শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫, ০৬:২১ অপরাহ্ন

ডাবল সেঞ্চুরির রেকর্ড গিলের

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : শুক্রবার, ৪ জুলাই, ২০২৫

অ্যান্ডারসন-টেন্ডুলকার ট্রফির চলমান সিরিজের আগে ইংল্যান্ডের মাটিতে তিন টেস্টে শুভমান গিলের ব্যাটিং গড় ছিল মাত্র ১৪.৬৬। তবে হেডিংলিতে অধিনায়ক হিসেবে ব্যাটিংয়ে নেমেই নিজের পুরনো ব্যর্থতার ‘ভূত’কে পেছনে ফেলে সেঞ্চুরি করেন ডানহাতি এই ব্যাটার। এজবাস্টনে রেকর্ড চুরমার করে ভারতের অধিনায়ক থামলেন ২৬৯ রানের ইনিংস খেলে। গিলের ডাবল সেঞ্চুরি পাওয়ার দিনে ভারত থেমেছে ৫৮৭ রানে।

এদিকে শেষ বিকেলে ব্যাটিংয়ে নেমে বিপাকে পড়েছে ইংল্যান্ড। আকাশ দীপ ও মোহাম্মদ সিরাজের ছোবলে ২৫ রানে ৩ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। ভারতীয় পেসারদের ছোবলের পর দিনের বাকিটা সময় সানন্দে পার করেছেন হ্যারি ব্রুক ও জো রুট। ভারতের চেয়ে ৫১০ রানে পিছিয়ে থেকে তৃতীয় দিনের সকালে ব্যাটিংয়ে নামবেন তারা দুজন।

প্রথম দিনের ৫ উইকেটে ৩১০ রান নিয়ে সকালের শুরুতে ব্যাটিংয়ে নামেন গিল ও রবীন্দ্র জাদেজা। দিনের প্রথম বলেই বেন স্টোকসের বলে সিঙ্গেল নিয়ে জুটির সেঞ্চুরি করেন গিল। ভারতের অধিনায়ককে সঙ্গ দেয়ার পাশাপাশি দ্রুত রানও করে যাচ্ছিলেন জাদেজা। বাঁহাতি ব্যাটারের হাফ সেঞ্চুরি মিলেছে ৮০ বলে। প্রথম ঘণ্টায় ইংল্যান্ডকে তেমন কোন সুযোগই দেননি তারা দুজন। ড্রিংকসের পর ২৬৩ বলে দেড়শ ছুঁয়ে মোহাম্মদ আজহারউদ্দিনের পাশে নাম লেখান। ভারতের দ্বিতীয় অধিনায়ক হিসেবে ইংল্যান্ডের মাটিতে দেড়শ করেন তিনি।

১৯৯০ সালে ওল্ড ট্রাফোর্ডে ১৭৯ রানের ইনিংস খেলেছিলেন আজহারউদ্দিন। একটু পর ছাড়িয়ে যান ভারতের সাবেক অধিনায়ককেও। এর আগে অবশ্য জাদেজার সঙ্গে দুইশ রানের জুটি গড়েন গিল। ডানহাতি ব্যাটারের মতো সেঞ্চুরির পথে হাঁটছিলেন জাদেজাও। তবে বাঁহাতি ব্যাটার শেষ পর্যন্ত তিন অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। জশ টাংয়ের শর্ট ডেলিভারিতে ডাগ করতে চেয়েছিলেন জাদেজা। বল গ্লাভস ছুঁয়ে উইকেটকিপার জেমি স্মিথের হাতে যাওয়ায় ফিরতে হয় তাকে। ১৩৭ বলে ৮৯ রানের ইনিংস খেলে ফেলেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। জাদেজার বিদায়ে ভাঙে ২০৩ রানের জুটি।

পরবর্তীতে ওয়াশিংটন সুন্দরকে সঙ্গে নিয়ে ভারতের রান বাড়াতে থাকেন গিল। দিনের প্রথম সেশনের বাকিটা সময় দারুণভাবে কাটিয়ে দেন তারা দুজন। লাঞ্চ থেকে ফিরে দ্রুত রান তুলতে থাকেন গিল। ভারতের অধিনায়ককে সঙ্গ দিতে থাকেন ওয়াশিংটন। ১৮৭ রানে ব্যাটিংয়ের সময় তিন বলের ব্যবধানে জশ টাংকে দুই চার মেরে ডানহাতি ব্যাটার পৌঁছালেন ১৯৫ রানে। বাকি ৫ রান করতে খুব বেশি সময় নিলেন না ভারতের অধিনায়ক। একটু পর টাংয়ের লেগ সাইডের শর্ট লেংথ ডেলিভারিতে পুল করে ফাইন লেগে ঠেলে এক রান নিয়ে করেছেন ডাবল সেঞ্চুরি। ৩১১ বলে দ্বিশতক পেয়েছেন তিনি।

ভারতের ষষ্ঠ অধিনায়ক হিসেবে টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন তিনি। ডানহাতি ব্যাটারের আগে এমন কীর্তি আছে মনসুর আলী খান পাতৌদি, সুনীল গাভাস্কার, শচীন টেন্ডুলকার, বিরাট কোহলি ও মহেন্দ্র সিং ধোনির। কোহলি বাইরে বাকি সবারই ডাবল সেঞ্চুরি আছে একটি করে। সম্প্রতি টেস্ট থেকে অবসর নেয়া কোহলি অধিনায়ক হিসেবে সবচেয়ে বেশি সাতটি ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন। অধিনায়ক হিসেবে তাঁর চেয়ে বেশি ডাবল সেঞ্চুরি নেই আর কারও। ভারতীয় অধিনায়ক হিসেবে দ্বিতীয় সর্বকনিষ্ঠ ডাবল সেঞ্চুরিয়ান এখন গিল। ২৫ বছর ২৯৮ দিন বয়সে এমন কীর্তি গড়েছেন।

সবার উপরে থাকা মনসুর আলী খান পাতৌদি ১৯৬৪ সালে করেছিলেন ২৩ বছর ৩৯ দিন বয়সে। দ্বিতীয় ভারতীয় অধিনায়ক হিসেবে দেশের বাইরে ডাবল সেঞ্চুরি করলেন গিল। ২০১৬ সালে নর্থ সাউন্ডে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে কোহলি খেলেছিলেন ২০০ রানের ইনিংস। নিজেদের ৯৩ বছরের টেস্ট ইতিহাসে ইংল্যান্ডের মাটিতে ভারতের প্রথম অধিনায়ক হিসেবেও ডাবল সেঞ্চুরি গিলেরই। এশিয়ার প্রথম কোন অধিনায়ক এসইএনএ দেশগুলোর একটিতে ডাবল সেঞ্চুরি করলেন তিনি।

আগের সেরা ইনিংসটা ছিল তিলকারত্নে দিলশানের। ২০১১ সালে লর্ডসে ১৯৩ রানের ইনিংস খেলেছিলেন শ্রীলঙ্কার তৎকালীন অধিনায়ক। গিল ছাড়াও ভারতীয় ব্যাটারদের মধ্যে ইংল্যান্ডের মাটিতে ডাবল সেঞ্চুরি আছে গাভাস্কার ও রাহুল দ্রাবিড়ের। একই দিনে তাদের দুজনকে ছাড়িয়ে গেছেন ২৫ বছর বয়সি এই ব্যাটার। ১৯৭৯ সালে ওভালে গাভাস্কার ২২১ এবং ২০০২ সালে হেডিংলিতে দ্রাবিড় করেছিলেন ২১৭ রান। ডাবল সেঞ্চুরির পরও নিজের সাবলীল ব্যাটিংই করে যাচ্ছিলেন গিল। তাকে সঙ্গ দেয়া ওয়াশিংটন হাফ সেঞ্চুরির খুব কাছে থাকলেও তাকে সেটা করতে দেননি রুট।

ডানহাতি স্পিনারের দারুণ এক ডেলিভারিতে ৪২ রানে বোল্ড হয়ে ফেরেন ওয়াশিংটন। বাঁহাতি ব্যাটারের বিদায়ে ভাঙে গিলের সঙ্গে ১৪৪ রানের জুটি। চা-বিরতি শেষ হওয়ার একটু পরই আউট হয়েছেন গিল। টাংয়ের বলে ওলি পোপের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ২৬৯ রানের ইনিংস খেলে। শেষের দিকে বাকিরা দ্রুতই আউট হলে প্রথম ইনিংসে ৫৮৭ রান তুলে থামে ভারত। ইংল্যান্ডের হয়ে শোয়েব বশির নিয়েছেন তিনটি উইকেট। এ ছাড়া দুইটি করে উইকেট পেয়েছেন টাং এবং ক্রিস ওকস।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS