লক্ষ্যটা বড় ছিল না দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য। তারকায় ঠাসা ব্যাটিং লাইন আপের জন্য এই রান তাড়া করা সহজ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, টি-টোয়েন্টিতে কখন কী হয় কে জানে! মাত্র ১০৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামা প্রোটিয়াদের নাভিশ্বাস তুলে ছেড়েছে নেদারল্যান্ডস। শেষ পর্যন্ত জয়ের হাসি হেসেছে আফ্রিকাই। দুর্দান্তভাবে ম্যাচ জমিয়েও ডেভিড মিলারের ব্যাটিংয়ে হার মানতে হয়েছে ডাচদের। মিলারের অপরাজিত ফিফটিতে সাত বল হাতে রেখে চার উইকেটের জয় পায় দক্ষিণ আফ্রিকা।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে গ্রুপপর্বে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে শনিবার (৮ জুন) নেদারল্যান্ডসের মুখোমুখি হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। টস জিতে ডাচদের ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে থামায় অল্পতেই। শতরান পার করলেও বেশিদূর এগাতে পারেনি তারা। ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে নেদারল্যান্ডসের সংগ্রহ ১০৩ রান। জবাবে ১৮.৫ ওভারে ছয় উইকেটে ১০৬ রান করে প্রোটিয়ারা।
রান তাড়া করতে নেমে ডাচ বোলারদের সামনে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে প্রোটিয়া টপঅর্ডার। প্রথম বলেই রানআউট হন কুইন্টন ডি কক। নন স্ট্রাইক এন্ডে থাকা কক কোনো বল খেলারই সুযোগ পাননি। আরেক ওপেনার রেজা হেনড্রিকস যেন ব্যাট করতেই ভুলে যান। ১০ বল খেলে মাত্র তিন রান করেন। তাকে বোল্ড করেন ফন বিক। অধিনায়ক এইডেন মার্করাম শূন্য রানে ভিভিয়ান কিংমার শিকার হলে তিন রানে তিন উইকেটে পরিণত হয় দক্ষিণ আফ্রিকা।
আইপিএল মাতিয়ে আসা হেনরিখ ক্লাসেনের ওপর চোখ ছিল সবার। তিনিও হতাশ করেন। সাত বলে চার রান করে বিদায় নেন কিংমার ডেলিভারিতেই। ১২ রানে চার উইকেট হারিয়ে প্রোটিয়ারা তখন হাবুডুবু খাচ্ছে রীতিমতো। অন্যদিকে, বিশ্বকাপে আরেকটি অঘটনের স্বপ্ন রঙিন হয়ে ধরা দিচ্ছিল ডাচদের চোখে। সেখান থেকে গুরে দাঁড়ায় প্রোটিয়ারা।
পঞ্চম উইকেটে ত্রিস্তান স্টাবসকে নিয়ে ৬৫ রানের জুটি গড়েন মিলার। একটু একটু করে দলকে বিপদ থেকে টেনে তোলেন। ৩৭ বলে ৩৩ রানের সময়োপযোগী ইনিংস খেলেন ত্রিস্তান। তাকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন বাস ডি লিড। তখনও প্রোটিয়াদের আশার বাতিঘর হয়ে ক্রিজে ছিলেন মিলার। শেষ পর্যন্ত তার হাত ধরেই জয়ের বন্দরে পৌঁছায় দলটি। ৫১ বলে তিনটি চার ও চারটি ছক্কায় অপরাজিত ৫৯ রানের ইনিংস আসে মিলারের ব্যাট থেকে।
নেদারল্যান্ডসের পক্ষে চার ওভারে ১২ রানে দুই উইকেট নেন কিংমা। ফন বিক ২১ রানে পান দুটি।
এর আগে, যুক্তরাষ্ট্রের নাসাউ কাউন্টি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ইনিংসের মাত্র তৃতীয় বলেই উইকেট হারায় নেদারল্যান্ডস। রানের খাতা খোলার আগেই মার্কো জ্যানসেনের শিকার হন ডাচ ওপেনার মাইকেল লেভিট। অপর ওপেনার ম্যাক্স ও’দোদের ব্যাটও হসেনি। দুই রান করে তিনিও বিদায় নেন। ওয়ানডাউনে নামা বিক্রমজিৎ সিংকে বোল্ড করেন জ্যানসেন।
প্রোটিয়া বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে রান তুলতে রীতিমতো সংগ্রাম করতে হয়েছে ডাচ ব্যাটারদের। অরেঞ্জ আর্মিরা নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে। অথিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডসের ব্যাট থেকে আসে ৯ বলে ১০ রান। রান আউটের দুর্ভাগ্যে বিদায় না নিলে হয়তো ডাচদের ভরসার জায়গাটা বেঁচে থাকত।
স্কোরবোর্ডে ৪৮ রান তুলতেই ছয় উইকেট হারায় নেদারল্যান্ডস। সেখান থেকে দলের সম্মান রক্ষা করেন সাইব্র্যান্ড এঙ্গেলব্রেখট ও লোগান ফন বিক। সপ্তম উইকেটে দুজনের ৫৪ রানের জুটিতে শতরান পার করে ডাচরা। ৪৫ বলে ৪০ রান আসে সাইব্র্যান্ডের ব্যাট থেকে। ওটনেইল বার্টম্যানের শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ফন বিক করেন ২২ বলে ২৩ রানে।
দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে চার ওভারে মাত্র ১১ রান দিয়ে বার্টম্যান শিকার করেন চার উইকেট। সমান দুটি করে উইকেট নেন জ্যানসেন ও এনরিখ নরকিয়া।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply