বিদ্যুৎ নেই, খাবার নেই, আকাশ ছুঁয়েছে নিত্যপণ্যের দাম—এম পরিস্থিতিতে শ্রীলঙ্কার গোটাবায়া সরকারের বিরুদ্ধে জনক্ষোভ ক্রমেই বাড়ছিল। জনরোষ ঠেকাতে ৩৬ ঘণ্টার কারফিউ জারি করে দেশটির সরকার। এরই মধ্যে রোববার রাতে দেশটির মন্ত্রিসভার ২৬ সদস্য পদত্যাগ করেছেন। তবে, প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে কিংবা তাঁর ভাই প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে পদত্যাগ করেননি। খবর- আল জাজিরা ও বিবিসির
দেশটির শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, রোববার গভীর রাতে বৈঠকে বসেন মন্ত্রিসভার সদস্যেরা। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয় সবাই একযোগ পদত্যাগ করবেন। কারফিউ জারির করার পরও সরকার বিরোধী বিক্ষোভ বৃদ্ধি পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই পদত্যাগের ঘটনা ঘটেছে।
শিক্ষামন্ত্রী দিনেশ গুণবর্ধন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, রোববার (৩ এপ্রিল) রাতে বৈঠকে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে এবং তার বড় ভাই প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে ছাড়া ২৬ মন্ত্রীর সবাই পদত্যাগ করেছেন। সব মন্ত্রী তাদের পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন যেন প্রেসিডেন্ট একটি নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করতে পারেন। ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক সংকট নিয়ে আলোচনা করার পরই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসের ছেলে নামাল রাজাপাকসে সে দেশের ক্রীড়া ও যুব কল্যাণমন্ত্রী ছিলেন। তিনিও রোববার ইস্তফা দেন। শ্রীলঙ্কায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের সিদ্ধান্তে একমত ছিলেন না নামাল। এ নিয়ে টুইটও করেছিলেন তিনি। প্রশাসনকে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার আহ্বানও জানিয়েছিলেন।
নামালের পদত্যাগের পরে গুজব রটে প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজপাকসেও পদত্যাগ করেছেন। কিন্তু সে গুজব উড়িয়ে দেয় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর। রাতে নামাল টুইট করে জানান, তাঁর পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়েছে।
পদত্যাগ করা মন্ত্রীদের মধ্যে রাজাপাকসে পরিবারের আরও দুই সদস্য রয়েছেন। রাজাপাকসে ভাইদের মধ্যে সবার ছোট অর্থমন্ত্রী বাসিল এবং সবার বড় চামাল যিনি কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন।
গোটাবায়া সরকারের বিরুদ্ধে জনরোষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের মাধ্যমে দাবানলের মতো ছড়াতে শুরু করেছিল। শনিবার রাত থেকে তাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল সরকার। পরে এ নিয়ে রোববার সকাল থেকে তুমুল সমালোচনা শুরু হওয়ায়, তা চালু করে দেয় সরকার।
এদিকে বিরোধীদের অভিযোগ, কারফিউ ঘোষণার পর থেকে ধরপাকড় শুরু করেছে সরকার। শুধু পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ থেকেই সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ৬৬৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এক সরকারি কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে শ্রীলঙ্কার একটি দৈনিকে লেখা হয়েছে, শনিবার রাত ১০টা থেকে রোববার ভোর ৬টার মধ্যে পুলিশি অভিযান চলে।
এদিকে, পুলিশি ধরপাকড় সত্ত্বেও বিক্ষোভকারীদের দমিয়ে রাখা যায়নি। মিছিল থেকে স্লোগান ওঠে—‘দমনপীড়ন বন্ধ করো’। অনেকের হাতে ছিল ‘গোটা গো হোম’ স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড ও পোস্টার।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply