শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫, ০৩:৪২ পূর্বাহ্ন

হঠাৎ পেটে গর্জন? অস্বস্তি এড়াতে যা করবেন

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : রবিবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

কাজ করছেন, হঠাৎ মনে হলো পেটে গুড়গুড় শব্দ। থেমে থেমে কিংবা ক্রমাগত এ আওয়াজের বহর চলতেই থাকে। মাঝে মাঝে শব্দের মাত্রা এমন হয় যে পাঁচজনের মাঝে তা আপনাকে অস্বস্তিতে ফেলে দেয়। কেতাবি ভাষায় পেটের এ গুড়গুড় শব্দকে বলে পেটের গর্জন। আর চিকিৎসাশাস্ত্রে এর নাম বরবোরিগমাই।

আসুন জেনে নিই কীভাবে এ লজ্জাজনক দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি মোকাবিলা করা যায়–

পেট কেন গাইছে?

বেশির ভাগ সময়ই আমরা ভাবি পেটের এ শব্দ মূলত ক্ষুধার গর্জন। পেট খালি তাই আপনাকে তা জানান দিচ্ছে। কিন্তু পেট ভরা থাকলেও এমন শব্দ হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমরা যখন তরল বা খাবার খাই তখন তা খাদ্যনালি দিয়ে পাকস্থলীতে পৌঁছায়। তারপর তা ক্ষুদ্র ও বৃহদন্ত্রে প্রবেশ করে। খাবার যখন অন্ত্রের মধ্য দিয়ে যায়, তখন পেশির সংকোচন এবং পরিপাকতন্ত্রে গ্যাস তৈরি হওয়ার কারণে এমন শব্দের সৃষ্টি হয়।

আবার কোমল পানীয় বেশি পান করার কারণেও এমনটা ঘটতে পারে। এতে কার্বোনেট ও চিনির পরিমাণ বেশি থাকায় পেটে বুদবুদ সৃষ্টি হয়। খাবার খাওয়ার মাঝে পানি পান করা যাদের অভ্যাস তাদেরও এমনটা হয়। এমনকি তাড়াহুড়ো করে পানি ও খাবার খেলে পরিপাকনালিতে অপ্রয়োজনীয় বাতাস ঢুকে যায়। যার ফলে পেট গুড়গুড় করতে পারে।

পেট কিন্তু গর্জনের মাধ্যমে আপনার দেহে বাসা বাঁধা কোনো রোগের জানান দিতে পারে। সাধারণত পেট গুড়গুড় করার সঙ্গে যদি আপনার বমি বমি ভাব, অম্বল, ফুসকুড়ি, পেট মোচড়ানো বা ডায়রিয়ার মতো লক্ষণ দেখা দেয়, তখন বুঝতে হবে আপনার পেট বা অন্ত্রে কোনো সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বিষয়টি এড়িয়ে না গিয়ে, সচেতনতার সঙ্গে লক্ষ করা উচিত। উপসর্গগুলো বেশি ভোগালে দেরি না করে ডাক্তার দেখাতে হবে।

অপ্রীতিকর শব্দকে তৎক্ষণাৎ মোকাবিলা করবেন যেভাবে

পেটের গর্জন কোনো সুখকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে না। কিন্তু আপনার মনে রাখতে হবে যে এটা একটা শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া। এর মাধ্যমে আপনার দেহ আপনাকে বার্তা পাঠাচ্ছে। এরকম পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে তাৎক্ষণিক এক গ্লাস পানি পান করতে পারেন। এক্ষেত্রে স্বল্প বিরতিতে পানি পান করতে হবে। হাতের কাছেই পাওয়া যায় এমন খাবার যেমন: রুটি, মুড়ি, মিছরি বা ক্র্যাকার জাতীয় হালকা খাবার খেতে পারেন। পেটে গ্যাস তৈরি করবে এমন খবার খাওয়া যাবে না।

চিনিবিহীন সাদা দই-

মিষ্টি দই নয় বরং চিনিবিহীন দই খেলে অনেকটাই আরাম পাবেন। মিষ্টি ছাড়া দইয়ে প্রোবায়োটিক থাকে যা হজম করতে সাহায্য করে। ফলে পেটের অস্বস্তি কমে। অল্প অল্প করে দইয়ের সঙ্গে ভাজা জিরার গুঁড়া, রক সল্ট এবং কালো মরিচ খেলে তা পেটের গর্জন ঠিক করতে সাহায্য করবে।

আদা চা-

আদা চা তৈরির সময় কিছু মৌরিও যুক্ত করুন। এই চা হজমের অস্বস্তি দূর করতে সাহায্য করতে পারে। আদা ও মৌরি বীজের মিশ্রণের কারণে এমনটা হয়। এ দু’টি উপাদানের কার্মিনেটিভ বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা গ্যাস এবং হজমের অস্বস্তি কমাতে পারে।

মৌরি-আজওয়াইনের চা-

এ চা পানে গ্যাস, ফোলাভাব, কোষ্ঠকাঠিন্য, অ্যাসিডিটি এবং অন্যান্য হজম সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান পাওয়া যাবে। এক টেবিল চামোচ মৌরি ও আজওয়াইনের বীজ নিয়ে এক কাপ গরম পানিতে ভালো করে ফুটিয়ে নিলে তৈরি হয়ে যাবে মৌরি-আজওয়াইনের চা।

পুদিনা পাতার চা

পুদিনা পাতার চা তৈরি করতে গরম পানিতে পুদিনা পাতা দিয়ে ৪/৫ মিনিটের জন্য ফুটিয়ে নিতে হবে। সঙ্গে যুক্ত করবেন অল্প পরিমাণে মধু। এ সাধারণ মিশ্রণটি হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করবে। কারণ পুদিনা পাতা প্রাকৃতিকভাবে পরিপাকতন্ত্রের পেশী শিথিল করতে এবং পেটের অস্বস্তি কমাতে সাহায্য করে।

-টাইমস অব ইন্ডিয়া

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS