শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ০৪:৩৩ পূর্বাহ্ন

বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কে থ্রি হইলার চলাচল বন্ধের দাবি চালকদের 

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : সোমবার, ২৭ জুন, ২০২২

এস এল টি তুহিন, বরিশাল : উদ্বোধনের পর পদ্মাসেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে। তবে যাত্রা আরও নিরাপদ করতে এক্সপ্রেসওয়ের পর বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কে থ্রি হইলারসহ কম গতির যান চলাচল বন্ধের দাবি জানিয়েছেন পরিবহন চালক-শ্রমিকরা। ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে বরিশাল এসে পরিবহন চালক মোখলেসুর রহমান বলেন,পদ্মাসেতুর কারণে ঢাকা-বরিশাল রুটের ফেরিযুগের অবসান ঘটলো। এখন থেকে আর কাউকে ফেরিঘাটের অসহনীয় ভোগান্তি পোহাতে হবে না। তবে যাত্রা নিরাপদ করতে এখন প্রয়োজন ভাঙ্গা থেকে বরিশাল পর্যন্ত মহাসড়ক থেকে থ্রে-হুইলার যেমন, অটোরিক্সা, অটোভ্যান, সিএনজি, মাহিন্দ্রা, নছিমন, করিমন, টমটম এগুলো চলাচল বন্ধ করা। আর এগুলো চলাবল বন্ধ হয়ে আমরা একটু নিশ্চিন্তে ও নির্বিঘ্নে গাড়ি চালাতে পারবো। তিনি বলেন, মহাসড়কে যত দুর্ঘটনা ঘটে তার বেশিরভাগের পেছনেই ট্রাক ও বাসের থেকে স্বল্প গতি এবং থ্রি হুইলারের কারণে ঘটে। আর থ্রি হুইলারের চালকরা তেমন একটা দক্ষও নন। তবে থ্রি হুইলারের সঙ্গে মহাসড়কে সঙ্গে হাট-বাজার দোকান-পাটগুলো অপসারণ প্রয়োজন বলে উজ্জ্বল বলেন, পদ্মাসেতুর উদ্বোধনের প্রথম দিনেই ঢাকা থেকে বরিশাল হয়ে কুয়াকাটা পর্যন্ত মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। আর ভাঙ্গার পর থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত মহাসড়ক জুড়ে থ্রি হুইলার যানবাহন অবাধে চলাচল করছে, ফলে নির্বিঘ্নে গাড়ি চালানো সম্ভব হয় না। এছাড়া সড়কের পাশে থাকা হাট-বাজার দোকানপাট আরও চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার অনেক জায়গায় দেখা যায় মহাসড়কের পাশ ধরেই গাছ কেটে ফেলে রেখেছেন স’মিলের মালিকরা। এক কথায় ভাঙ্গা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত মহাসড়কটি অনেকটা বিপদজনক। বাস শ্রমিক সোহেল বলেন, শুধু মহাসড়কের পাশে বাজার আর থ্রি-হুইলারের কারণে বরিশাল শহরের কাশিপুর গরিয়ারপাড়, রহমতপুর উজিরপুরের ইচলাদি, জয়শ্রী, গৌরনদীর বাটাজোর, মাহিলারা, গৌরনদী বাস টার্মিনাল, টরকী, বার্থী, মাদারীপুরের কালকিনি (ভুরঘাটা), মস্তফাপুর, রাজৈর, টেকেরহাট, ভাঙ্গা বাজার এলাকা পার হতে ভোগান্তির শেষ থাকে না। আবার বরিশাল থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত যেতে নথুল্লাবাদ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। বরিশাল থেকে গলাচিপা পর্যন্ত অন্তরা পরিবহনের চালক রিজভি বলেন,মহাসড়কে যারা থ্রি হুইলার চালান তাদের যে আচরণটি সব থেকে ভয়ের, সেটি হলো-আকস্মিক যানবাহন ঘুরিয়ে ফেলা, সড়কের মাঝে চলে আসা নয়তো সাইড লেন থেকে আকস্মিক মহাসড়কে উঠে আসা। আর এ সময় পরিবহন চালকরা আকস্মিক ব্রেক দিলে গতিতে থাকা গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। একইভাবে বাজার এলাকায় মানুষজন আপনমনে রাস্তা পার হন, এখনকার বাসগুলোতে শব্দ না থাকায় কেউ যদি রাস্তা পার হতে ডানে-বামে না তাকান তাহলেই বিপদ। আর বাজার এলাকায় যে যার মতো রাস্তা পার হওয়ার কারণে দুর্ঘটনাও ঘটছে প্রায়ই। বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপের দপ্তর সম্পাদক অমল চন্দ্র দাস বলেন, নছিমন, করিমনসজ মহাসড়কে আতঙ্কের নামই হচ্ছে থ্রি-হুইলারগুলো। এগুলো চলাচল বন্ধ না হলে দুর্ঘটনা বাড়বে। আর এখন তো বরিশাল-ঢাকা রুটে উচ্চ গতি সম্পন্ন বিলাসবহুল গাড়ির সংখ্যা বেড়েছে, এর সংখ্যা আরও বাড়বে। তাই এখন সময় এগুলো মহাসড়ক দিয়ে উঠিয়ে দেওয়ার। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার আগে ইচলাদি টোলঘর এলাকায় থ্রি-হুইলারগুলো মহাসড়কে না ওঠার জন্য মাইকিং করতে দেখা গেছে। তবে পদ্মা সেতু চালুর পর কার্যকর কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি। এদিকে মহাসড়কে যানবাহন চালনার ক্ষেত্রে দক্ষ চালক নিয়োগের কথা বলছেন যাত্রীরা। এ বিষয়ে বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক কিশোর কুমার দে বলেন, পদ্মা সেতু চালুর আগেই দূরপাল্লার রুটের বাস মালিকদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি, যেন এই রুটে দক্ষ ও লাইসেন্সধারী চালক নিয়োগ করা হয়। কেন না নতুন বাস নিয়ে যেসব চালকরা বরিশালে বা বরিশাল থেকে যাত্রী পরিবহন করবেন তারা সকলে এই রুটেও নতুন। সেতু চালুর পর সচেতনতা আর নির্ধারিত সময়ের বেশি যাতে বাস ড্রাইভিং না করে সেই বিষয়ে কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS