও জিডিপির এসব তথ্যের সীমাবদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত একাধিক ব্যক্তি।

দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের বাস্তব চিত্র তুলে ধরতে ইকোনমিক পজিশন ইনডেক্স (ইপিআই) বা অর্থনৈতিক অবস্থান সূচক প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা চেম্বার। প্রতি তিন মাস পরপর ইপিআই সূচক প্রকাশ করা হবে। এতে মূলত শিল্প ও সেবাখাতের অর্থনৈতিক কর্মক্ষমতা ও অর্থনৈতিক কার্যক্রমের পরিবর্তন চিহ্নিত করা হবে এবং তার আলোকে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে নীতিনির্ধারকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হবে।

ঢাকা চেম্বারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ফোকাস গ্রুপ আলোচনায় ইপিআই সূচক নির্ধারণের প্রক্রিয়া ও কার্যক্রম নিয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়।

স্বাগত বক্তব্যে সভাপতি তাসকিন আহমেদ বলেন, দেশে ব্যবসায়িক পরিবেশ পরিমাপের জন্য বর্তমানে বিভিন্ন সূচক যেমন বিসিআই, ইজ অব ডুইং বিজনেস ইনডেক্স, জিডিপি প্রভৃতি রয়েছে। তবে এসব সূচক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রকৃত পরিবর্তন ও কারণগুলো যথাযথভাবে প্রতিফলিত করতে পারে না। সরকার অনেক সময় ভূ–অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে নীতি নির্ধারণ করে, কিন্তু হালনাগাদ তথ্য না থাকায় সেগুলো সবসময় কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন সম্ভব হয় না। এমন বাস্তবতায় ইপিআই সূচক প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে ঢাকা জেলাকে কেন্দ্র করে এই সূচক প্রকাশ করা হবে। ভবিষ্যতে সারাদেশে এটির আওতা বাড়ানো হবে।

তাসকিন আহমেদ আরও বলেন, অর্থনৈতিক কার্যক্রম মূল্যায়নের প্রচলিত পদ্ধতিতে আমরা সাধারণত বার্ষিক বা প্রান্তিক জাতীয় হিসাবের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু দ্রুত পরিবর্তনশীল অর্থনীতিতে বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান ও ব্যবসায়িক আস্থা মূল্যায়নে রিয়েল-টাইম বা হালনাগাদ তথ্য বিশ্লেষণ জরুরি।

ডিসিসিআই প্রণীত ইপিআই দেশের উৎপাদন ও সেবা খাতের কার্যক্রম ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে মূল্যায়ন করবে। এর মাধ্যমে উৎপাদন, বিক্রয়, রপ্তানি, ক্রয়াদেশের প্রবাহ, কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগের প্রবণতা জানা সম্ভব হবে। প্রাথমিকভাবে সূচকের হিসাবে ছয়টি উপখাত রাখা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে— তৈরি পোশাক, বস্ত্র, পাইকারি ও খুচরা বিক্রয়, আবাসন, পরিবহন ও সংরক্ষণ এবং ব্যাংক খাত।

গত বছরের দুটি প্রান্তিকের তথ্য নিয়ে প্রাথমিকভাবে ইপিআইর তথ্য প্রকাশ করেছে ঢাকা চেম্বার। এ জন্য শূন্য থেকে এক পর্যন্ত মোট ছয়টি স্কোর নির্ধারণ করেছে তারা। এগুলো হচ্ছে— (অর্থনীতির গতি) খুবই কম, কম, মাঝামাঝি, বেশি ও অনেক বেশি। এর মধ্যে শূন্য দশমিক ৮০ স্কোর পেয়ে গত অক্টোবর–ডিসেম্বর প্রান্তিকে ঢাকা জেলার অর্থনীতি বেশি বা ভালো গতিতে এগিয়েছিল বলে জরিপে উঠে আসে। এর কারণ হিসেবে বলা হয়, জুলাই–সেপ্টেম্বর মাসে রাজনৈতিক পরিবর্তনের কারণে অর্থনীতি অনেকটা স্থিতিমিত ছিল; তবে অন্তর্বর্তী সরকারের বেশ কিছু তড়িৎ সিদ্ধান্তের কারণে পরের প্রান্তিকে অর্থনীতি ভালো করেছে।

আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে সাবেক সভাপতি আবুল কাসেম খান বলেন, স্থানীয় বিভিন্ন সূচকে দেখা যায়, দেশের অর্থনীতি ভালো করছে। কিন্তু বৈশ্বিক সূচকের কিংবা অন্যান্য দেশের সঙ্গে তুলনা করলে দেখতে পাই আমরা বিভিন্ন সূচকে সবচেয়ে নীচের দিকে থাকি। তাই এসব সূচকের তথ্যে আত্মতুষ্টির কারণ নেই। বরং এসব সূচককে বৈশ্বিক মানের সঙ্গে তুলনা করে প্রকাশ করলে সেটি বেশি কার্যকর হবে।

আর ইপিআই সূচকটি প্রতি মাসে প্রকাশ করা ও সূচকের পরিধি বাড়ানোর পরামর্শ দেন সাবেক সভাপতি আশরাফ আহমেদ।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS