রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:২৩ অপরাহ্ন

পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও চূড়ান্ত ফলাফলে বাদ পড়া প্রতিবন্ধী চাকরি প্রার্থীগণদের সংবাদ সম্মেলন

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ১৭ জানুয়ারী, ২০২৩
  • ১২৯ Time View

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২০২০ সালের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও চূড়ান্ত ফলাফলে বাদ পড়া প্রতিবন্ধী চাকরিপ্রার্থীগণ আজ জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছে। সেখানে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা অবিলম্বে সরকারি প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগের চূড়ান্ত তালিকায় বাদ পড়া প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের চলমান নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যুক্ত করার জন্য জোর দাবি জানায়। তারা আরো জানায় যে এভাবে প্রতিবন্ধিতার সাথে সংগ্রাম করে দেশের বিভিন্ন স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হতে উচ্চ শিক্ষা অর্জন করেও বিশেষ কোটা সুবিধা না পেয়ে ক্রমাগতভাবে প্রতিবন্ধী মানুষরা যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও চাকরি বঞ্চিত হতে থাকলে আগামী প্রজন্ম হতাশাগ্রস্থ হয়ে শিক্ষা বিমুখ হবে। ফলে দেশে প্রতিবন্ধী ভিক্ষুকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এতে সর্বকালের শ্রেষ্ট বাঙালি বঙ্গবন্ধুর কল্পিত মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল সোনার বাংলা গড়ার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হবে।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ চূড়ান্ত পর্বে বাদ পড়া একজন চাকরির প্রার্থী দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তি মোঃ সাজ্জাদ হোসাইন সাজু বলেন, সংবিধানে উল্লেখিত অনগ্রসর জনগোষ্ঠী বলতে কাদের বুঝানো হয়েছে?

এবং প্রতিবন্ধি মানুষরা অনগ্রসর জনগোষ্ঠিতে পড়ে কিনা?

আমরা জানতে চাই রাষ্ট্রের কাছে…

বিশেষ ব্যবস্থা বা কোটা পদ্ধতি পাওয়ার যোগ্যতা আসলে কাদের?

যদি প্রতিবন্ধি ব্যাক্তিরা প্রকৃত কোটার দাবীদ্বার হয়ে থাকে, তাহলে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক পদে ২০২২ সালে নিয়োগে অন্যন্য কোটা থাকা সত্ত্বেও, প্রতিবন্ধী কোটা কেন সংরক্ষন করা হলোনা?

এবং পৃথিবীর কোন সভ্য রাষ্ট্রে প্রতিবন্ধী কোটা সংরক্ষণ করা হয় না??

চাকরি বঞ্চিত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী নারী পারুল বেগম বলেন, আমি একজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধি নারী হয়েও, এই নিয়োগের চূড়ান্ত ফলাফলে বঞ্চিত হয়েছি।। যেখানে নারী কোটা ৬০% ছিল।
আমি প্রতিবন্ধী কোটাও পেলাম না, নারী কোটাও পেলাম না।।

আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দৃষ্টি আকর্ষন করার চেষ্টা করেছি সংবাদ সম্মেলন, মানবন্ধন, জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে প্রকৃতি সার্টিফিকেট পুড়ানো, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে স্মারক লিপি প্রদান এমন কি প্রধানমন্ত্রী এপিএস টু এর সাথে সাক্ষাত করেছি। কিন্তু সকল ক্ষেত্রে আমরা ব্যর্থ হয়েছি।

তাই আবরাও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দৃষ্টি আকর্ষন করেছি, নির্বাহী আদেশাবলী চলমান নিয়োগে অনুগ্রহপূর্বক আমাদের নিয়োগ প্রদান করলে প্রতিবন্ধী সমাজ চিরকৃতজ্ঞ থাকবে। চাকরি বঞ্চিত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী পার্থ প্রতিম মিস্ত্রি বলেন, আমরা শিক্ষক পদে সুনামের সাথে কাজ করতে পারি ইতোমধ্যেই আমাদের ভাই বোনেরা তা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে সুতরাং রাষ্ট্র এবং সরকার যদি আমাদের মতো অসহায় প্রতিবন্ধী মানুষদের প্রতি সহানুভূতিশীল নাহয় তাহলে আমরা আর কিবা করতে পারি?

আমাদের দ্বারা তো রাস্তায় কঠোর আন্দোলন করে কর্তৃপক্ষকে বাধ্য করা সম্ভব নয় কারন আমরা দুর্বল জনগোষ্ঠী আইন আর কর্তৃপক্ষের সহমর্মিতা আমাদের একমাত্র আশ্রয়স্থল। আরেকজন চাকরি প্রত্যাশী শারীরিক প্রতিবন্ধী মোঃ রেজওয়ান হোসেন বলেন, জাতিসংঘের প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার সনদে বাংলাদেশ অনুস্বাক্ষর করেছে এসডিজি বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করেছে এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০১৩ এই সরকার প্রণয়ন করেছে তবে কেন আমাদের আজ এই অবস্থান প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য সকল চাকরিতে কোটা বহালের দাবিতে দীর্ঘদিন যাবৎ কাজ করে আসা গ্রেজুইয়েট পরিষদের আহবায়ক জনাব আলী হোসাইন বলেন, আমরা দীর্ঘ ৪ বছর যাবৎ রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারকদের নিকট চাকরি প্রত্যাশী।

প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিদারুণ মানবেতর কষ্টের কথা উল্লেখ করে ২০১৮ সালে সংসদে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বিলুপ্ত করার পর প্রতিবন্ধী এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য যে অন্য ব্যবস্থার ঘোষণা আমাদের সর্বোচ্চ অভিভাবক এবং শেষ আশ্রয়স্থল মাননীয় প্রধান মন্ত্রী দিয়েছিলেন তা বাস্তবায়ন করা, সেইসাথে বেকার প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে আসছি কিন্তু তা সত্ত্বেও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এই ঐতিহাসিক বৃহৎ নিয়োগে স্বল্প সংখ্যক প্রতিবন্ধী মানুষ চাকরি না পাওয়ায় প্রতিবন্ধী সমাজ অত্যন্ত ব্যথিত কারণ সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৮ এর দফা (৪) এ বলা হয়েছে। নারী বা শিশুদের অনুকূলে কিংবা নাগরিকদের যেকোনো অনগ্রসর অংশের অগ্রগতির জন্য বিশেষ বিধান প্রণয়ন হতে এ অনুচ্ছেদের কোনো কিছুই রাষ্ট্রকে নিবৃত্ত করবে না।

অপরদিকে অনুচ্ছেদ ২৯ এর দফা (৩) (ক) এ বলা হয়েছে এ অনুচ্ছেদের কোনো কিছুই নাগরিকদের যেকোনো অনগ্রসর অংশ যাতে প্রজাতন্ত্রের কর্মে উপযুক্ত প্রতিনিধিত্ব লাভ করতে পারে, সে উদ্দেশ্যে তাদের অনুকূলে বিশেষ বিধান প্রণয়ন করা হতে রাষ্ট্রকে নিবৃত্ত করবেন। প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় চূড়ান্ত বাছাই পর্বে চাকরি প্রত্যাশী প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের পক্ষে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2024 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS