রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫, ০৪:১৪ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ
মাধবপুর মাদ্রাসার ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে শাহ আলম আটক স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক-এর ১১তম এমটিও ব্যাচের ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত কমিউনিটি ব্যাংকের উদ্যোগে “বাংলাদেশ ব্যাংক কম্প্রিহেনসিভ ইনস্পেকশন কমপ্লায়েন্স” শীর্ষক বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত লুকিয়ে রাখা বাচ্চা আমার কাছে পৌঁছে দিলে ২০ হাজার ডলার দেব: তিশা গ্লোবাল সুপার লিগে খেলবেন সাকিব আল হাসান বিএনপিকে সংস্কারবিরোধী বলে একটি কুচক্রীমহল প্রচার করছে : মির্জা ফখরুল সংঘাতের পর প্রথমবার প্রকাশ্যে খামেনি বাংলাদেশে কোনো ধরনের জঙ্গিবাদ নেই : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা রিটার্ন জমায় পাঁচ খাতে মিলবে করছাড় আজ পবিত্র আশুরা

একদিনে কোটি টাকার গোলাপ বিক্রি

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : সোমবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ বসন্তবরণ ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবস কাল। দিবস দুটি ঘিরে ফুলের বাজার চাঙা হয়েছে। ফুলের রাজধানীখ্যাত যশোরের গদখালী মোকামে ফুল বিক্রির ধুম পড়েছে। রোববার মোকামে প্রায় তিন কোটি টাকার ফুল বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে রেকর্ড কোটি টাকার গোলাপ হাতবদল হয়। বিশেষ দিবসে গোলাপের চাহিদা তুঙ্গে থাকায় দামও উত্তাপ ছাড়িয়েছে। চড়া দামে ফুল বিক্রি করতে পেরে খুশি চাষিরা। তবে পাইকার ও ফড়িয়ারা বাড়তি দামে ফুল কিনতে অস্বস্তিতে পড়েছেন। তারা বলছেন, দাম বেশি হওয়ায় ক্রয়ের সক্ষমতা কমছে। খুচরা পর্যায়ে দাম আরও বাড়বে। এদিকে পহেলা ফাল্গুন, ভালোবাসা ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে সামনে রেখে নারায়ণগঞ্জের বন্দরে ৬ কোটি টাকার ফুল বিক্রির আশা করছেন কৃষকরা। তিন দিবসকে কেন্দ্র করে ব্যস্ত সময় পার করছেন ঝিনাইদহের ফুলচাষিরা।

যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের পাশে গদখালী বাজারে কাকডাকা ভোরে খেতের ফুল নিয়ে হাজির কয়েকশ চাষি। বাইসাইকেল-মোটরসাইকেলে কিংবা ভ্যানে তারা পসরা সাজিয়েছেন। বগুড়া, রাজশাহী, গোপালগঞ্জ, পাবনা, চুয়াডাঙ্গাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাইকার ও ফড়িয়াদের দরকষাকষিতে জমে ওঠে বাজার। মানভেদে ফুলের দাম নির্ধারণ চলছে। বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও বসন্তবরণ উৎসবে চাহিদার ফুলগুলোর দাম চড়া। চাষি ন্যায্য দাম পেতে অনড়। পাইকারও নিজের মাসুল রেখেই কষছেন দাম। দরকষাকষির পরও বিক্রীত ফুলের দামে খুশি চাষিরা। তবে হতাশার সুর পাইকারদের কণ্ঠে। তারা বলছেন, চড়া দামে কিনে খুচরা বাজারে ফুল বিক্রি কঠিন হয়ে যাবে।

এদিন মোকামে প্রতিটি গোলাপ (ক্যাপ ছাড়া) ২৫ টাকা ও ক্যাপসহ গোলাপ বিক্রি ১৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। পাঁচ দিন আগেও গোলাপের পাইকারি দাম ছিল প্রায় অর্ধেক। জারবেরা প্রতিটি ১০ থেকে ১৫ টাকা, রজনীগন্ধা ১২ টাকা, গ্লাডিওলাস ১৪ থেকে ১৮ টাকা, জিপসি প্রতিমুঠো ৫০ টাকা ও কামিনী পাতা প্রতি মুঠো ২০ টাকা দরে পাইকারি বেচাবিক্রি হয়েছে। এছাড়া গাঁদা ফুল প্রতি হাজার ২০০ থেকে ৩০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে গোলাপ ফুল। একদিনেই প্রায় ১০ হাজার পিস গোলাপ ফুল হাতবদল হয়েছে এই মোকামে।

এ বিষয়ে ঝিকরগাছার সৈয়দপুর এলাকার ফুলচাষি আব্দুর কাদের বলেন, ‘৩০ বছর ধরে নানা জাতের ফুল চাষ করেছি। সবচেয়ে বেশি চাষ করেছি গোলাপ। সেই প্রথম থেকেই বসন্ত আর ভালোবাসা দিবসে গোলাপের দাম থাকে দ্বিগুণ। তবে গোলাপে কোনোবার ১৫ টাকার বেশি পাইকারি দাম পাইনি। এবার রেকর্ড ২৫ টাকা পর্যন্ত গোলাপ বিক্রি করেছি। আর চায়না গোলাপ ৪০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেছি। এই দামে সব কৃষকই লাভবান হবে।

গদখালি এলাকার ফুলচাষি ও ব্যবসায়ী সেলিম রেজা বলেন, বিশ্ব ভালোবাসা দিবসের আগে গদখালী বাজারে বরাবরই গোলাপের চাহিদা বেশি থাকে। কৃষকদেরও বাড়তি প্রস্তুতি থাকে। চলতি বছরের মধ্যে আজ এই বাজারে সবচেয়ে বেশি গোলাপ ফুল উঠেছে। দামও চড়া।

বন্দর (নারায়ণগঞ্জ) : বন্দরের সাবদী গ্রামের ফুলচাষিরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। তিনটি দিবসে প্রায় ৬ কোটি টাকার ফুল বিক্রির আশা করছেন তারা। এ গ্রামের বাহারি রঙের ফুল সারা দেশে সরবরাহ করা হয়। তবে শৈত্যপ্রবাহের কারণে এ বছর ফুল উৎপাদন কিছুটা কম হওয়ায় হতাশ চাষিরা। তাদের দাবি, ফুল চাষে নানা সমস্যা নিরসনে সরকার উদ্যোগী হলে দেশীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা সম্ভব।

বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নে ব্রহ্মপুত্র নদের তীর ঘেঁষা সাবদী গ্রাম। যতদূর চোখ যায় দেখা মেলে ফুলের সমারোহ। শুধু সাবদীই নয়, এ উপজেলার দীঘলদি, মাধবপাশা ও আইছতলা ও সোনারগাঁয়ের ফরদী, দরিগাঁও, এলাহিনগর, শম্ভুপারা, একরামপুরাসহ দশটি গ্রামে বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষ করা হয় প্রতিবছর। এসব গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার নারী-পুরুষ ফুল চাষ করেই স্বাবলম্বী হয়েছেন।

ফুলচাষি ইকবাল হোসেন জানান, প্লাস্টিক ফুল বা আর্টিফিশিয়াল ফুল দেশে আসা বন্ধ হলে ফুলের চাহিদা আরও অনেক বাড়বে। পাশাপাশি ফুল চাষে কৃষকরা আগ্রহী হবে।

কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) : ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গান্না, কোটচাঁদপুর উপজেলার ইকড়া, কালীগঞ্জ উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা ও মহেশপুর উপজেলার নেপা ও শ্যামকুড় এলাকায় ফুলের চাষ বেশি হয়। জেলায় আবাদ করা মোট ফুলের মধ্যে ৭০ ভাগই গাঁদা। এছাড়া গোলাপ, রজনীগন্ধা, গ্লাডিওলাস, জারবেরা ও চন্দ্রমল্লিকাও চাষ করা হয়। ফুল বিপণনের জন্য জেলার গান্না ও বালিয়াডাঙ্গা এলাকায় কুলিং চেম্বার ও এসেম্বল সেন্টার নির্মাণ করেছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর।

বালিয়াডাঙ্গা এলাকার ফুলচাষি হাফিজুর রহমান বলেন, করোনাকালে ফুল চাষে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছিলাম। আবারও আগের মতো ফুলের চাহিদা বেড়েছে। দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে।

ফুলচাষি মতিয়ার রহমান বলেন, দেড় বিঘা জমিতে গোলাপ ফুলের চাষ করেছি। এবার আগের লোকসান কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে বলে আশা করেন তিনি।

গান্না বাজারের ফুল ব্যবসায়ী মেহেদী হাসান বলেন, প্রচুর ফুলের আমদানি হয় গান্না বাজারে। তারা এই ফুল ট্রাকভর্তি করে ঢাকা, চট্টগ্রাম, পটুয়াখালী, রাজবাড়ী ও পাবনাসহ বিভিন্ন জেলায় পাঠাচ্ছেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS