শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫, ০৩:৪৮ অপরাহ্ন

চুয়াডাঙ্গায় ঈদে দই-মিষ্টির দোকানে উপচেপড়া ভিড়

মোঃ আব্দুল্লাহ হক
  • আপডেট : সোমবার, ৩১ মার্চ, ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগের দিন চুয়াডাঙ্গায় দই-মিষ্টির দোকানগুলোতে ছিল উপচে পড়া ভিড়। অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে এবার কোটি টাকার বেচাকেনায় উচ্ছ্বসিত বিক্রেতারা। ঈদ আনন্দে দই-মিষ্টি এখন অপরিহার্য হয়ে উঠেছে, তাই চাহিদাও আগের তুলনায় বহুগুণে বেড়েছে। শিশু থেকে বৃদ্ধ, ধনী-গরিব সবাই ঈদের আয়োজনে মিষ্টিমুখ করতে দোকানগুলোতে ভিড় করেছেন।

শুধু জেলা শহর নয়, চুয়াডাঙ্গার প্রত্যন্ত অঞ্চল, উপজেলার বাজার এবং গ্রামাঞ্চলের দই-মিষ্টির দোকানগুলোতেও এবার বেচাকেনা ছিল বেশ ভালো। আলমডাঙ্গা, জীবননগর ও দামুড়হুদার বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বিক্রি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, “গত ২০ বছরে এমন বেচাকেনা দেখিনি।”

ঈদের দুদিন আগে থেকেই চুয়াডাঙ্গা শহরের কালিপদ মিষ্টান্ন ভান্ডার, কাশফুল, মিঠাই বাড়ি, খন্দকার সুইটস, মিষ্টিমুখসহ জনপ্রিয় দোকানগুলোতে গভীর রাত পর্যন্ত ক্রেতাদের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে।

এক বিক্রেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “সারা জেলাজুড়ে কয়েক কোটি টাকার দই-মিষ্টি বিক্রি হয়েছে। শুধু চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরেই গত দুই দিনে দুই কোটি টাকার বেশি বিক্রি হয়েছে।”

কাশফুল মিষ্টির দোকানের মালিক অপু জানান, তার দোকানে পাঁচজন কর্মচারী কাজ করলেও ক্রেতার চাপ সামলাতে কষ্ট হচ্ছে। খন্দকার সুইটস-এর মালিক সৌরভ বলেন, “ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে আমাদের কারিগররা দিন-রাত দই-মিষ্টি বানাচ্ছেন।

একাডেমী মোড় এলাকার মাসুদ বলেন, “দুপুরে এসে প্রচুর ভিড়ের কারণে দুই ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও দই পাইনি। পরে মাঝরাতে এসেও শুনি দই নেই!” পরে অন্য দোকান থেকে দই কিনেছি।

শহরের ব্যবসায়ী সুমন পারভেজ খান জানান, “গত রাতে এসে দই না পেয়ে ফিরে গিয়েছিলাম। আজ অনেক ঠেলাঠেলি করে দই কিনতে পেরেছি। ঈদে দই-মিষ্টি ছাড়া উৎসব যেন অসম্পূর্ণ!”

তবে, এক দোকানের কর্মচারী জানিয়েছেন, “বিক্রি বেশি হচ্ছে, তবে অতিরঞ্জিত নয়। ঈদের সময় স্বাভাবিকভাবে যেমন বিক্রি হয়, এবারও তেমনই হচ্ছে।”

শহরের পাশাপাশি উপজেলার বিভিন্ন বাজার ও গ্রামের ছোট ছোট মিষ্টির দোকানেও ভালো বিক্রি হয়েছে। স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেন, “অনেক দূরদূরান্ত থেকেও ক্রেতারা এসে দই-মিষ্টি কিনছেন, যা আগে খুব একটা দেখা যেত না।”

মিঠাই বাড়ির এক বিক্রেতা বলেন, “আমরা মান বজায় রেখে দই-মিষ্টি তৈরি করি, তাই বিক্রি ভালো হচ্ছে। ঈদের কারণে বিক্রি আরও বেড়েছে।”

চুয়াডাঙ্গা চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক মনজুরুল ইসলাম লার্জ বলেন, “এবার জেলায় কোটি কোটি টাকার দই-মিষ্টি বিক্রি হয়েছে। ব্যবসায়ীদের জন্য এটি অবশ্যই আনন্দের খবর।”

চুয়াডাঙ্গা শহর ও উপজেলাগুলোর বিভিন্ন মিষ্টির দোকানে ঘুরে দেখা গেছে, ঈদের দিন ভোর পর্যন্ত ক্রেতারা লাইনে দাঁড়িয়ে দই-মিষ্টি কিনছেন। শহরজুড়ে ঈদের আমেজ, ব্যস্ততা আর উৎসবের আনন্দে মেতে উঠেছে মানুষ। ব্যবসায়ীরা যেমন খুশি, তেমনি ঈদে প্রিয়জনের মুখে মিষ্টি তুলে দিতে পেরে আনন্দিত ক্রেতারাও।

এবারের ঈদে চুয়াডাঙ্গাবাসীর জন্য ছিল এক ব্যতিক্রমী উৎসব, যেখানে দই-মিষ্টির কদর ছিল সবার শীর্ষে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS