নিজস্ব প্রতিবেদকঃ সানোফি বাংলাদেশ লি: (বর্তমানে সাইনোভিয়া পিএলসি) এর ৩৮০ জন শ্রমিক কর্মচারী অত্যন্ত দুঃখভারাক্রান্ত হৃদয়ে আপনার স্মরণাপন্ন হয়েছি আপনার নিকট আমাদের আবেদন যে, অন্যায়, দুর্নীতি এবং বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই-সংগ্রাম করে যে সকল বীর শহীদ ছাত্র-জনতা তাদের বুকের তাজা রক্তের বিনিময়ে বাংলার ইতিহাসের নিকৃষ্টতম স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার পতনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে দ্বিতীয় বারের মতো স্বাধীন করেছেন, তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি।।
স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার দোসর এবং তার নানাবিধ অপকর্মের দীর্ঘ দিনের সঙ্গী ও পৃষ্টপোষক জনাব সালমান এফ রহমানের মালিকানাধীন বেক্সিমকো গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান সাইনোভিয়া ফার্মা পিএলসি এর নিগৃহীত এবং সর্বাপেক্ষা বঞ্চিত শ্রমিক-কর্মচারীবৃন্দ আজ অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হৃদয়ে পেটের তাড়নায় এবং পরিবারসহ সদ্য স্বাধীন দেশে প্রাপ্য অধিকারসহ বেঁচে থাকার প্রয়োজনে আপনার সামনে উপস্থিত হয়েছি।
সদ্য বিদায়ী স্বৈরশাসক কিভাবে আইনি কাঠামোর অপপ্রয়োগ করে বাংলাদেশের অন্তবর্তীকালীন সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস স্যারকে একটি ভিত্তিহীন মামলায় শাস্তি দিয়েছিল যেখানে তিনি তার শ্রমিক-কর্মচারীদেরকে বাংলার ইতিহাসে সর্বোচ্চ পরিমাণ সুবিধা এবং মুনাফার অংশ প্রদান করেছিলেন। অন্যদিকে, সালমান এফ রহমান ২০২১ সালে দেশের স্বনামধন্য বহুজাতিক ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি সানোফি বাংলাদেশ লিমিটেড (বর্তমানে সাইনোভিয়া ফার্মা পিএলসি) এর মালিকানা ও কর্তৃত্ব ক্রয় করে স্বৈরাচারী ক্ষমতা ব্যবহারের মাধ্যমে আমাদের ৩৮০ জন শ্রমিক কর্মচারীকে বিগত জানুয়ারি, ২০২২ থেকে অদ্যাবধি পর্যন্ত (দীর্ঘ ৩১ মাস) সম্পূর্ণ বে-আইনিভাবে প্রাপ্য বেতন, ভাতা ও অন্যান্য সুবিধাদি থেকে বঞ্চিত করে রেখেছে।
এ বিষয়ে দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের মহামান্য আপীল বিভাগ অত্র শ্রমিক- কর্মচারীদেরকে চাকুরীচ্যুত না করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করিলেও তা কখনোই সালমান এফ রহমানের জন্য বাধ্যকর হয়নি। তারা উক্ত আদেশের বিরুদ্ধে রিভিউ এর আবেদন করে ব্যর্থ হলেও উক্ত আদেশ প্রতিপালনের কোনরূপ প্রয়োজনীয়তা তারা অনুভব করেনি। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের উক্ত রায় ও আদেশের প্রতি দিনের পর দিন বৃদ্ধাংগুলি দেখিয়ে অত্র শ্রমিক কর্মচারীদের এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দিয়েছে ঐ তথাকথিত সালমান এফ রহমান ও তার দোসররা।
সম্প্রতি মহামান্য হইকোর্ট বিভাগের একটি দ্বৈত বেঞ্চ এ শ্রমিক-কর্মচারীদের দ্বারা গঠিত ট্রেন্ড ইউনিয়নের (সানোফি বাংলাদেশ লিমিটেড ওয়ার্কার্স- এমপ্লয়ীজ এসোসিয়েশন, বি-২২০৭) কার্যক্রমের বৈধতা দিয়েছেন এবং উক্ত ট্রেড ইউনিয়ন কর্তৃক দায়েরকৃত অপর একটি মামলার সিবিএ নির্বাচন করার জন্য শ্রম মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মহোদয়কে নির্দেশনা দিয়েছেন। বিগত প্রায় দেড় বছর এ মামলা দুটির দীর্ঘ শুনানি অন্তে রায ও আদেশ ঘোষণার পর রায়ের কপি হাতে আসার আগেই সদ্য বিতাড়িত স্বৈরশাসকের তোষামোদী এক বিচারপতি মামলার বিষয়বস্তুর উপর স্থিতি অবস্থা বজায় রাখার নির্দেশনা প্রদান করেন।
উক্ত অবস্থাধীনে ৩৮০ জন শ্রমিক- কর্মচারী দীর্ঘ ৩১ মাস যাবৎ সকল প্রকাশ বেতন-ভাতাদি থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে এবং আজ তারা পরিবার-পরিজনসহ অত্যন্ত মানবেতর জীবন যাপন করছে। সাইনোভিয়া ফার্মার ৪৪.৫৬% শেয়ারের মালিক এবং বোর্ড চেয়ারম্যান ও আমাদের শ্রমিক কর্মচারীদের একজন অভিভাবক হিসেবে আপনার কাছে বেক্সিমকোর নিয়ন্ত্রণাধীন সাইনোভিয়া ফার্মার অত্র ৩৮০ জন শ্রমিক কর্মচারীর একটাই দাবি তাদের পক্ষে যেন ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা হয় এবং সালমান এফ রহমান কর্তৃক রাজনৈতিক পেশীশক্তির জোড়ে সানোফিকে দখল এবং কোম্পানির সাবেক এমডি ও বর্তমান চিফ অপারেটিং অফিসার (COO) মঈনউদ্দিন মজুমদারের অনৈতিক হস্তক্ষেপের মাধ্যমে শ্রমিক কর্মচারীদের ঠকানোর বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলকে অনুরোধ জানাচ্ছি।
সানোফি বাংলাদেশ লিমিটেড (বর্তমান সাইনোভিয়া পিএলসি) এর নির্যাতিত শ্রমিক কর্মচারীরা বিগত ১২/০৮/২০২৪ তারিখ সকালে সেগুনবাগিচাস্থিত প্রধান কার্যালয়ের সামনে ন্যায় বিচারের জন্য এক গণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করার মধ্য দিয়ে বিগত তিন বছর যাবত তাদের সাথে ঘটে যাওয়া অন্যায়গুলো তুলে ধরেন এবং তার যথাযথ প্রতিকার প্রত্যাশা করেন, কিন্তু কোম্পানির ম্যানেজমেন্টের তরফ থেকে অদ্যাবধি কোন প্রকার সুবিচার এবং বৈষম্যহীন চাকুরীর নিশ্চয়তা আমরা এখনও পাইনি।
এমতাবস্থায়, আমরা শ্রমিক কর্মচারীরা কোম্পানির একজন অভিভাবক ও বোর্ড চেয়ারম্যান হিসেবে আপনার সাংবিধানিক ক্ষমতা বলে স্বৈরাচারী ক্ষমতার যাতাকলে পিষ্ট নিপীড়িত ও বৈষম্যের শিকার অত্র ৩৮০ জন শ্রমিক-কর্মচারীদের চাকুরী নিশ্চিত করতঃ এবং যাবতীয় বকেয়া বেতন ভাতাদি পরিশোধের বিষয়টি যথাযথ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করবেন। এ বিষয়ে আমরা আপনাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে সর্বদা তৎপর থাকবো।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply