রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫, ১১:৪৩ অপরাহ্ন

ব্যবসায়ী থেকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ১২ এপ্রিল, ২০২২
Shah-baj

পাকিস্তানের ২৩তম প্রধানমন্ত্রী হলেন পিএমএল-এন নেতা শাহবাজ শরীফ৷ ব্যবসা সংগঠনের নেতৃত্ব, পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব, বিরোধী দলীয় নেতার ভূমিকার পর কঠিন এক সময়ে সরকার প্রধান হলেন তিনি৷ এ ছাড়া দ্বিতীয়বারের মতো

এক পরিবার থেকে দুই প্রধানমন্ত্রী পেলো পাকিস্তান৷ ১৯৯০ সালে এবং ১৯৯৭ সালে দুই দফা প্রধানমন্ত্রীত্বের দায়িত্ব পেয়েছিলেন শাহবাজ শরীফের ভাই নওয়াজ শরীফ৷ এর আগে ১৯৭৩ সালে জুলফিকার আলী ভুট্টো এবং তারপর ১৯৮৮ সালে পাকিস্তানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন তার মেয়ে বেনজির ভুট্টো৷ ১৯৯৩ সালে দ্বিতীয়বারের জন্যেও নির্বাচিত হয়েছিলেন আতাতায়ীর হামলায় নিহত বেনজির৷

মিয়া মোহাম্মদ শাহবাজ শরীফের জন্ম ১৯৫১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর পাঞ্জাবের লাহোরে৷ তার বাবা ছিলেন শিল্পপতি মিয়া মোহাম্মদ শরীফ৷ স্নাতক শেষ করে শাহবাজ শরীফ নিজেও পারিবারিক প্রতিষ্ঠান ‘ইত্তেফাক’-এর হাল ধরেন৷ ১৯৮৫ সালে তিনি লাহোর চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন৷

১৯৮৮ সালে পাঞ্জাব অ্যাসেম্বলির সদস্য হওয়ার মধ্য দিয়ে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন ব্যবসায়ী শাহবাজ৷ ১৯৯০ সালে এমএনএ নির্বাচিত হওয়ার পর ১৯৯৩ সালে পাঞ্জাব অ্যাসেম্বলির বিরোধী দলের নেতা হয়ে ওঠেন তিনি৷ পাঞ্জাব অ্যাসেম্বলির বিরোধী দলের নেতা হিসেবে সাফল্যের পথ ধরে ১৯৯৭ সালে তিনি লিডার অব দ্য হাউজ নির্বাচিত হন৷ তখন তিনি কঠোর প্রশাসক হিসেবেও নাম কুড়ান৷ পাঞ্জাব প্রদেশের স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পরিবেশ উন্নয়নে ভূমিকা রাখেন তিনি৷

১৯৯৯ সালের অক্টোবরে পাকিস্তানের তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল পারভেজ মোশাররফ পিএমএল-এন সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে৷ সেই সময় গ্রেপ্তার এবং পরবর্তীতে ২০০০ সালের ডিসেম্বরে পরিবারসহ নির্বাসিত হন সৌদি আরবে৷ জেদ্দাহ ও লন্ডনে থাকাকালে বেশ কয়েক বছর রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় ছিলেন শাহবাজ৷

২০০৭ সাালের ২৫ নভেম্বর ভাই নওয়াজ শরীফের সঙ্গে পাকিস্তানে প্রত্যাবর্তন করেন৷ এরপর থেকে রাজনীতির ময়দানে সক্রিয় তিনি৷ ২০০৯ সালে পাঞ্জাবের ২১তম মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন৷ প্রদেশের উন্নয়নে এসময় বেশ কিছু অবকাঠামো প্রকল্প নেন৷ তার সামাজিক প্রকল্প ‘সস্তা তন্দুর’ এবং ‘আশিয়ানা ঘর’ প্রশংসা কুড়ায়৷ দুর্নীতি দমনে কঠোর অবস্থানও নেন তিনি৷

২০১৩ সালে তৃতীয় দফা পাঞ্জাব মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পান শাহবাজ৷ ২০১৮ সালে পিএমএল-এন পরাজিত হলে এই অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটে৷ এ সময় তিনি জাতীয় পরিষদের বিরোধী দলীয় নেতা নির্বাচিত হন৷ ২০১৯ সালে অর্থ পাচারের অভিযোগে পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরো তার ও তার সন্তানের নামে থাকা ২৩ সম্পত্তি জব্দ করলে বিপাকে পড়েন শাহবাজ৷ ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে গ্রেপ্তার হওয়ার পর ২০২১ সালের এপ্রিলে জামিন পান শাহবাজ৷

চলতি বছরের মার্চে জাতীয় পরিষদে ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে বিরোধী দলগুলো৷ নানা নাটকীয়তার পর ইমরান খান সেই অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হন৷ প্রধানমন্ত্রীত্বের দুয়ার খোলে শাহবাজের জন্য৷ বিদেশ নীতির ব্যর্থতা, অর্থনৈতিক সংকটসহ যেসব কারণে ইমরান ক্ষমতা হারিয়েছেন, সেগুলো সামাল দেয়াই এখন পাকিস্তানের ২৩তম প্রধানমন্ত্রীর জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ৷

সূত্র: ডিডাব্লিউ

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS