শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫, ০৪:০৪ পূর্বাহ্ন

রাগের যত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : শুক্রবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

‘রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন’—রাগ উঠলে এমন নীতিবাক্য মাথায় তেমন কাজ করে না। আর প্রতি এক মিনিটের রাগের জন্য, আপনার ৬০ সেকেন্ডের শান্তি নষ্ট হচ্ছে। মূলত রাগ হলো অন্যের বোকামির জন্য নিজেকে শাস্তি দেয়া বা নিজের বোকামির জন্য নিজেকে শাস্তি দেয়া।

অনেকেই আছেন রাগ ঝাড়তে পারলে শান্তি পান। তবে এ শান্তি সাময়িক সময়ের। কেননা, রাগ প্রকাশ করা শরীর এবং মনের জন্য অশান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

আবার অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় রাগ হলে চিৎকার করে, কেউ কান্না করে, কেউবা কেউ চুপ থাকে আবার অনেককে দেখা যায় ভাঙচুর করতে। অবশ্য আপনি যেভাবেই রাগ প্রকাশ করেন না কেন, এর কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে, যা শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। চলুন জেনে নিই রাগের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো সম্পর্কে–

মাথাব্যথা

রাগ করা মানে উত্তেজিত হওয়া। রাগ করে চেঁচামেচি করলে নিউরন হঠাৎ উত্তেজিত হয়, আবার চুপ করে থাকলেও ভেতরে ভেতরে নিউরন উত্তেজিত হয়। আকস্মিক উত্তেজনায় স্নায়ুকোষে চাপ পড়ে এবং মাথাব্যথা শুরু হয়। যা হালকা থেকে তীব্র হতে পারে।

ঘুম না হওয়া

রাগ থেকে হয় দুশ্চিন্তা। দুশ্চিন্তা ঘুম না হওয়ার পেছনে একটি বড় কারণ। সঙ্গে রাগ থেকে যে মাথাব্যথা হয় সে কারণেও ঘুমে ব্যাঘাত ঘটতে পারে।

হজমে সমস্যা

রাগ করে অনেকে খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দেয়। কিংবা খাবারে অনিয়ম করে তাই হজম ক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটে।

উদ্বেগ ও বিষণ্নতা
রাগ থেকে শুরু হয় নিজেকে দোষারোপ করা। এ কারণে বিষণ্নতায় চলে যায় অনেকেই। আবার রাগের কারণে যে কোনো সম্পর্কের যে অবনতি হয় তাতে উদ্বিগ্নতাও বাড়ে।

ত্বকের সমস্যা

রাগের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলোর একটির সঙ্গে অন্যটির যোগ রয়েছে। ঠিকমতো ঘুম না হলে, হজমে সমস্যা হলে ত্বকে ভাঁজ পড়ে, ত্বক নির্জীব দেখায় এবং ব্রণের সমস্যা দেখা দেয়।

রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া

রাগলে শরীরে রক্তপ্রবাহ কমে যায় এবং নিউরোকেমিক্যাল নামের হরমোন নিঃসরণ হয়, ফলে রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়।

হৃদ্‌রোগ

রাগ রক্তনালিগুলোর সংকোচন বা সংকীর্ণতাকে অনিয়মিত করে। শরীরে রক্তপ্রবাহ কমে যায় দেখে হার্টেও রক্ত সঞ্চালন ব্যাহত হয়। এ থেকে হৃদ্‌রোগ হতে পারে। যাদের হার্টে সমস্যা আছে অতিরিক্ত উত্তেজনায় রক্ত সঞ্চালন বন্ধ হয়ে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

ক্ষুধামান্দা 

রাগ করার পর অনেকে সাধাসাধি করার পরও খেতে চায় না। মনে হতে পারে হয়তো এখনও রেগে আছে। কিন্তু ব্যপারটি হলো রাগ করলে মস্তিষ্ক থেকে আড্রেনালিন নিঃসরণ হয় যাতে বিপাকক্রিয়া ধীর হয় এবং ক্ষুধা পায় না।

কাজের প্রতি অনাগ্রহ

উল্লেখ করা সব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে দৈনন্দিন কাজ করার আগ্রহ চলে যায়। রাগ প্রকাশের পর কোনো কাজে মন বসানো যায় না। ফলে কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটে।

তাই রাগের মতো ক্ষতিকর আবেগ প্রকাশে নয়, অনুভূত করা থেকে নিজেকে বিরত রাখার চেষ্টা করতে হবে। এই আবেগটা শরীর এবং মনের ওপর ভারী প্রভাব ফেলে। তাই সবসময় মনে রাখতে হবে: ‘রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন’।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS