নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ১৭ আগস্ট’২৪ শনিবার সকাল ১১ ঘটিকায় সেগুনবাগিচা তোপখানা রোডস্থ প্রেস কাউন্সিল থেকে সোনার বাংলা পার্টি’র সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ হারুন-অর-রশীদ এর নেতৃত্বে একটি মৌন মিছিল পল্টন মোড় ঘুরে জাতীয় প্রেসক্লাব হয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সেক্রেটারি স্মারকলিপি গ্রহণ করেন।
এই সময় উপস্থিত ছিলেন দলের মহিলা সম্পাদক রেহেনা পারভিন, প্রচার সম্পাদক সোলাইমান চৌধুরী, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মুক্তা, সাংগঠনিক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, সমাজকল্যাণ সম্পাদক খোকন মিয়া, কেন্দ্রীয় সদস্য আমজাদ হোসেন, ঈদুল মোবারক সহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। দাবির প্রতি ঐক্যমত করে মৌন মিছিলে উপস্থিত ছিলেন ফরওয়ার্ড পার্টি’র সদস্য সচিব মোঃ মাহবুবুল আলম চৌধুরী।
প্রদত্ত স্মারকলিপিতে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর সোনার বাংলা পার্টি’র পক্ষ থেকে দাবি জানানো হয়, স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও বাংলাদেশের মানুষ ভোটাধিকার, গণতন্ত্র ও মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। অধিকার বঞ্চিত মানুষের মাঝে ক্ষোভ আস্তে আস্তে বেড়ে বিস্ফোরণ ঘটেছে ৫ আগষ্ট ২০২৪। বিগত ২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হয়ে হয় কিন্তু সাবেক প্রধানমন্ত্রী হাসিনার রাগ, অভিমান ও দাম্ভিকতার কারণে ইহা আদালতে গিয়ে দাঁড়ায়। আর আদালতের রায়ের প্রেক্ষিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হয়ে গত ১৫ জুলাই থেকে ছাত্র সমাজ আন্দোলন শুরু করে, কোটা সংস্কার নিয়ে। তাই জন্ম নেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ছিল একটি শান্তিপূর্ণ আন্দোলন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উস্কানিমূলক বক্তব্যে ছাত্রলীগের গুন্ডা বাহিনী অস্ত্র নিয়ে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন —এর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লো এবং শতশত ছাত্র-ছাত্রী গুরুতর আহত হয়েছিল। তারপর সাবেক প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশ্যে ভাষনে এবং চীন থেকে ফেরত এসে রাগে অভিমানে দাম্ভিকতার সাথে সাংবাদিকদের প্রশ্নের এক পর্যায়ে নতুন প্রজন্মকে রাজাকার বলে সম্বোধন করেন। জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে ছাত্র সমাজের ৯ দফার আন্দোলন ১ দফার আন্দোলনে পরিণত হলো। খুনি হাসিনা সরকার ছাত্রলীগ গুন্ডা বাহিনী দিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের পেটাতে থাকে। এমনকি আহত ছাত্র— ছাত্রীদের হাসপাতালে গিয়ে মারতে থাকে। তারপর থেকেই সাধারণ ছাত্র —ছাত্রীরা পাল্টা আক্রমণ করতে থাকে। এক পর্যায়ে শেখ হাসিনা পুলিশ, বিজিবি ও র্যাব দ্বারা আন্দোলন দমনের নামে গুলি করে শত শত ছাত্র-ছাত্রী মারতে শুরু করে। আগষ্ট মাসকে কেন্দ্র করে খুনি হাসিনা সরকার গণহত্যা শুরু করে। হাসিনা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে দমন করার জন্য আওয়ামী লীগের প্রতিবাদ মিছিলের কারনেও শত শত ছাত্র-জনতা মৃত্যুবরণ করেন। তখনই রোড মার্চ টু ঢাকা আগস্ট মাসের ৫ তারিখ ছাত্র-জনতার আন্দোলনের তোপের মুখে এবং গণভবন ঘেরাও করার শপথ নিলে শেখ হাসিনা দেশ পালাতে বাধ্য হয়। সেনাবাহিনীর প্রধান শেখ হাসিনাকে পালাতে সাহায্য করে।
সোনার বাংলা পার্টি বাংলাদেশের সর্বজনীন কল্যানে কাজ করে যাচ্ছে। সোনার বাংলা পার্টি’র প্রধান উপদেষ্টা সর্বজনাব অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক রচিত ২৮ দফা আমাদের মুক্তি ও উন্নতির কর্মসূচি সোনার বাংলা পার্টি ‘ রাজনৈতিক ইস্তেহার। আমাদের পথ — শান্তির পথ, আমাদের পথ ভাসানী’র পথ।আমাদের পথ উন্নতির পথ।আমাদের পথ, জাতীয়তাবাদের পথ।
সোনার বাংলা পার্টি’র দাবি সমূহ:
১) বাংলাদেশকে রাষ্ট্রভাষা বাংলার রাষ্ট্ররূপে গড়ে তুলতে হবে।
২) ২১ ফেব্রুয়ারীকে রাষ্ট্রভাষা দিবস ঘোষণা করার জন্য কর্মসূচি ঘোষণা করতে হবে।
৩) সোনার বাংলা পার্টি নিবন্ধনের কালাকানুন বাতিলের অর্থাৎ গণপ্রতিনিধিত্বআদেশ, ১৯৭২ আইনের ৯০বি ধারা বাতিল আন্দোলন করে যাচ্ছে এবং বাতিল করতে হবে।
৪) রাজনৈতিক দলের মার্কার বানিজ্যের বিপরীতে ‘রাজনৈতিক দল/ জোটভিত্তিক প্রাপ্ত ভোটের আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের সরকার গঠনের লক্ষ্যে কর্মসূচি ঘোষণা করছে পার্টি ‘ র জন্মলগ্ন থেকেই।
৫) সংবিধানকে জনগণের সংবিধান করার জন্য সংবিধান সংস্কার করে রাষ্ট্র মেরামতের জন্য ‘ সংবিধান সভার’ নির্বাচন করতে কর্মসূচি দিয়ে যাচ্ছে অর্থাৎ গণপরিষদ নির্বাচন করতে হবে
৬) দুর্নীতির বিরুদ্ধে এখনই সময় বর্তমান সরকারের নিকট। আইন করে দুর্নীতির মাধ্যমে পাচারকৃত জনগণের টাকা ফেরত আনার জন্য নতুন আইন করার জন্য আন্দোলন করে যাচ্ছে।
৭) জনগণের জানমালের রক্ষায় আমাদের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী ব্যর্থ হয়েছে কারণ ৫ আগষ্ট রাষ্ট্রের সম্পদ ধ্বংসকারী ও লুটপাটকারদের বিষয়ে সেনাবাহিনী কোনো প্রকার পদক্ষেপ গ্রহণ করে নাই। তাই আমাদেরকে জনগণের জানমালের রক্ষা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সেনাবাহিনী তৈরি করতে হবে।
৮) বাংলাদেশের দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত লাগামহীন বৃদ্ধির বিরুদ্ধে সোনার বাংলা পার্টি কর্মসূচি ঘোষণা করছে এবং সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে এখনই পদক্ষেপ গ্রহণ করায় জন্য প্রধান উপদেষ্টা বরাবর দাবি জানানো হয়।
৯) বাংলাদেশের আইন বিভাগ থেকে শুরু করে প্রতিটি রাষ্ট্রীয় বিভাগ সংস্কার করতে হবে।
১০) অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিকট আমাদের দাবি, সোনার বাংলা পার্টি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় সরকারের অধিনে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরির কাজ করে যাচ্ছে। তাই এই বিষয়ে বিবেচনা করার জন্য দাবি রাখছে।
সোনার বাংলা পার্টি স্মারকলিপিতে উল্লেখ করেন, বিগত হাসিনা সরকারের ১৫ বছরের সকল হত্যাকান্ডের বিচার করতে হবে। সকল অবৈধ সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে রাষ্ট্রের কোষাগারে রাখতে হবে শুধু তাই নয় খুনি হাসিনা সরকারের মন্ত্রী পরিষদ, সংসদ সদস্য ও হাসিনার দলের লুটপাটকারীদের বিচার ও সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে হবে।
সোনার বাংলা পার্টি আরও দাবি করছে,বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত শহীদদের পরিবারের জন্য সর্বনিম্ন ৩ কোটি টাকা প্রদান করতে হবে এবং আহত ছাত্র-জনতার চিকিৎসার সম্পূর্ণ ব্যয়ভার বহন করতে হবে।
সোনার বাংলা পার্টি আহ্বান আগামীতে যেন কোনো অপশক্তির জন্ম না হতে পারে, সেটা ব্যবস্থা করতে হবে এবং দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দলের নেতা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিগন দ্বারা রাষ্ট্র মেরামতের কাজসহ রাষ্ট্র পরিচালনার ব্যবস্থা করতে হবে।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply