মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৩২ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ

প্রধানমন্ত্রীকে অভিবাদন জানাতে স্বাধীনতার প্রতীক হাতে পদ্মা পাড়ে যাবে লাখো মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ২১ জুন, ২০২২
  • ১২৯ Time View

বরিশাল এস এল টি তুহিন : দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলবাসীর স্বপ্নের পদ্মা সেতু আগামী ২৫ জুন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সেতুতে বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এ কারণেই পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চমক দেখাতে চানয় বরিশাল আওয়ামী লীগ। সেতুর উদ্বোধন পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় লক্ষাধিক মানুষের অংশগ্রহণের মধ্যদিয়ে এই চমক সৃষ্টি করতে ইতোমধ্যে সবধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। সমাবেশস্থলে পৌঁছতে নেতাকর্মীদের দেয়া হয়েছে রোড ম্যাপ। নৌপথে বিলাশবহুল লঞ্চযোগে ২৫ জুন সকালে সর্বপ্রথম পদ্মা সেতুর নিচ দিয়ে সমাবেশস্থলে যাবে দক্ষিণাঞ্চলের লাখো মানুষ। সু-সজ্জিত লঞ্চে স্বাধীনতার প্রতীক লাল সবুজের পতাকা হাতে নিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের আওয়ামী লীগের একমাত্র অভিভাবক মন্ত্রী আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ এমপি’র নেতৃত্বে সমাবেশে যোগদান করবেন লক্ষাধিক নেতাকর্মীরা।অপরদিকে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধনকে সামনে রেখে নববধূর সাজে সজ্জিত করা হয়েছে জেলার বিভিন্ন উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। সর্বত্র শোভা পাচ্ছে রং বেরঙের বাতি ও পদ্মা সেতুর ছবিসহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ’র ছবি সংবলিত নানাধরনের ব্যানার, ফেস্টুন ও প্লাকার্ড। সরেজমিনে জেলার একমাত্র ডিজিটাল মাহিলাড়া ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন ঘুরে দেখা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত ইউপি চেয়ারম্যান সৈকত গুহ পিকলুর উদ্যোগে নজরকারা সাজসজ্জা। বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বলেন, পদ্মা সেতুর সুফল সারাদেশের মানুষই পাবে। তবে সবচেয়ে বেশি উপকারভোগী হবো আমরা দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। এ কারণে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন এবং প্রধানমন্ত্রীর জনসভা সফল করতে আমাদের সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখতে হবে। মেয়র বলেন, বরিশাল বিভাগ থেকে উদ্বোধনী জনসভায় এক লাখ মানুষের অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। ইতোমধ্যে আমাদের রাজনৈতিক অভিভাবক আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ এমপি উদ্বোধণী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের রোডম্যাপ দিয়েছেন। আমরা তার নেতৃত্বেই পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী জনসভায় অংশগ্রহণ করে ইতিহাসের স্বাক্ষী হবো।তিনি আরো বলেন, সড়ক পথের চেয়ে নৌপথেই আমরা সুন্দরভাবে জনসভাস্থলে যোগদান করতে পারবো। লঞ্চ থেকে নেমে আমরা সরাসরি জনসভাস্থলে যাবো। আর ২৫ জুন আমরাই প্রথম পদ্মা সেতুর নিচ দিয়ে লঞ্চ নিয়ে অতিক্রম করে জনসভায় যোগদিয়ে ইতিহাসের অংশ হবো। জনসভায় বরিশাল বিভাগকে জাননা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী দৃষ্টি কাড়তে বরিশাল থেকে জনসভায় যোগদান করা লক্ষাধিক নেতাকর্মীর প্রত্যেকের হাতে থাকবে লাল-সবুজের পতাকা। স্বাধীনতার ৫০ বছর পর আমাদের জন্য আরেকটি বিজয় অর্জনে স্বাধীনতার প্রতীক পতাকা নাড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীকে দক্ষিণাঞ্চলবাসীর পক্ষ থেকে অভিবাদন জানানো হবে। সিটি মেয়র বলেন, আগামী ২৪ জুন রাত ১০টায় আমরা বরিশাল নদী বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করবো। বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা এবং পিরোজপুর অঞ্চল থেকে যে লঞ্চগুলো জনসভার উদ্দেশে যাবে সেগুলো সব চাঁদপুরে গিয়ে একত্রিত হবো। পরে সেখান থেকে লঞ্চগুলো একসাথে জনসভাস্থলের উদ্দেশে যাত্রা করবো। তবে লঞ্চগুলো পাশাপাশি নয়, একটার পেছনে একটা সাড়িবদ্ধভাবে যাবে। প্রতিটি লঞ্চই সাজসজ্জা করা হবে। ২৫ জুন সকাল আটটার মধ্যে আমরা পদ্মা সেতু অতিক্রম করে নির্দিষ্ট জায়গায় গিয়ে পৌঁছাবো। দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান জানিয়ে মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ বলেন, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য তরুণদের প্রাধান্য দিতে হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে যাতে আমাদের মধ্যে এমন কোন লোক ঢুকে না পরে, যাদের জন্য আমাদের প্রশ্নবিদ্ধ হতে হয়।

বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট তালুকদার মোঃ ইউনুস বলেন, কাঁঠালবাড়ি এলাকায় পদ্মা সেতুর উদ্বোধণ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা লঞ্চগুলো বার্দিংয়ের জন্য বিআইডব্লিউটিএ’র পক্ষ থেকে পল্টুনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে গিয়ে আমাদের লঞ্চগুলো বার্দিং করা হবে। পরবর্তীতে সেখান থেকেই নেতাকর্মীরা সহজে জনসভাস্থলে যোগদান করবেন। আবার জনসভা শেষে সেখান থেকেই লঞ্চযোগে নেতাকর্মীদের নিয়ে বরিশালের উদ্দেশে যাত্রা করা হবে।মহারাজের নেতৃত্বে যাবে ছয়টি লঞ্চ পদ্মা সেতু উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পিরোজপুর জেলা পরিষদের প্রশাসক ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ মহিউদ্দিন মহারাজের নেতৃত্বে ১৫ হাজার নেতাকর্মীরা ছয়টি বিলাস বহুল লঞ্চযোগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভায় অংশগ্রহণ করবেন। জনসভায় জেলার সকল জনপ্রতিনিধি, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীসহ বীর মুক্তিযোদ্ধারা অংশগ্রহণ করবেন। ইতোমধ্যে মহারাজের পক্ষ থেকে কীর্তনখোলা-১০, যুবরাজ-৭, সুরভী-৯, পারাবত-৮, মর্নিংসান-৯ ও ঈগল-৮ লঞ্চ সমাবেশে অংশগ্রহণের জন্য রির্জাব করা হয়েছে। এরমধ্যে ভান্ডারিয়া উপজেলার নেতাকর্মীরা চরখালী লঞ্চঘাট থেকে কীর্তনখোলা-১০ ও যুবরাজ-৭ লঞ্চে উঠবেন। মঠবাড়িয়া উপজেলার নেতাকর্মীরা বড়মাছুয়া স্টীমারঘাট থেকে সুরভী-৯ লঞ্চে উঠবেন। ইন্দুরকানী উপজেলার নেতাকর্মীরা ইন্দুরকানী লঞ্চঘাট থেকে পারাবত-৮ লঞ্চে, কাউখালী উপজেলার নেতাকর্মীরা কাউখালী লঞ্চঘাট থেকে মর্নিংসান-৯ লঞ্চে এবং পিরোজপুর সদর উপজেলা, নাজিরপুর ও নেছারাবাদ উপজেলার নেতাককর্মীরা হুলারহাট লঞ্চঘাট থেকে ঈগল-৮ লঞ্চে উঠবেন। সকল লঞ্চ কাউখালী আমরাজুরী ফেরিঘাটে একত্রিত হবে। সেখানে মহিউদ্দিন মহারাজের নেতৃত্বে আতশবাজি ফুটানোসহ বিভিন্ন ধরনের আনন্দ-উৎসব সম্পন্ন করে একযোগে কাঠালবাড়ী ঘাটের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করবে। স্মরণ রাখার মতো উৎসব করবে প্রশাসন ॥ আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতুর উদ্বোধণ দিনটিকে স্মরনীয় করে রাখতে নানান কর্মসূচী হাতে নিয়েছে বরিশাল জেলা প্রশাসন। ওইদিনের অনুষ্ঠান সরাসরি টিভি স্ক্রিনে দেখানো হবে বরিশালের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ও স্কুল-কলেজের আঙ্গিনায়। সকাল নয়টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি থেকে বিশাল র‌্যালী বের করা হবে। থাকবে ২৫ ফুটের ডামি পদ্মা সেতু। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে থাকবে তিনদিনের নানান সাংস্কৃতিক আয়োজন। এছাড়াও স্থানীয় পত্রিকায় বিশেষ ক্রোড়পত্র দেবে জেলা প্রশাসক। মঙ্গলবার (২১ জুন) সকালে তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বিভাগীয় কমিশনার আমিন উল আহসান ও জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার। ২৫ জুন ট্রাকে ট্রাকে বাউল সংগীত চলমান থাকবে। সন্ধ্যায় লেজার শো ও আতশবাজিসহ থাকবে সাংস্কৃতিক আয়োজন। যা ২৭ জুন পর্যন্ত চলমান থাকবে। জেলা প্রশাসক বলেন, আবহাওয়া ভালো থাকলে পথনাটক, পথসংগীতসহ ব্যতিক্রম সব আয়োজন নিয়ে সাজানো হবে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী উৎসব। বিভাগীয় কমিশনার আমিন উল আহসান সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আগামী ২৫ জুন নগরীর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে উপস্থিত থাকার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের রাজধানী বরিশাল, তাই বরিশালের আয়োজন ব্যতিক্রম ও স্মরণ রাখার মতো হতে হবে। এটাও ইতিহাসের অংশ হবে বলে আমার বিশ্বাস। সতর্ক অবস্থানে বরিশাল পুলিশ স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে ঘিরে সারাদেশের মতো বরিশালেও কঠোর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তর থেকে নির্দেশনা পাবার পর থেকেই সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থান নিয়েছে বরিশাল মেট্রোপলিটন ও জেলা পুলিশ। নগরীসহ জেলার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পুলিশের চেক পোস্ট বসানো হয়েছে। বিভিন্ন যানবাহনে তল্লাশীর পাশাপাশি সন্দেহজনক আরোহীদের চেক করা হচ্ছে। এছাড়া সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করছেন পুলিশ সদস্যরা। কোনো স্বার্থান্বেষী মহল যাতে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনকে ঘিরে নাশকতা করতে না পারে সেজন্য গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। পাশাপাশি সাইবার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। যাতে করে কেউ অনলাইনে কোনো ধরনের উস্কানিমূলক তথ্য প্রচার করতে না পারে। বরিশালের বিভিন্ন এলাকায় আবাসিক হোটেল ও মেসগুলোতে খোঁজখবর নিচ্ছেন পুলিশ সদস্যরা।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2024 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS