লক্ষ্যটা খুব বেশি কঠিন ছিল না। রান পাচ্ছিল ব্যাটাররাও। তবে রংপুর রাইডার্সের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে হাতে পর্যাপ্ত উইকেট থাকলেও মন্থর ব্যাটিংয়ে জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় রান তুলতে ব্যর্থ হয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।
সিলেটে মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) বিপিএলের ১৫তম ম্যাচে ৮ রানের জয় পেয়েছে রংপুর। তাতে কুমিল্লাকে হটিয়ে পয়েন্ট টেবিলের তিনে উঠে এসেছে সাকিব-সোহানরা। ৫ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ৬। ৪ ম্যাচে ২ পয়েন্ট কম নিয়ে চারে কুমিল্লা।
রান তাড়ায় নেমে শুরুতেই উইকেট বিলিয়ে দেন অধিনায়ক লিটন দাস। গোল্ডেন ডাককে সঙ্গী করে এদিন মাঠ ছাড়া এ ব্যাটার চলতি বিপিএলে চার ম্যাচের একটিতেও জ্বলে উঠতে পারেননি। আগের তিন ম্যাচে তার রান ছিল যথাক্রমে ১৩, ১৪ ও ৮ রান। শুরুর ধাক্কা সামলে দ্বিতীয় উইকেটে ৫৯ রানের জুটি গড়েন মোহাম্মদ রিজওয়ান ও মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। তবে এ জুটিতে রানের গতি ছিল খুবই মন্থর। দশম ওভারের শেষ বলে ২১ বলে ১৭ রান করে আউট হন রিজওয়ান।
এরপর ক্রিজে নেমে রানের গতি বাড়িয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন তাওহিদ হৃদয়। একপ্রান্ত আগলে রেখে খেলা অঙ্কন সাজঘরে ফেরেন ৪ চার ও ৩ ছক্কায় ৫৫ বলে ৬৩ রান করে। তিনি যখন আউট হন তখন কুমিল্লার জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ২২ বলে ৪৩ রান। প্রয়োজনীয় রান তুলে দেয়ার প্রচেষ্টায় ক্রিজে নেমেই আক্রমণাত্মক ব্যাট চালান খুশদিল শাহ। কিন্তু তিনি ক্রিজে স্থায়ী হতে পারেননি। ২ ছক্কায় ৮ বলে ১৩ রান করে আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের বলে ফজলে মাহমুদকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। তার বিদায়ের পর ১৯তম ওভারটি কাজে লাগাতে পারেননি হৃদয় ও রেইমন রেইফার। হাসান মাহমুদের এ ওভারে আসে মাত্র ৭ রান। তাতে শেষ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন পড়ে ২৯ রান।
শুরুতেই রেইফারের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝির শিকার হয়ে সাকিব আল হাসানের ওয়াইড বলে রান আউট হন হৃদয়। ২৮ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ৩৯ রানে থামে তার ইনিংস। পরের বলে ওভার বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে লং অনে ধরা পড়েন আমের জামাল। এরপর জাকের আলী নেমে পরপর দুটি ছক্কা হাঁকান। পরের দুই বলে এক বাউন্ডারিসহ তুলে নেন আরও ৬ রান। কিন্তু ম্যাচ অনেক আগেই ফসকে যাওয়ায় তার এ আগ্রাসী ব্যাটিং কোনো কাজে লাগেনি। কমেছে কেবল হারের ব্যবধান। ৪ বলে ৪৫০ স্ট্রাইকরেটে ১৮ রানে অপরাজিত থাকেন জাকের।
রংপুরের পক্ষে ৩১ রান খরচায় ২ উইকেট নেন ওমরজাই। ১ উইকেট নিতে সাকিবের খরচ ৪১ রান। তবে দারুণ ইকোনমিকাল ছিলেন হাসান ও মোহাম্মদ নবি। ৪ ওভার বল করে হাসান ২৩ আর নবি মাত্র ১৯ রান খরচায় ১টি করে উইকেট নেন।
এর আগে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৬৫ রান সংগ্রহ করে রংপুর। শুরুটা অবশ্য ভালো ছিল না রংপুরের। তানভীর ইসলামের অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল ডাউন দ্য উইকেটে এসে খেলতে গিয়ে মোহাম্মদ রিজওয়ানের স্টাম্পিং হয়েছেন ১২ বলে ১৪ রান করা ব্র্যান্ডন কিং। দ্বিতীয় উইকেটে অবশ্য বাবর আজম ও ফজমে মাহমুদ মিলে ক্রিজের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন। দুজনের জুটিতে আসে ৫৫ রান।
দলীয় ৭৩ রানে খুশদিল শাহর লেংথ ডেলিভারিতে বলের লাইন মিস করে বোল্ড হন ৩৬ বলে ৩৭ রান করা বাবর। একপ্রান্ত আগলে রেখে দারুণ খেলছিলেন ফজলে মাহমুদ। তিনি মুস্তাফিজুর রহমানের বলে ডিপে জাকের আলী অনিকের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়েছেন ২১ বলে ৩০ রান করে। আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করতে চেয়েও সেটা পারেননি শামীম হোসেন পাটোয়ারী। রেইমন রেইফারের স্লোয়ার ডেলিভারিতে মিড অফের উপর দিয়ে উড়িয়ে মারতে চাইলেও আউট হয়েছেন লং অফে লিটন দাসকে ক্যাচ দিয়ে।
শামীমের ব্যাট থেকে এসেছে ১৪ রান। এরপর উইকেটে এসেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেছেন মোহাম্মদ নবি। রেইফারকে ১৯তম ওভারে প্রথম দুই বলে একটি করে চার ও ছক্কা মেরেছিলেন নবি।
তৃতীয় বলে মিড উইকেট দিয়ে খেলতে গিয়ে বলের লাইন মিস করে বোল্ড হয়েছেন ১৩ রান করা নবি। শেষদিকে অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান ও আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের ব্যাটে ভর করে দেড়শ পার করে রংপুর। ওমরজাই ২০ বলে ৩৬ ও সোহান ৬ বলে ১৫ রান করে অপরাজিত ছিলেন। ২০ রান খরচায় কুমিল্লার পক্ষে সর্বোচ্চ ২ উইকেট নেন রেইমন রেইফার।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply