তাহলে কি ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে যাচ্ছে? সৌদি আরবে বিস্মরণযোগ্য দেড়টা বছর কাটিয়ে শৈশবের ঠিকানায় ফিরছেন কি নেইমার? শীতকালীন দলবদলের বাজারে নেইমারকে নিয়ে নতুন গুঞ্জন। সৌদি আরবের ক্লাব আল হিলাল ছেড়ে নাকি ব্রাজিলে ফেরার দ্বারপ্রান্তে আছেন ব্রাজিল জাতীয় দলের ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলদাতা।
২০২৩ এর আগস্টে সৌদি প্রো লিগের ইতিহাসের সবচেয়ে দামি ফুটবলার হিসেবে আল হিলালে যোগ দেন নেইমার। কিন্তু সৌদি আরবে সময়টা ভালো কাটেনি এই ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টারের। ইনজুরির কারণে মাঠের বাইরেই বেশিরভাগ সময় কাটাতে হচ্ছে তাকে। দেড় বছরের বেশি সময়ে ক্লাবটির হয়ে মাত্র ৭টি ম্যাচ খেলে একটি গোল করেছেন তিনি।
দীর্ঘ এক বছর এসিএল ইনজুরির কারণে মাঠের বাইরে কাটিয়ে গত বছর অক্টোবরে মাঠে ফিরেছিলেন নেইমার। কিন্তু দুটি ম্যাচে বদলি হিসেবে নেমেই নতুন ইনজুরিতে মাঠের বাইরে চলে যান। সেই ইনজুরি কাটিয়ে এখন মাঠে ফেরার অপেক্ষায় তিনি। তবে একের পর এক ইনজুরিতে আল হিলালে পায়ের নিচে মাটি সরে গেছে এই ব্রাজিলিয়ানের। যে কারণে চলতি মৌসুমের বাকি সময়টার জন্য সৌদি প্রো লিগে নেইমারকে নিবন্ধন করা হবে না বলে জানিয়েছেন দলটির কোচ জর্জে জেসুস। ফলে ক্লাবটির হয়ে শুধু এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স লিগেই খেলতে পারবেন নেইমার।
এই সুযোগটা কাজে লাগিয়েই নেইমারকে দলে ফেরাতে চায় নেইমারের শৈশবের ক্লাব সান্তোস। ইতালিয়ান ক্রীড়া সাংবাদিক এবং দলবদলের নির্ভরযোগ্য সংবাদদাতা ফাব্রিজিও রোমানো জানিয়েছেন, নেইমারকে ধারে দলে ফেরাতে আল হিলালকে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দিয়েছে সান্তোস এবং এমএলএসের একটি ক্লাবকে প্রতিযোগিতায় হারিয়ে এই সুপারস্টারকে দলে টানার দ্বারপ্রান্তে আছে ব্রাজিলিয়ান ক্লাবাটি।
এই চুক্তি সম্পন্ন হলে ছয় মাসের জন্য সান্তোসে যোগ দেবেন নেইমার। আল হিলালের সঙ্গে তার চুক্তির মেয়াদও আছে আর ছয়মাস। অর্থ্যাৎ সৌদি আরবে নেইমারের দুঃস্বপ্নের অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটতে চলেছে।
এই দলবদলে নেইমারকে দলে টানতে আগ্রহী ছিল মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) দল ইন্টার মায়ামি। সে ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রে দেখা মিলত পুরনো সেই মেসি-সুয়ারেজ-নেইমার ত্রয়ীর। কিন্তু এমএলএসের চেয়ে শৈশবের ক্লাবে ফেরাকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন ব্রাজিল জাতীয় দলের সর্বোচ্চ গোলদাতা।
২০২৬ এ যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা-মেক্সিকোতে বসবে ফিফা বিশ্বকাপের আসর। ব্রাজিলের জার্সিতে এই টুর্নামেন্ট খেলেই অবসরে যেতে চান নেইমার। সে জন্য নতুন করে আবার শুরু করতে ইচ্ছুক এই সুপারস্টার। সান্তোসও ঘরের ছেলেকে সেই সুযোগ দিতে আগ্রহী। ক্লাবটি মনে করে, সেখানে যোগ দিলে নেইমার ইনজুরিমুক্ত থেকে সেরা সময়ের চেহারায় ফিরতে পারবেন।
সে ক্ষেত্রে লাভটা হবে ব্রাজিলেরই। সম্প্রতি ব্রাজিলের ১৯৯৪ বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক রোমারিও জানিয়েছেন, ২০২৬ বিশ্বকাপে নেইমারকে ছাড়া অংশ নিলে ব্রাজিলের শিরোপা জয়ের কোনো সম্ভাবনাই থাকবে না। অধিকাংশ ব্রাজিলিয়ানেরও ধারণা একই রকমের। নেইমারের অবর্তমানে ভিনিসিউস, রদ্রিগো, রাফিনিয়ারা তার অভাব পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। নেইমারকে ছাড়া রীতিমতো ভুগছে তারা। চলমান বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে পঞ্চম স্থানে আছে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।
১৭ বছর বয়সে সান্তোসে উত্থান ঘটে নেইমারের। পেলের সাবেক ক্লাবকে দক্ষিণ আমেরিকার সেরা বানিয়ে বিশ্বের নজর কাড়েন। এই ক্লাবে খেলার সময়ই ব্যালন ডি’অরে সেরা দশেও জায়গা করে নিয়েছিলেন। ২০১৩ সালে বার্সেলোনায় যোগ দিতে সান্তোস ছাড়ার আগে ২২৫ ম্যাচে ১৩৬ গোল করেন নেইমার।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply