মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:৫০ পূর্বাহ্ন

বিশেষ মত বিনিময় ও সমাধান সভা-২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : সোমবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২৫

বাংলাদেশ অ্যাম্বুলেন্স মালিক কল্যাণ সমিতির উদ্যোগে দেশের প্রায় ৯ হাজার অ্যাম্বুলেন্সকে “ভাড়ায় চালিত” মর্মে নিবন্ধনের দাবিতে আগামী তারিখ-১৮/১১/২০২৫ইং সকাল ৩.০০ থেকে ০৫:০০ পর্যন্ত ঢাকা রিপোর্টারর্স ইউনিনি শফিকুল কবির মিলনায়তন, ঢাকা-এর সামনে এক শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, বর্তমানে বেসরকারি প্রায় ৯ হাজার অ্যাম্বুলেন্স “ভাড়ায় চালিত নয়” মর্মে নিবন্ধিত থাকায় মালিক ও চালকরা নানা প্রশাসনিক জটিলতা ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন। ফ্যাসিস্ট সরকারের সময়ে “মুজিব বর্ষ”- উপলক্ষে দুই বছরের ট্যাক্স অব্যাহতি ঘোষণা করা হলেও পরবর্তীতে এক সঙ্গে তিন বছরের ট্যাক্স পরিশোধের দাবির কারণে দেশের প্রায় ৯৫ শতাংশ অ্যাম্বুলেন্সের কাগজপত্র নবায়ন করা সম্ভব হয়নি, ফলে রাস্তায় নামলেই পুলিশ মামলা দিচ্ছে-যার প্রতিটির পরিমাণ ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত।

সমিতির প্রতিনিধিরা জানান, দেশের জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর অ্যাম্বুলেন্স সেবা শতভাগভাবে এই মালিক ও কর্মীদের মাধ্যমেই পরিচালিত হচ্ছে। তারা দুর্যোগকালীন পরিস্থিতিতে ও করোনাকালে বিনা পারিশ্রমিকে মানবিক সেবা দিয়ে আসছেন। অথচ এত গুরুত্বপূর্ণ খাতটিকে এখনো বাণিজ্যিক নিবন্ধন (Commercial Registration) না দিয়ে “ভাড়ায় চালিত নয়” হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে, এবং ট্যাক্স আদায় করা হচ্ছে ভাড়ায় চালিত মাইক্রোবাসের সমপরিমাণে যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। আরও আশ্চরে‍্যর বিষয় হলো দেশের সকল ধরণের টোল সংগ্রহকারীদের কাছে অ্যাম্বুলেন্স নামক কোন শ্রেনী বিন্যাস নাই। মাইক্রো বাসে শ্রেণীতে তাঁরা টোল সংগ্রহ করে থাকেন। এমনকি মেট্রো পলিটন ট্রাফিক বিভাগেও অ্যাম্বুলেন্স নামে কোন শ্রেনী নাই। মামলাও করা হয় মাইক্রো বাস বা যাত্রি পরিবহণ খাতে।

অ্যাম্বুলেন্স মালিক কল্যাণ সমিতির মতে, সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮-এর পঞ্চম অধ্যায়ের ধারা ৩০ (১) (ঘ) ও (৬)-এ স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে যে, “শৃঙ্খলা-বাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, সিভিল ডিফেন্স ও অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের জন্য ব্যবহৃত পরিবহনযান রুট পারমিট হতে অব্যাহতি প্রাপ্ত।” এছাড়াও ধারা ৩১ (১)-এ বলা আছে, “রুট পারমিট ব্যতীত পরিচালিত যানবাহন কর্তৃপক্ষের অনুমোদনসাপেক্ষে বিশেষ ধরণের বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে।”

তারা অভিযোগ করেন, উল্লিখিত আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন না করায় অ্যাম্বুলেন্স মালিকরা বর্তমানে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন এবং প্রশাসনিক হয়রানির মুখে পড়ছেন।

সমিতির প্রধান দুটি দাবি:
১. অ্যাম্বুলেন্সকে একটি জরুরি সেবা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে অবিলম্বে বাণিজ্যিক রেজিস্ট্রেশন (Commercial Registration) প্রদান করতে হবে।
২. অ্যাম্বুলেন্সে বাণিজ্যিক রেজিস্ট্রেশন না দেওয়া পর্যন্ত সড়কে ট্রাফিক আইনের আওতায় মামলা প্রদান কার্যক্রম স্থগিত রাখতে হবে।

সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মানববন্ধনটি হবে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ এবং এতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশের সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে।

বাংলাদেশ অ্যাম্বুলেন্স মালিক কল্যাণ সমিতির নেতৃবৃন্দ বলেন, “দেশের জরুরি স্বাস্থ্যসেবায় অ্যাম্বুলেন্স মালিক ও কর্মীদের অবদান অমূল্য। অথচ আজ তারা অন্যায়ভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। সরকার যদি দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করে, তাহলে এই সেবা খাতটি টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে।”

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS