মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:৫৮ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ
খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে জাতীয় স্বাধীনতা পার্টির গভীর শোক প্রকাশ বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গ্লোবাল লেবার এন্ড হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের শোক ‘গণতন্ত্রের মা’ বেগম খালেদা জিয়ার ইন্তেকালে বিএনপির কর্মসূচি বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে এনসিবি’র শোক খালেদা জিয়ার ইন্তেকালে বেসিসের গভীর শোক ও সমবেদনা গণতন্ত্রের মা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃতুতে শোক জানিয়েছে মফস্বল সাংবাদিক এসোসিয়েশন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে ডিআরইউ’র শোক ‘মাদার অব ডেমোক্রেসি’ খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে উত্তরা প্রেসক্লাবের শোক প্রকাশ নতুন বইয়ের গন্ধ; তাছলিমা আক্তার মুক্তা কলামিস্ট মোমিন মেহেদীর উপর হামলার বিচার ও নিন্দা বিভিন্ন মহলের

পাবনায় পণ্য পরিবহনে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ঘোড়ার গাড়ি

মোহাম্মদ আলী স্বপন
  • আপডেট : বুধবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ২৮০ Time View

নিজস্ব প্রতিবেদক: এক সময় গ্রামবাংলার মানুষের নির্ভরযোগ্য বাহন ছিল ঘোড়া ও গরুর গাড়ি। যান্ত্রিক বাহনের দৌরাত্ম্যে এখন বিলুপ্তির পথে এ বাহনগুলো। কিন্তু সেই ঘোড়ার গাড়িই এখন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে পাবনার চাটমোহর-ভাঙ্গুড়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে।সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে কৃষি জমি থেকে কাদাপানি ভেদ করে যান্ত্রিক বাহনগুলো চলতে পারে না। অথচ ঘোড়ার গাড়ি সেই সব স্থান থেকে অনায়াসে পণ্য বহন করে আনতে সক্ষম। ফলে কৃষিপণ্য বহনে এখন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বিলুপ্ত প্রায় ঘোড়ার গাড়ি।

পাবনার চলনবিলের অধ্যষিত এলাকায় অনেকেই পরিবার জীবিকা নির্বাহ করছে ঘোড়ার গাড়ি চালিয়ে। পরিবার পরিজন নিয়ে তারা সুখে শান্তিতে জীবনযাপন করছেন। চলনবিল এলাকার কয়েকটি গ্রামের প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবারের সন্ধান মিলেছে তাদের একমাত্র জীবিকার বাহক ঘোড়ার গাড়ি। কালক্রমে এ এলাকায় ঘোড়া ও ঘোড়ার গাড়ির সংখ্যা কমে গেছে। তবে, এখনো কিছু মানুষ শখের বশে ঘোড়া পালন করেন। আবার কিছু মানুষ জীবিকা নির্বাহের তাগিদে ঘোড়া পালন করেন। ঘোড়ার গাড়ি চালিয়েই পরিবারের ব্যয়ভার মেটাচ্ছেন প্রায় অর্ধশত পরিবার।

 চাটমোহর উপজেলার লাঙ্গলমোড়া গ্রামের কালু মন্ডল (৬০) জানান, তিন বছর পূর্বে ৭০ হাজার টাকায় ঘোড়া এবং ঘোড়ার গাড়িটি ক্রয় করেন তিনি। সেই থেকে এই ঘোড়া ও ঘোড়ার গাড়িই তার পরিবারের জীবন-জীবিকার একমাত্র উৎস। মাঘ-ফাল্গুন মাসে কৃষকের জমি থেকে সরিষা বহনের কাজ করেন। চৈত্র-বৈশাখ মাসে রসুন, গম, খেশারী, মশুর, সরিষাসহ অন্যান্য ফসল বহন করেন। জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় মাসে বোরো ধান এবং কার্তিক অগ্রহায়ণ মাসে বিল থেকে আমন ধান বহনের কাজ করেন। বিভিন্ন হাট-বাজারে মানুষের পণ্য আনা-নেওয়ার কাজ করেন। যখন এলাকায় কাজ থাকে না তখন ঘোড়া গাড়ি নিয়ে চলে যান অন্য জেলায়।

ছাইকোলা ফকিরপাড়া গ্রামের শাহজাহান প্রামাণিকের ছেলে রিফিল হোসেন (২৪) জানান, ৮ বছর যাবত ঘোড়ার গাড়ি চালিয়ে জীবন-জীবিকার ব্যয়ভার বহন করে আসছেন তিনি। এ কাজ করে স্ত্রী ও এক মেয়েসহ তার তিনজনের পরিবারটি চালিয়ে আসছেন তিনি। জমি-জমা নেই। কাজ পেলে প্রতিদিন গড়ে হাজার খানেক টাকা পান। ছোলা, ধানের গুঁড়াসহ ঘোড়ার অন্যান্য খাবারের পেছনে ব্যয় করতে হয় প্রায় দুইশ টাকা। ফসলের মওসুমে প্রতিদিন আটশ টাকার মতো উপার্জন থাকে তার।এলাকায় কাজ না থাকলে বগুড়া, কুষ্টিয়া, সিরাজগঞ্জের প্রত্যন্ত এলাকায় গিয়ে ভর বহনের কাজ করেন।  তিনি আরও জানান, চাটমোহরের বরদানগর গ্রামে ঘোড়ার গাড়ির সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। উপজেলার প্রায় ত্রিশজন ঘোড়ার গাড়ি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন।

এ ব্যাপারে চাটমোহর টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ আব্দুর রহিম জানান, এক সময় চাটমোহরের অনেকেই ঘোড়ার গাড়ি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। অনেক সৌখিন মানুষ ঘোড়া পালন করতেন। ঘোড়ায় চড়ে বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করতেন। বাহাজে অংশ নিতেন। এলাকার মানুষ ঘোড়দৌড় উপভোগ করত। এ ঐতিহ্য এখন বিলুপ্তির পথে।

উল্লেখ্য, প্রায় ৪ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে দ্রুত গতির চতুষ্পদ প্রাণী ঘোড়াকে পোষ মানিয়ে মানুষ গৃহে পালন শুরু করেন। এ প্রাণী তার প্রভুকে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছে দিতে সক্ষম। এক সময় যুদ্ধক্ষেত্রে ঘোড়ার ব্যাপক ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়েছে। ঘোড়দৌড় মানুষের মনোরঞ্জনে এক বিশেষ স্থান দখল করে আছে।

ভাঙ্গুড়া উপজেলা আনসার কোম্পানী কমান্ডার শেখ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ঘোড়ার গাড়ি আমাদের দেশীয় ঐতিহ্য। প্রয়োজনের তাগিদেই পুনরায় এখন হারিয়ে যাওয়া সেই ঘোড়ার গাড়ির প্রচলন শুরু হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS