শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫, ০৪:০৬ অপরাহ্ন

করোনার টিকাকরণ ও অর্থনৈতিক বৈষম্য বৃদ্ধির মধ্যে সম্পর্ক রয়েছে: জাতিসংঘ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ২৯ মার্চ, ২০২২
Vaccine

জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচীর (ইউএনডিপি) তথ্য অনুসারে, উন্নয়নশীল দেশগুলোতে জনসংখ্যার একটা ক্ষুদ্র অংশ করোনা টিকাকরণের আওতায় এসেছে। যার ফলে এই দেশগুলোর ঘুরে দাঁড়াতে অধিক সময় লাগায় এবং সরকারি সহায়তার অভাবে; ধনী ও দরিদ্র দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক ব্যবধান করোনা-পূর্ববর্তী সময়ের চেয়ে বেড়েছে।

২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০২২ সালের মাঝামাঝি বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৭০ শতাংশকে টিকার আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছিল। ছয়মাস পার হয়ে গেলেও এখনও বিশ্ব সেই লক্ষ্যে পৌঁছানোর ধারেকাছেও পৌঁছাতে পারেনি।

সেসময়ে নিম্ন-আয়ের দেশগুলোতে মাত্র তিন শতাংশের কাছাকাছি মানুষকে এক ডোজ দিয়ে টিকা দেয়া হয়েছিল। ধনী দেশগুলোর তুলনায় যা ৬০ দশমিক ১৮ শতাংশ কম।

ভ্যাকসিন বিতরণের অসমতা এক্ষেত্রে লক্ষ্যণীয়। বিশ্বব্যাপী দেয়া ১০ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডোজ করোনা টিকার মধ্যে মাত্র এক শতাংশ নিম্ন-আয়ের দেশগুলোতে দেয়া হয়েছে।এর মানে সারা বিশ্বের দুই দশমিক ৮ বিলিয়ন মানুষ এখনও তাদের প্রথম ডোজ নেয়ার অপেক্ষা করছে।

ভ্যাকসিনেশনের এই বৈষম্য সকলের নিরাপত্তাকেই বিপন্ন করে। এই পরিস্থিতি কেবল মহামারিকে দীর্ঘায়িত করার ঝুঁকিই রাখে না, সমগ্র বিশ্বের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার, বিশ্বব্যাপী শ্রমবাজার, সরকারী ঋণ পরিশোধ এবং অন্যান্য খাতের বিনিয়োগও ব্যাহত করে।

করোনাভাইরাস মহামারি শুরু হওয়ার দুই বছর পর দরিদ্র দেশগুলোর অর্থনৈতিকভাবে পুনরুদ্ধার করা আগের চেয়ে কঠিনতর হয়ে উঠছে। এসব দেশের শ্রমবাজার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, জনসাধারণের ওপর ঋণের হার বেড়েছে এবং এসব দেশের সরকারের কাছে জনকল্যাণমূলক খাতগুলোতে বিনিয়োগ করার মতো পর্যাপ্ত সঞ্চয় নেই।

ইউএনডিপির একটি নতুন বিশ্লেষণে জানা যায়, বুরুন্ডি, গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গো ও চাদসহ সাব-সাহারান আফ্রিকার দরিদ্র দেশগুলোর জনসংখ্যার এক শতাংশেরও কম টিকার পূর্ণডোজ পেয়েছেন। আফ্রিকার বাইরে, হাইতি এবং ইয়েমেনেও এখনও দুই শতাংশ মানুষ পূর্ণ ডোজ টিকা পেয়েছে।

চলতি মাসে প্রকাশিত এই সমীক্ষাতে জানা যায়, নিম্ন-আয়ের দেশগুলো যদি গত বছরের সেপ্টেম্বরে উচ্চ-আয়ের দেশগুলোর মতো একই হারে টিকা দিতে পারতো, তবে ২০২১ সালে তাদের জিডিপি ১৬ দশমিক ২৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বৃদ্ধি পেত।

ভ্যাকসিন বৈষম্যের কারণে মহামারি চলাকালীন সর্বাধিক সম্ভাব্য আয় হারানো দেশগুলো হলো- ইথিওপিয়া, কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র ও উগান্ডা।

এই দেশগুলো হারানো আয় দিয়ে নিজেদের উন্নয়নে ব্যবহার করতে পারতো। উদাহরণস্বরূপ দক্ষিণ সুদানে করোনার টিকাদানের সঙ্গে সম্পর্কিত খরচ দিয়ে দেশটির সামাজিক সহায়তা প্রোগ্রাম এবং শিক্ষা ব্যয় মেটাতে পারতো।

দীর্ঘস্থায়ী লকডাউনের ফলে বিশ্বব্যাপী শ্রমিকেরা ক্ষতিগ্রস্থ হলেও, উন্নয়নশীল দেশগুলোর শ্রমিকেরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কারণ ধনী দেশগুলো সরকারি-বেসরকারি উভয় কর্মীদের অর্থনৈতিক সহায়তা দিয়ে মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করেছে। কিন্তু উন্নয়নশীল ও নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে সরকারি সহায়তা অনেক হ্রাস পেয়েছে। ফলে এক্ষেত্রেও অর্থনৈতিক বৈষম্য বেড়েছে।

এন এন

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS