নিজস্ব প্রতিনিধি: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং ও ইন্স্যুরেন্স বিভাগে অনুষ্ঠিত হলো দুই দিনব্যাপী গবেষণা ওয়ার্কশপ। গত ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় ওয়ার্কশপের প্রথম দিনের কার্যক্রম। এরপর গত ৬ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় দিনের কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে এর আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়। ওয়ার্কশপটিতে ব্যাংকিং ও ইন্স্যুরেন্স বিভাগের ৫ম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
গবেষণা ওয়ার্কশপটি পরিচালনা করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক ড. মো: আফতাব উদ্দিন। ওয়ার্কশপটি আয়োজনের দায়িত্বে ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং ও ইন্স্যুরেন্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো: আবু বক্কর সিদ্দিক।
শিক্ষার্থীদের মাঝে গবেষণার আগ্রহ তৈরি এবং এ সম্পর্কে বিশদ জ্ঞানদানই ছিল ওয়ার্কশপটির মূল উদ্দেশ্য। এছাড়া সেখানে উঠে আসে বর্তমানে গবেষণার ক্ষেত্রে বিদ্যমান সমস্যা এবং সেগুলো সমাধানের উপায় সম্পর্কে।
এসব বিষয়ে অধ্যাপক ড. মো: আফতাব উদ্দিন বলেন, “গবেষণা হচ্ছে একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। তাই এখানে কাজ করতে হলে অবশ্যই ধৈর্য নিয়ে কাজ করার মানসিকতা রাখতে হবে। পাশাপাশি সঠিক ও নির্ভরযোগ্য তথ্য উপস্থাপনের ক্ষেত্রেও সচেতন থাকতে হবে। এছাড়া তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে যাচাই-বাছাই করে নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হতে তথ্য সংগ্রহে দিতে হবে বিশেষ গুরুত্ব।”
এছাড়া গবেষণার গুরুত্ব সম্পর্কে আরো কথা বলেন ওয়ার্কশপটি আয়োজনের দায়িত্বে থাকা সহকারী অধ্যাপক মো. আবু বক্কর সিদ্দিক। তিনি বলেন, “পূর্বের তুলনায় বর্তমানে গবেষণার পরিধি অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই আমাদেরকে অবশ্যই গবেষণার উপর আরো বেশি গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। তবে মান অক্ষুণ্ণ রেখে গবেষণার জন্য অবশ্যই তাত্ত্বিক ও প্রায়োগিক জ্ঞানের উপর জোর দিতে হবে।”
ওয়ার্কশপটিতে শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়। ওয়ার্কশপে অংশগ্রহণ করা শিক্ষার্থী প্রতীক রায় বলেন, “আফতাব স্যারের মতো এমন একজন বিশেষজ্ঞ মানুষের কাছ থেকে গবেষণা সম্পর্কে অনেক খুঁটিনাটি বিষয় যেমন- গবেষণায় কি করতে হবে, কি করা যাবে না, টাইটেল এবং কি-ওয়ার্ড কেমন হবে ইত্যাদি বিষয় নিয়ে যথেষ্ট দিকনির্দেশনা এ ওয়ার্কশপে পেয়েছি। মূলত যারা গবেষণা করার জন্য আগ্রহী তাদের জন্য এ ওয়ার্কশপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আমি মনে করি।”
এছাড়া ওয়ার্কশপে অংশ নেওয়া আরেক শিক্ষার্থী আরজু আক্তার বলেন, “গবেষণার প্রভাব আসলে কোথায় তা জানতে চাওয়া হলে বলা যায় বিশ্বব্যাপী চলমান যেকোনো সমস্যার সমাধানে একজন ব্যক্তি চাইলে তার গবেষণার মাধ্যমে অবদান পারেন। আর সমস্যার বিপরীতে সমাধান অনুসন্ধানের যে ধারাবাহিক প্রক্রিয়া রয়েছে সে প্রক্রিয়ার শুরু হতে শেষ পর্যন্ত কি কি বিষয়ের উপর একজন গবেষকের সচেতন থাকতে হয়, ডাটা এনালাইসিসের জন্য কি কি টুলস ব্যবহার করা হয়, গবেষণার ইম্পেক্ট স্কোর বাড়ানোর উপায়সহ আরো অনেকগুলো বিষয় আমি এ ওয়ার্কশপ থেকে শিখতে পেরেছি যা আমার বাস্তবিক জীবনে কাজে লাগাতে পারবো বলে আশা করি।”
গবেষণা ওয়ার্কশপটিতে অংশ নেওয়া আরেক শিক্ষার্থী হলেন হালিমা বেগম। তিনিও তুলে ধরেন এ ওয়ার্কশপটির বিভিন্ন শিক্ষণীয় দিক সম্পর্কে। তিনি বলেন, “আমাদের জীবনে আজ আমরা যেসব প্রযুক্তিগত এবং অন্যান্য সুবিধা উপভোগ করছি তার কোনোটিই কিন্তু আপনাআপনি হয়ে যায় নি। সব কিছুই এক একটি গবেষণার ফসল। আর এ ওয়ার্কশপটি থেকে আমরা বুঝতে পেরেছি গবেষণা আগামীতে উন্নত দেশগুলোর পাশাপাশি উন্নয়নশীল দেশগুলোতেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। আমি বিশ্বাস করি এ ধরনের ওয়ার্কশপ শিক্ষার্থীদের মধ্যে গবেষণার প্রতি আগ্রহ বাড়িয়ে তুলবে।”
এসব বিষয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং ও ইন্স্যুরেন্স বিভাগের সভাপতি তাসলীমা আক্তার বলেন, আমাদের বিভাগে এ ধরনের একটি গবেষণা ওয়ার্কশপ আয়োজিত হয়েছে জেনে আমি অত্যন্ত উচ্ছ্বসিত। এ ধরনের গবেষণা কার্যক্রম আগামীতে আমাদের গবেষণার পরিধিকে আরো বাড়াতে সক্ষম হবে যা সামগ্রিকভাবে দেশ ও জাতির অগ্রগতিতে ভূমিকা রাখবে বলে আমি বিশ্বাস করি। এছাড়া ওয়ার্কশপটিতে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা আগামীতে কর্মজীবনে গিয়েও গবেষণার মাধ্যমে তাদের কর্মক্ষেত্রকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে আশা করি।”
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply