দলীয় নিবন্ধন নাগরিকদের গণতান্ত্রিক অধিকার। গত মাফিয়া সরকার কিছু কালো আইন করে সচেতন, দেশপ্রেমিক নাগরিকদের রাজনৈতিক দায়িত্ব পালনের গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব করেছিল। বর্তমান সরকারও তার ধারাবাহিকতায় আমাদের রাজনৈতিক দল গুলির নিবন্ধন দিচ্ছে না। আমরা তার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জ্ঞাপন করছি। আমরা তার অবসান চাই। আমরা এইসব গণবিরোধী কালা কাণনের অবসান চাই। আমরা আমাদের দলগুলির নিবন্ধন চাই। আমরা আসন্ন’ ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমাদের দলীয় ব্যানারে এবং দলীয় প্রতীক নিয়ে অংশ গ্রহণ করতে চাই। অন্যথায় আমরা দেশের সাধারণ মানুষদের সাথে নিয়ে নির্বাচন কমিশন ও সরকারের বিরুদ্ধে দুর্বার গণআন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তুলব। সংগ্রামী সাথী ও বন্ধুগণ, বাংলার ইতিহাস শোষণ, জুলুম, নির্যাতন-নিপীড়ন, অত্যাচার, অবিচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে একটি মানবিক, নৈতিক, ন্যায্য, শোষণহীন, বৈষম্যহীন, আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার ভিত্তিক, মুক্ত, স্বাধীন, সাম্যের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার আন্দোলন সংগ্রামের ইতিহাস। বাংলাদেশ ভূখণ্ডের উদ্ভব ও বিকাশে এক নিজস্ব বৈশিষ্ট্য রয়েছে। পদ্মা যমুনা মেঘনা এই তিন মহানদী এবং তাদের অসংখ্যা শাখা প্রশাখা নদীর স্রোত ধারায় বয়ে আনা উর্বর পলি দ্বারা গঠিত। এক অনন্য বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন বঙ্গীয় ব-দ্বীপের অংশ বাংলাদেশ। জালের মত বিস্তৃত নদ-নদী খাল-বিল জলাশয় এবং সবুজ ঘনবন চিরকালই দুর্যোগপূর্ণ প্রাকৃতিক পরিবেশে প্রতিরোধক হিসাবে রক্ষা করে এসেছে বাংলাদেশে অধিবাসীদের। প্রাকৃতিক কারণেই এই অঞ্চলের মানুষ স্বাধীনচেতা। এখানকার উর্বর মাটি ফুলে-ফলে ফসলে ভরা সম্পদ সহজ জীবনযাপনের সুযোগ করে দিয়েছে বাংলাদেশের অধিবাসীদের। এদেশের সম্পদ, সহজ জীবন যাপনের সুযোগে বারবার বিদেশীদের প্রলুব্ধ করেছে। বাংলাদেশের রয়েছে অঢেল সমুদ্র সম্পদ এবং একটি বিস্তৃত সমুদ্র অঞ্চল। পরিশেষে ভূ-রাজনৈতিক অবস্থানের কারণে আজ নতুন করে শকুনের দৃষ্টি পড়েছে এই দেশের উপর। নদী-প্রকৃতির নিত্য দিনের ভাঙ্গা গড়ার মতই বাংলার জীবনযাত্রা নিত্য পরিবর্তনশীল। মাটি ও প্রকৃতির বিশেষত্ব এবং সামাজিক অনুশীলনের সাথে সম্পর্কিত মানুষের মনন এবং নিজস্ব ইতিহাস। বাংলাদেশের লোক সংস্কৃতি আবহমান কাল ধর্ম, বর্ণ, জাত-পাতের বিভাজনের বিপরীতে মানবতাকেই অগ্রাধিকার দিয়ে এসেছে। পাক-ভারত উপমহাদেশের ঘটনা প্রবাহের সাথে রয়েছে রাজনীতি, ভাষা, সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক। জুলাই বিপ্লবের মর্মগত দিক (sprite) হচ্ছে একটি স্বৈরাচারমুক্ত, বৈষম্যহীন, দুর্নীতিমুক্ত, বৈদেশিক আধিপত্যমুক্ত, পরিবারতন্ত্রমুক্ত, আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার ভিত্তিক স্বাধীন, সার্বভৌম, আত্মনির্ভরশীল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণ। যেখানে নাগরিক সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠিত হবে এবং নাগরিকদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত থাকবে। জুলাই বিপ্লবে দেশবাসি একটি নতুন রাষ্ট্র ব্যবস্থার তথা বিদেশ আদিপত্য মুক্ত, স্বৈরাচার মুক্ত, বৈস্বম্যহীন, সমৃদ্ধ, আইনের শাসন ও ন্যায় বিচার ভিত্তিক গণতান্ত্রকি বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত এবং রায় দিয়েছে। তৎকালীন রাষ্ট্র ব্যবস্থার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছে, ধ্বংস করেছে, বাতিল করেছে এবং নতুন একটি যৌক্তিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে। অথাৎ ক্ষমতাসীন স্বৈরাচারী শাসকগোষ্ঠী উৎখাত করেছে। জনগণ বৈদেশিক আতিপত্যমুক্ত, স্বৈচারমুক্ত, বৈষম্যহীন, গণতান্ত্রিক, স্বনির্ভর বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পক্ষে রায় দিয়েছে। সংবিধান বাতিল করে বিপ্লবী সরকার প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত দিয়েছে এবং বিভিন্ন সময়ের খুনিরে বিচারের সিদ্ধান্ত দিয়েছে। জনগণ নতুন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত দিয়েছে। তাই বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থাসহ উপরোক্ত সকল বিষয় গভীর উপলব্ধিতে এনেই সমাজ বদলের ইতিবাচক লক্ষ্য নিয়ে রাজনীতির কর্মকৌশল নিরূপণ করা আমাদের কর্তব্য। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের স্বপ্ন ছিল বৈদেশিক প্রভাবমুক্ত, স্বাধীন, সার্বভৌম, শোষণমুক্ত, বৈষম্যহীন, দুর্নীতিমুক্ত, বেকারত্বহীন, আইনের শাসন ও ন্যায় বিচার ভিত্তিক, দায়িত্বশীল, আধুনিক, নিরাপদ, সমৃদ্ধ, জবাবদিহিতার, দায়িত্বশীল একটি গণতান্ত্রিক সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার। যেখানে প্রতিষ্ঠিত হবে মানুষে মানুষে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, সহনশীলতা, সহযোগিতা ও দায়িত্ববোধের নৈতিক সমাজ তথা ২০ (বিশ) কোটি মানুষের একটি বৃহত্তর বাংলাদেশী দায়িত্বশীল পরিবার। অথাৎ যেখানে আমরা সবাই মিলে একটি ন্যায়ভিত্তিক, সমৃদ্ধশালী, আধুনিক, নিরাপদ রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করব। যে রাষ্ট্র নাগরিকদের মানুষ হিসাবে বেঁচে থাকার ন্যূনতম মৌলিক অধিকার অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা ও বাসস্থানের নিশ্চিয়তা বিধান করবে। আন্দোলন-সংগ্রামীদের জাতীয় ভিত্তিক ঐক্যহীনতার কারণে ১৯৭১ সহ জুলাই বিপ্লব ৭১ পূর্ব-উত্তর বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন সংগ্রামের ত্যাগ-তিতিক্ষা, রক্ত-জীবনদান ও গৌরব উজ্জ্বল সংগ্রামের ইতিহাস-ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় একটি ন্যায্য রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা পায় নাই। ভারতীয় রাষ্ট্রশক্তি ও স্বাদেশীয় দালাল লুটেরার কর্তৃক মুক্তিযুদ্ধের ফসল লুণ্ঠিত হয়েছে বলে আমরা সৃজনশীল দৃষ্টিভঙ্গির মধ্য দিয়ে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারি নাই। এমনতর অবস্থা ও পরিস্থিতিতে আমরা ৭১ ও জুলাই বিপ্লবের স্বপ্নের: স্বাধীন, আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার ভিত্তিক, দুর্নীতিমুক্ত, শোষণমুক্ত, বেকারত্বহীন, নিরাপদ, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে এগিয়ে নিতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। বাংলাদেশে আজ আর প্রত্যক্ষ বিদেশী শোষক-শোষণ নাই। আধিপত্যবাদীদের স্বদেশী শাসক-শোষকেরা দেশের সকল সহায়-সম্পত্তি লুটপাট করে বিদেশে নিয়ে গেছে। শুধু লুটপাটের জন্য এই লুটেরার গোষ্ঠী বিদেশী প্রভুদের সহায়তায় রাষ্ট্রক্ষমতায় টিকে থাকতে এবং যেতে চায়। তা আবার ঠিক করে দেয় দিল্লি এবং ওয়াশিংটন। এদের রাষ্ট্র ক্ষমতায় টিকে থাকার এবং যাওয়ার হিন ষড়যন্ত্রের রাজনীতির কারণে দিন দিন মানুষে মানুষে ঘৃণা, হিংসা, বিদ্বেষ, বিরোধ, দূরত্ব, মারামারি, সহিংসতা, জায়গায় জায়গায় হামলা, মামলা আক্রমণ, অত্যন্ত মারাত্মক ও ধ্বংসাত্মক যুদ্ধ বেড়েই চলছে। এই অত্যাধুনিক প্রযুক্তির যুগে মানুষের জীবনকে সহজ ও সুন্দর করার ক্ষেত্রে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে কোটি কোটি টাকার অত্যন্ত মারাত্মক জীবন বিধ্বংসী মারণাস্ত্র তৈয়ার করা হচ্ছে। যেসব আবিষ্কার মানুষের জীবনে আশীর্বাদ হতে পারতো তা ক্ষমতাধর বিশ্ব মোড়লদের অনৈতিকতার কারণে মানব সমাজের জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বব্যাপী চলমান সাম্রাজ্যবাদীদের অনৈতিক যুদ্ধ সারাবিশ্বে অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক এবং প্রকৃতি ও পরিবেশ বিপর্যয় দারুনভাবে দৃশ্যমান হচ্ছে। সাম্রাজ্যবাদীদের এইসব অনৈতিক যুদ্ধ এই পৃথিবীর প্রায় ৮৫০ কোটি (আটশত পঞ্চাশ কোটি) মানুষের অস্তিত্ব বিলুপ্ত করতে যাচ্ছে। আমরা “জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট” এই গ্রনৈতিক, হিংসার, বিদ্বেষের, উন্মাদনার ধ্বংসের রাজনীতির অবসান চাই।
অতএব, দেশের মানুষের শান্তি ও উন্নতির স্বার্থে এই গনবিরোধী শক্তির রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকার ও যাওয়ার সকল রাস্তা চিরতরে বন্ধ করে দিতে হবে। প্রতিষ্ঠা করতে হবে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা যেখানে আইনের শাসন ও নাগরিকদের মানুষ হিসাবে বেঁচে থাকার ন্যূনতম মৌলিক অধিকার অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা ও বাসস্থানের নিশ্চয়তা থাকবে। আজকে বিদ্যালয়ে বিদ্যা চর্চা নাই, হাসপাতালে চিকিৎসা নাই, খাদ্য নিরাপত্তা নাই, বাতাসে অক্সিজেনের ঘাটতি, জীবন ধারণের জন্য বিশুদ্ধ পানি নাই, জীবনের নিরাপত্তা নাই, আইনের শাসন নাই, ন্যায় বিচার নাই, কোথাও স্বাভাবিক কিছুই নাই। সর্বত্র নৈরাজ্য আর হাহাকার। আগামী দিনের প্রযুক্তির বিশ্ব লড়াইয়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে প্রস্তুত করার বিষয়ে বাংলাদেশের সুনির্দিষ্ট কোন পরিকল্পনা বা রাজনীতি নাই। ভাগনির্ভর শাসকগোষ্ঠী দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ ভাবনার চেয়ে নিজেদেরকে নিয়ে ভাবনা বেশি। অদূরদর্শী, অযোগ্য, অদক্ষ, অনভিজ্ঞ এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন শাসক গোষ্ঠীর অপরিকল্পিত শিল্পায়ন, গৃহায়ন, উন্নয়ন, প্লাস্টিক দ্রব্যের উৎপাদন-ব্যবহার, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা, ড্রেইনিং, বর্জ্য অব্যবস্থাপনা, পুকুর, খাল, বিল, নদী, জলাশয় ভরাট-দখলের ফলে মারাত্মকভাবে প্রকৃতি ধ্বংস ও পরিবেশ দূষণ হচ্ছে। ফলে বাংলাদেশ ভূ-খন্ডটি মানুষের বাস অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এইভাবে নিশ্চয়ই একটি দেশ চলতে পারে না। এই দুর্বৃত্তদের হাতে আমাদের দেশ কোন অবস্থাতেই নিরাপদ নয়। এমতাবস্থায় বার বার জীবন ও এতো রক্তদানের পরেও আজকে যদি আমরা এই দুর্বৃত্তায়িত রাষ্ট্রব্যবস্থা রুখে না দাড়াই তাহলে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আরও এক সাগর রক্ত দিয়েও এই দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং রাষ্ট্রীয় অখন্ডতা রক্ষা করতে পারবে না। সারা বিশ্বেই মুলত রাজনীতি হচ্ছে একটি আদর্শিক সংগ্রাম। দেশ, জাতি ও মানুষের জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করে একটি উত্তম রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করাই থাকে তাদের উদ্দেশ্য। কিন্তু আমাদের দেশেই তার ব্যতিক্রম। আমাদের দেশে রাজনীতি হচ্ছে একটি ব্যবসা, রাজনৈতিক দলগুলি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান এবং নেতৃবৃন্দ হচ্ছে বড় বড় ব্যবসায়ী। রাজনীতির নামে যতসব ধান্ধাবাজী, ধোকাবাজী আর প্রতারণা। আজ আর দেশ নিয়ে সভ্যতার ধারায়, সংস্কৃতির ধারায়, প্রগতির ধারায় চিন্তা ও কাজ করার মত রাজনৈতিক, দার্শনিক, বৈজ্ঞানিক, শিল্পী সাহিত্যিক খুঁজে পাওয়া যায় না।
কালের চাকা অন্ধকার থেকে আলোর দিকে ঘুরছে। যারাই প্রগতির এই ধারণার সাথে তাল মিলাতে ব্যর্থ হচ্ছে তারাই নিজেদের অস্তিত্বের সংকটে পড়ছে। মানবসভ্যতার ইতিহাসে তার অসংখ্য নজির রয়েছে। বাংলাদেশ আজ এক চরম ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। এ জাতির স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও একটি গণতান্ত্রিক, আইনের শাসন ও ন্যায় বিচারভিত্তিক সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা পায় নাই। দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতা চরম হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে। দেশ ও সমাজ আজ দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মাফিয়া চক্রের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে। দেশ ও সমাজে নৈরাজ্যবাদীদের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ একটি দুর্বৃত্ত রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। দেশীয় দালালদের সহযোগিতায় আধিপত্যবাদী শক্তির চারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে। এই দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে পড়েছে। স্বাধীনতার পর দীর্ঘ ৫৪ বছর পর্যায়ক্রমে ক্ষমতাসীন ও ক্ষমতাচ্যুত লুটেরাই সীমাহীন লুটপাট করে বাংলাদেশকে একটি চরিত্রহীন, বিদেশিদের তাবেদার দেউলিয়া রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। শতকরা ৫% পাঁচজনের হাতে এই রাষ্ট্রের শতকরা ৯৫% ভাগ সম্পদের মালিকানা প্রতিষ্ঠা হয়েছে। শাসক-শোষক ও শোষিত-শাসিত শ্রেণীতে পরিণত করেছে। স্বদেশী শোষক এবং শোষিত শ্রেণীকে পরস্পরের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবসের অর্থও দুই পক্ষের কাছে দুই রকম। শোষকদের কাছে খুবই আনন্দের। আর শোষিতের কাছে খুবই কষ্টের। দেশ আজ এক মহাসংকটের সম্মুখীন হয়ে পড়েছে। রাজনীতিই এই মহাসংকট নিরসনের একমাত্র পথ ও পাথেয়। দেশবাসী আজকে পরাশক্তির দেশীয় দালাল ধোকাবাজ রাজনীতিবিদদের নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্তি চায়। একমাত্র নির্মোহ নতুন ধারণার রাজনীতিই এই লাঞ্চিত, কালের চাকা অন্ধকার থেকে আলোর দিকে ঘুরছে। যারাই প্রগতির এই ধারণার সাথে তাল মিলাতে ব্যর্থ হচ্ছে তারাই নিজেদের অস্তিত্বের সংকটে পড়ছে। মানবসভ্যতার ইতিহাসে তার অসংখ্য নজির রয়েছে। বাংলাদেশ আজ এক চরম ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। এ জাতির স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও একটি গণতান্ত্রিক, আইনের শাসন ও ন্যায় বিচারভিত্তিক সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা পায় নাই। দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতা চরম হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে। দেশ ও সমাজ আজ দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মাফিয়া চক্রের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে। দেশ ও সমাজে নৈরাজ্যবাদীদের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ একটি দুর্বৃত্ত রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। দেশীয় দালালদের সহযোগিতায় আধিপত্যবাদী শক্তির চারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে। এই দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে পড়েছে। স্বাধীনতার পর দীর্ঘ ৫৪ বছর পর্যায়ক্রমে ক্ষমতাসীন ও ক্ষমতাচ্যুত লুটেরাই সীমাহীন লুটপাট করে বাংলাদেশকে একটি চরিত্রহীন, বিদেশিদের তাবেদার দেউলিয়া রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। শতকরা ৫% পাঁচজনের হাতে এই রাষ্ট্রের শতকরা ৯৫% ভাগ সম্পদের মালিকানা প্রতিষ্ঠা হয়েছে। শাসক-শোষক ও শোষিত-শাসিত শ্রেণীতে পরিণত করেছে। স্বদেশী শোষক এবং শোষিত শ্রেণীকে পরস্পরের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবসের অর্থও দুই পক্ষের কাছে দুই রকম। শোষকদের কাছে খুবই আনন্দের। আর শোষিতের কাছে খুবই কষ্টের। দেশ আজ এক মহাসংকটের সম্মুখীন হয়ে পড়েছে। রাজনীতিই এই মহাসংকট নিরসনের একমাত্র পথ ও পাথেয়। দেশবাসী আজকে পরাশক্তির দেশীয় দালাল ধোকাবাজ রাজনীতিবিদদের নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্তি চায়। একমাত্র নির্মোহ নতুন ধারণার রাজনীতিই এই লাঞ্চিত, বঞ্চিত, শোষিত, নির্যাতিত, অত্যাচারিত, খেটে খাওয়া মেহেনতী, ভূমিহীন, ভুখা-নাঙ্গা জনগোষ্ঠী সংগঠিত এবং ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই সংগ্রাম করে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। অর্থ পৃথিবীকে শাসন করে না, জ্ঞানই শাসন করে পৃথিবীকে। সমাজ জীবনের বাস্তব সমস্যাবলীর সমন্বয়ই তত্ত্ব (থিওরি) বা দর্শণ বা মতাদর্শ। এই মতাদর্শকে কার্যকর করার নামই রাজনীতি। সমাজের চলমান সমস্যাবলীর প্রকৃতির দার্শনিক ও মনস্তাত্ত্বিক ভিত্তি জেনে এবং বুঝে বাস্তবভিত্তিক সমাধানের চিন্তা ও উপায় নির্ধারণ করতে পারাই যথাযোগ্য নেতৃত্ব। কাজেই “জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট” এই নতুন ধারণার রাজনীতি ও রাজনৈতিক দল। এই দল সঠিক ও সুষ্ঠুভাবে নেতৃত্ব দিয়ে ইন্সিত লক্ষ্যে পৌঁছানোর দায়িত্ব প্রথমত এবং প্রধানত সর্বোচ্চ নেতৃত্বের। সেক্ষেত্রে ভুল হলে সবই ভুল ও বৃথা এবং ভন্ডুল হয়ে যাবে। কাজেই আজকে সময় এসেছে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ও রাষ্ট্রীয় অখন্ডতা টিকিয়ে রেখে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা তথা আইনের শাসন ও ন্যায় বিচারভিত্তিক, গণমুখী, কল্যাণ রাষ্ট্র কাঠামো বিনির্মাণের লক্ষ্যে সঠিক রাজনীতি ও নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করার। রাজনীতি যেহেতু রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক সমস্যাবলির সর্বোচ্চ সমাধানের উপায়। সেহেতু আসুন, স্ব-স্ব জায়গা থেকে কর্তব্যকর্মে দায়িত্ববান হই। দলান্ধতা-ধর্মান্ধতা, মতান্ততার চিন্তা ও কাজ অকল্যাণকর। বাংলাদেশের রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার মুসলিম, হিন্দু ও অন্যান্য ধর্মালম্বীদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অন্তরায়। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রথম ও পূর্ব শর্ত হচ্ছে নৈতিক চেতনার জাগরণ, নৈতিক আন্দোলন ও সংঘবদ্ধ সংগ্রাম বলবৎ রাখা। নাগরিকদের আর্থ-সামাজিক, রাষ্ট্রীক উন্নতির কর্মসূচি ও কর্মকাণ্ডই রাজনৈতিক আন্দোলন। এই দেশের সকল নাগরিকরাই যে এই দেশের মালিক এবং সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারক এই চরম সত্যটি দেশবাসীকে বুঝাইতে এবং বিশ্বাস করানোর লক্ষ্যে একটি সাংস্কৃতিক আন্দোলনের কোন বিকল্প নাই। ক্ষমতা কেন্দ্রীক রাজনৈতিক অপব্যবহারের ফলে সমাজে চলমান অসঙ্গতি, বিচারহীনতার সংস্কৃতি ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলে দেশের নাগরিকদের প্রতিবাদী এবং সাহসী করতে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক বৃহৎ শক্তিবর্গ দীর্ঘ ৫৪ বছর দেশ পরিচালনা করেছে সভ্যতা বিরোধী ও সংস্কৃতি বিরোধী ধারায়। অমিত সম্ভাবনার বাংলাদেশকে অপরাজনীতির অভয়ারণ্যে পরিণত করেছে। জনগণের সার্বভৌমত্ব, প্রতিনিধিত্ব, দায়বদ্ধতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা না থাকলে, জনগণ তাদের অধিকার সচেতন না হইলে সর্বজনীন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। বাংলাদেশী জাতির এমনকি গোটা মানবজাতির জীবনে সভ্যতা, সংস্কৃতির এক চরম সংকটকাল চলছে। উৎপাদন ও সম্পদ বাড়ছে পক্ষান্তরে মানবতার দিক থেকে ব্যক্তি, জাতি, রাষ্ট্রব্যবস্থা ও বিশ্বব্যবস্থা নিম্নগামী। বাংলাদেশ অদ্যাবধি : একটি রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে উঠতে পারে নাই। উন্নতশীল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব ছাড়া রাষ্ট্র গড়ে ए উঠতে পারে না। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংগঠন প্রতিষ্ঠার দরকার এবং দরকার নতুন বুদ্ধিভিত্তিক আন্দোলন ও নতুন গণজাগরণ। যে রাষ্ট্রব্যবস্থায় নাগরিকগণই হবে রাষ্ট্রের মালিক এবং সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক। জাতীয় এবং রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে রাষ্ট্রের প্রাপ্তবয়স্ক সকল নাগরিক মিলে সম্মিলিতভাবে পারস্পরিক মতবিনিময় করে গণভোটের মাধ্যমে স্থানীয়, আঞ্চলিক, জাতীয় নীতি নির্ধারণ করবে। বাংলাদেশের ২০ কোটি শোষিত, লুণ্ঠিত, নির্যাতিত, নিপীড়িত, অত্যাচারিত, অবহেলিত, বঞ্চিত মানুষের স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ভিত্তিতে নতুন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তরুণদের লালিত স্বপ্ন, একটি নতুন ধারার রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করা, আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার ভিত্তিক শোষণমুক্ত, বৈষম্যহীন, আধুনিক দায়িত্বশীল রাষ্ট্র বিনির্মাণ করা। জাতির এই সুদীর্ঘকালের লালিত স্বপ্নকে আমরা কিছুতেই ব্যর্থ হতে দিতে পারি না। জুলাই বিপ্লবের পর জাতীয় জাগরনে জাতির সুদীর্ঘ কালের লালিত স্বপ্ন আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে তা আমরা ব্যর্থ হইতে দিবোনা ইনশাল্লাহ। কাজেই আজকে দল মন্ড নির্বিশেষে একই পতাকার ও একই কাতারে দাড়িয়ে ৫৪ বছরের ধোঁকাবাজ, প্রতারক, শোষক, জালেম, দেশ ও জাতির দুশমনদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তোলার বিকল্প নাই।
আসুন, প্রগতির ধারায় আমাদের হাজার বছরের সংগ্রামের বিশেষ করে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন, ৬৯এর গণ-অভ্যুত্থান, ৭১এর স্বাধীনতা যুদ্ধ ও পরবর্তী সময়ের আন্দোলন সংগ্রামের অভিজ্ঞতার আলোকে দেশপ্রেমিক, মুক্তিকামি, উৎপাদনশীল, সৃষ্টিশীল, প্রগতি প্রয়াসী, সংগ্রামী জনগণের সর্ববৃহৎ ও শক্তিশালী জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলে আমাদের সকলের নতুন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার গতি ত্বরান্বিত করি। যেহেতু আজকে পৃথিবী একটি বৃহত্তর গ্রামে পরিণত হয়েছে। তাই মানবজাতি এবং মানব সভ্যতা অবস্থাতেই কোন ব্যক্তি, গুষ্টি, দল ও জাতির বিচ্ছিন্ন থাকার সুযোগ নাই। সেহেতু আমাদেরকে একটি নতুন ধারার রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করতে হলে বিশ্ব রাজনৈতিক অঙ্গনের কথা আমলে রেখেই আমাদের ফ্রন্টের কর্মকৌশল নির্ধারণ করতে হবে। পৃথিবীর সকল ভূ-ভাগে সর্বজনীন গণতান্ত্রিক জাতি-রাষ্ট্র গড়ে তোলার আন্দোলন সৃষ্টি করে এবং সকল রাষ্ট্রের মানবতাবাদী শক্তি মিলে জাতীয়তাবাদ ও তার সম্পূরক আন্তর্জাতিকতাবাদের ভিত্তিতে নতুন বিশ্বব্যবস্থা ও বিশ্ব সরকার প্রতিষ্ঠার গতি ত্বরান্বিত করি।
অতএব, আসুন দল-মত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ জনমত গড়ে তুলে ধসে দেই, ঘুরিয়ে দেই ধোকাবাজ, দালালদের মসনদ। প্রতিষ্ঠা করি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, স্বাধীনতার চেতনা এবং ৫ই আগষ্টের চেতনার ভিত্তিতে স্বাধীন, সার্বভৌম, অখণ্ড বাংলাদেশ, আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার ভিত্তিক বৈষম্যহীন, মানবিক মর্যাদার গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ।
জাতীয় মুক্তি স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যাভিমুখী ফ্রন্ট, আন্দোলন ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের কাজে আমরা দেশবাসীর সমর্থন চাই, সাহায্য চাই, সহযোগিতা চাই। আশা করি আপনারা আমাদের এই বৃহৎ এবং সাহসী পরিকল্পনা ও পদক্ষেপে পাশে থাকবেন। চলমান পক্ষপাতিত্বের রাষ্ট্র ব্যবস্থার আমূল বদলে দেওয়ার এই স্বপ্ন বাস্তবায়নের অভিযাত্রায় নতুন রাজনৈতিক সংগঠন “জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট” National Democratic Front – NDF এর আত্মপ্রকাশ ঘোষণা করছি এবং বাংলাদেশের জনগণকে আমাদের সমর্থন ও সহযোগিতার করতে আহবান করছি। আর সকলের সম্মুখে দাঁড়িয়ে এই প্রত্যয় এবং প্রতিজ্ঞা ঘোষণা করছি যে, আমরা নানা ক্ষেত্রে সৃষ্টি হওয়া বহুস্তরবিশিষ্ট বৈষম্য লাঘব করে বাংলাদেশকে মানবিক উন্নয়নের মানবতাবাদী ধারায় স্থাপন করব ইনশাআল্লাহ।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply