নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ১৭ই সেপ্টেম্বর মহান শিক্ষা দিবস উপলক্ষে ছাত্র সমাবেশ আজ সকাল ১১.৩০ টায় অপরাজেয় বাংলা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে। উপস্থিত ছিলেন বজলুর রশিদ ফিরোজ সাধারণ সম্পাদক, বাসদ, কেন্দ্রীয় কমিটি। অধ্যাপক নাসিম আখতার হোসাইন সাবেক শিক্ষক, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। জোবাইদা নাসরীন সহযোগী অধ্যাপক, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। শোভন রহমান সাধারণ সম্পাদক, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, কেন্দ্রীয় কমিটি। সভাপতিত্ব করেন – মুক্তা বাড়ে, সভাপতি, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, কেন্দ্রীয় কমিটি।
১৭ই সেপ্টেম্বর মহান শিক্ষা দিবস। এদেশের প্রগতিশীল ছাত্র জনতা সর্বজনীন শিক্ষার লড়াইয়ের এক তেজোদীপ্ত ইতিহাস এবং অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে দিনটিকে পালন করে। আজ থেকে ৬০ বছর আগে ১৯৬২ সালে তৎকালীন পাকস্তানি আইয়ুব খান সরকার একটি শিক্ষানীতি প্রণয়ন করে, যা শরীফ কমিশন নামে পরিচিত। সেই শিক্ষানীতিতে বলা হয়, শিক্ষাকে ব্যয়বহুল করা হবে। চাপিয়ে দেয়া হয়েছিল কূপমণ্ডুক সাম্প্রদায়িক শিক্ষাব্যবস্থা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শাসকদের নিরঙ্কুশ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিল।
এই নীতির বিরুদ্ধেই ৬০ বছর আগে ১৯৬২ সালে ছাত্র সমাজ প্রতিবাদ আন্দোলন গড়ে তোলে। ১৭ সেপ্টেম্বর ছাত্রদের ধর্মঘট চলাকালে শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশ গুলি চালিয়ে হত্যা করে মোস্তফা, বাবুল, ওয়াজিউল্লাহ, সুন্দর আলীসহ অনেককে। তাদের এই আত্মবলিদানের ফলেই সেদিন শরীফ কমিশনের শিক্ষানীতি বাতিল করতে সরকার বাধ্য হয়। এই আন্দোলন ৬২’র মহান শিক্ষা আন্দোলন নামে পরিচিত, যা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম ভিত্তি। সেই আন্দোলন আমাদের শিক্ষা দিয়ে যায় স্বাধীন দেশে এমন শিক্ষা ব্যবস্থা হবে যেখানে ধনী-গরীব বৈষম্য থাকবে না, শিক্ষা হবে বিজ্ঞানভিত্তিক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো হবে পায়ত্তশাসিত এবং ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক হবে গণতান্ত্রিক।
সেই বীরোচিত লড়াইয়ের ৬০ বছর পার করছি আমরা। আজও কি সর্বজনীন শিক্ষার অধিকার পেয়েছি? যে বিজ্ঞানভিত্তিক-সেক্যুলার একই ধারার শিক্ষার স্বপ্ন আমাদের পূর্বসূরীরা দেখেছিল তা কি এখনো অধরা নয়? স্বাধীন দেশের শাসকেরা শিক্ষাকে বাণিজ্যিক পণ্যের ন্যায় বিবেচনা করে একে ক্রমাগত ব্যয়বহুল করে তুলেছে। ‘টাকা যার শিক্ষা তার’ এই নীতিতে পরিচালিত হচ্ছে গোটা শিক্ষাব্যবস্থা। একই পদ্ধতির বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষার বদলে দেওয়া হচ্ছে বহুধা বিভক্ত কুপমণ্ডুক শিক্ষা। ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের সন্ত্রাসী ও দখলদারীত্বমূলক কর্মকাণ্ডে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম হয়েছে।
এমন পরিস্থতিতে শিক্ষা দিবসের লড়াইয়ের চেতনা আমাদের মাঝে প্রতিরোধের স্পর্ধা তৈরি করে। সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট সেই প্রতিরোধের মিছিলে সামিল হওয়ার জন্য ছাত্র সমাজের প্রতি আহ্বান জানায়।
-এম এস আই
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply