ভৈরব(কিশোরগঞ্জ)প্রতিনিধি: কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে স্ত্রী বাড়ি না ফেরায় অভিমানে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে শাহ জালাল (২২) নামে এক যুবক। খবর পেয়ে ২৫ এপ্রিল শুক্রবার রাতে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে মরদেহ উদ্ধার করে নিয়ে আসে ভৈরব থানা পুলিশ। নিহত যুবক কুলিয়ারচর ছয়সূতি ইউনিয়নের মধ্যপাড়া এলাকার দুলাল মিয়ার ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, চার বছর আগে কুলিয়ারচরে মধ্য লালপুর এলাকার মনির মিয়ার মেয়ে জান্নাত বেগমের সাথে প্রেম করে বিয়ে করে শাহ জালাল। তাদের পরিবারে নুসরাত নামে দেড় বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। শাহ জালাল ঢাকা শহরে জুতার কাজ করে। মনির মিয়া সম্পর্কে নিহত শাহ জালালের মামা হোন। বিয়ের পর থেকেই শাহ জালাল তাঁর শ্বশুর বাড়ি ও ঢাকায় থাকতে শুরু করেন। তাঁর স্ত্রী জান্নাত বেগমের বাবা ও মা ঢাকায় থাকতেন। সেই সুবাদে মেয়েকেও প্রায় সময় ঢাকায় নিয়ে যেতেন। এ বিষয় নিয়ে ও পরিবারের স্বচ্ছলতা নিয়ে প্রায় সময় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হতো। এদিকে ছেলে বাড়ি ফিরিয়ে আনতে নতুন ঘর নির্মাণ করে দেন অসহায় মা। কয়েকদিন থেকে স্বামীর বাড়িতে থেকে স্ত্রী অভিমান করে বাবার বাড়ি চলে যায়। স্ত্রীকে বাড়ি ফিরিয়ে আনতে ২৫ এপ্রিল শুক্রবার স্ত্রী জান্নাতের কাছে গেলে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। বিকাল ৫টায় নিজ ঘরে এসে স্ত্রীর ওড়না গলায় পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে শাহ জালাল। পরিবারের সদস্যরা ফাঁসি থেকে নামিয়ে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের চাচাতো ভাই মামুন বলেন, বউকে বাড়ি ফিরিয়ে আনতে গিয়ে বাড়ির পাশে একটি বাগানে আমার ভাই দেখেন তাঁর স্ত্রী অন্য একটি ছেলের সাথে কথা বলছে। এতে শাহ জালাল ক্ষিপ্ত হলে স্ত্রীর সাথে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে সে বাড়ি এসে আত্মহত্যা করেছে।
মা শাহানা বেগম বলেন, আমার ছেলেকে বিয়ের পর থেকে তাঁর শ্বশুর বাড়ির লোকজন মানুষিক নির্যাতন করে আসছে। আমি এবং আমার ছেলেকে তাঁর শ্বশুর বাড়ির লোকজন একাধিকবার মারধর করেছে। তারা চাইতো আমার ছেলে যেন তাদের মেয়েকে ছেড়ে দেয়। আমার ছেলে তাঁর স্ত্রীকে অনেক ভালোবাসতো। কিন্তু তাঁর স্ত্রী তাদের বাবা মায়ের কথায় চলাফেরা করতো। এ নিয়ে আমার ছেলের সাথে প্রায় সময় ঝগড়া হতো। ২৫ এপ্রিল শুক্রবার বিকালে আমার ছেলে তাঁর স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনতে গেলে সে আসতে চাইনি। আমার ছেলে তাকে বলে এসেছে সে যেহেতু আসতে চাই না তাহলে তাকে মুক্ত করে শান্তিতে থাকতে দিবে। বিকালে নিজ ঘরে এসে শাহ জালাল আত্মহত্যা করেছে। আমি বাড়ি ছিলাম না। এসে দেখি ছেলে আত্মহত্যা করেছে। এখন আমার পরিবারের কি হবে। তাঁর ছোট মেয়েটাকে নিয়ে কীভাবে চলবো। আমার ছেলেকে তাঁর স্ত্রী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন আত্মহত্যা করতে বাধ্য করেছে।
এ বিষয়ে ভৈরব থানার এসআই শফিকুল ইসলাম শফিক জানান, হাসপাতাল থেকে খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি। আজ ২৬ এপ্রিল শনিবার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply