শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫, ০৩:০১ অপরাহ্ন

মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশী সিনেমাকে তুলে ধরছেন নীহারিকা মমতাজ

তানজিম হাসান পাটোয়ারী
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন, ২০২৫
  • ৬ Time View

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ যে কোনো দেশের সাংস্কৃতিক জগতের একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত হলো সিনেমা। বাংলাদেশী সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিও এক্ষেত্রে কোনো অংশে পিছিয়ে নেই যা বিশ্বব্যাপী ঢালিউড সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি নামে পরিচিত। এই ইন্ডাস্ট্রিকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে কাজ করে যাচ্ছেন বাংলাদেশেরই একজন নারী উদ্যোক্তা। তার নাম নীহারিকা মমতাজ। মধ্যপ্রাচ্যে ঢালিউড সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির প্রমোশনের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। আর এসব বিষয়ে তিনি কথা বলেন ইকোনোমিক নিউজ টোয়েন্টিফোরের সঙ্গে। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন ইকোনোমিক নিউজ টোয়েন্টিফোরের নিজস্ব প্রতিবেদক তানজিম হাসান পাটোয়ারী।

ইকোনোমিক নিউজ টোয়েন্টিফোর: মধ্যপ্রাচ্যে আপনি এখন পর্যন্ত কোন কোন সিনেমার প্রমোশন করেছেন?

নীহারিকা মমতাজ: দুবাইতে আমি অমিতাভ রেজা চৌধুরীর ‘রিকশা গার্ল’ ছবিটির প্রমোশন করেছিলাম যেটি নীহারিকা মমতাজ প্রোডাকশনের অধীনে করা হয়েছিল ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে। এটি ছিল বাংলাদেশী সিনেমাকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। সিনেমাটি ছিল মূলত একটি তরুণীর দৃঢ়তার সাথে পথচলার গল্প নিয়ে। শুধু দুবাইতেই নয়, বরং বিশ্বের অনেক মানুষের কাছেই সিনেমাটি গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছিল। এটি প্রমাণ করে বাংলাদেশী সিনেমাও ভালো গল্পের কারণে বিশ্বব্যাপী গ্রহণযোগ্যতা পেতে পারে।

ইকোনোমিক নিউজ টোয়েন্টিফোর: আপনি বাংলাদেশী সিনেমা মধ্যপ্রাচ্যের দর্শকদের সামনে তুলে ধরেন। আপনার শোগুলোতে কোন কোন দেশের মানুষ অংশগ্রহণ করে?

নীহারিকা মমতাজ: আমি খুবই ভাগ্যবান কারণ আমার শোগুলোতে আমি অনেক দেশের মানুষকে যুক্ত করতে পেরেছি। সেখানে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসবাস করা বাংলাদেশী মানুষ যেমন ছিলেন, ঠিক তেমনি সেই দেশের স্থানীয় মানুষজনও ছিলেন। পাশাপাশি অন্যান্য দেশের অনেক মানুষও আমার শোতে অংশগ্রহণ করেছিলেন। সেখানে আমি যে বিষয়টি লক্ষ্য করি তা হলো বাংলাদেশী মানুষ বিদেশে বসে আমাদের দেশের সিনেমা দেখে রীতিমতো আবেগতাড়িত হয়ে পড়ে। এছাড়া বিদেশীদের মাঝেও আমি বাংলাদেশী সিনেমা নিয়ে এক ধরনের আবেগ দেখতে পেয়েছি। এছাড়া সেখানে আমি ফ্রান্স, ভারত এবং তুর্কি নাগরিকদের কাছ থেকেও ভালো সাড়া পেয়েছি। আমার শোতে এলাইয়েন্স ফ্রান্সাইজ অব দুবাইয়ের ডিরেক্টর তার বন্ধু-বান্ধবসহ অংশগ্রহণ করেছিলেন। সবকিছু মিলিয়ে এগুলো আমার কাছে দারুণ কিছু অভিজ্ঞতা ছিল।

ইকোনোমিক নিউজ টোয়েন্টিফোর: বিদেশীদের মাঝে বাংলা সিনেমা নিয়ে আপনি কেমন আগ্রহ লক্ষ্য করেছেন?

নীহারিকা মমতাজ: বিদেশীদের মাঝে আমি বাংলাদেশী সিনেমা নিয়ে এক ধরনের কৌতূহল দেখেছি। বিশেষ করে সিনেমার গল্প এবং সংলাপগুলো তাদের মাঝে বেশ উৎসাহ সৃষ্টি করে। আমাদের দেশীয় সিনেমার ভিজ্যুয়াল প্রেজেন্টেশন সাউথ এশিয়ার অন্যান্য দেশ থেকে আলাদা। এই বিষয়টিও বিদেশীদের কাছে বেশ গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। ঢালিউড সিনেমায় যেসব গান রয়েছে সেগুলোতে কথা, সুর, এবং অভিনয় ছিল বেশ নজরকাড়া। সব মিলিয়ে আমি বলব, বিদেশীদের কাছে বাংলাদেশী সিনেমার বেশ গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে।

ইকোনোমিক নিউজ টোয়েন্টিফোর: বিদেশের মাটিতে নিজের দেশের সিনেমা তুলে ধরা নিঃসন্দেহে একটি মহৎ কাজ। আপনি কীভাবে এই কাজের সাথে নিজেকে প্রথম যুক্ত করেছিলেন?

নীহারিকা মমতাজ: বাংলাদেশী সিনেমার সাথে আমার খুব গভীর একটি সম্পর্ক রয়েছে এবং আমি মনে করি আমাদের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। আর তাই তো আমি সবসময় চেষ্টা করতাম আমাদের সিনেমাকে সারা বিশ্বের সামনে তুলে ধরার। আর আমার এই যাত্রাটি শুরু হয়েছিল দুবাইতে ‘রিকশা গার্ল’ নামক সিনেমাটি দেখানোর মধ্য দিয়ে। সেসময় বাংলাদেশী এবং বিদেশী উভয়পক্ষের কাছ থেকেই খুব ভালো সাড়া পেয়েছিলাম। এটি আমাকে এই ধরনের আরো কাজ করতে উৎসাহী করে তুলে। তখন থেকে আমি সিনেমা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের সাথে যোগাযোগ শুরু করি যাতে করে বাংলা সিনেমা নিয়ে আরো বেশি কাজ করা যায়। যখন দেখি নিজের দেশের সিনেমাকে প্রমোট করার জন্য আমি কাজ করছি তখন সেটি দেখে নিজের কাছে খুব ভালো লাগে।

ইজোনোমিক নিউজ টোয়েন্টিফোর: ঢালিউড সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির উন্নয়নে কোন কোন পদক্ষেপগুলো নেওয়া প্রয়োজন বলে আপনি মনে করেন?

নীহারিকা মমতাজ: ঢালিউড সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির উন্নয়নের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর জোর দিতে হবে। প্রথমত, সিনেমার প্রোডাকশনে আধুনিকায়ন ঘটাতে হবে এবং সিনেমার চিত্র ধারণে বৈশ্বিক মডেল অনুসরণ করতে হবে। পাশাপাশি সিনেমার গল্প এমনভাবে ঠিক করতে হবে যাতে সেটি আমাদের ঐতিহ্য এবং সমসাময়িক বিষয়গুলোকে ভালোভাবে ফুটিয়ে তুলে। এছাড়া সিনেমা নিয়ে কাজ করে এমন বৈশ্বিক প্লাটফর্ম এবং এই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে যোগাযোগ রাখতে হবে। আমার বিশ্বাস এই বিষয়গুলো অনুসরণ করলে আমাদের ঢালিউড সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি অনেক দূর এগিয়ে যাবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS