সীতাকুণ্ডের বেসরকারি বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণ ও আগুনে ফায়ার সার্ভিসের ১২ সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন। এ ছাড়াও, গুরুতর অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও অন্তত ১৫ জন।
রোববার (৫ জুন) রাতে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ডিপোতে বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৯। এরমধ্যে ফায়ার সার্ভিসের ১২ কর্মী রয়েছেন।
একই তথ্য নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম বিভাগীয় ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক আনিসুর রহমান বলেন, ফায়ার সার্ভিসের ১২ জন কর্মী আগুন নেভাতে গিয়ে মারা গেছেন। এরমধ্যে এখন পর্যন্ত ৯ জনের মরদেহ শনাক্ত সম্ভব হয়েছে। এছাড়া আমাদের ১৫ কর্মী সিএমএইচে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই আলাউদ্দিন তালুকদার বলেন, এখন পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের নিপন চাকমা, মিঠু দেওয়ান, এমরান হোসেন সুজন, রানা মিয়া, মনিরুজ্জামান, আলাউদ্দিন, শাকিল তরফদার, রমজানুল ইসলাম, সালাহ উদ্দীন কাদের চৌধুরী, মো. রবিউল ইসলাম, ফরিদুজ্জামান ও শফিউল আলমের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এর আগে, সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল পরিদর্শনে এসে ৯ জন ফায়ার সার্ভিস কর্মী মারা গেছেন বলে জানিয়েছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান।
এদিকে রাত ৯টার দিকে কন্ট্রোলরুমের বরাত দিয়ে সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৪৯। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল, পার্কভিউ হাসপাতাল ও অন্যান্য হাসপাতালে আহত অবস্থায় ভর্তি আছেন মোট ১৮২ জন। এছাড়া চমেক হাসপাতাল ও পার্কভিউ হাসপাতাল থেকে ১২ জন রোগীকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আর আহত ১০০ জনের বেশি চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন বলে জানান তিনি।
ঘটনার তদন্তে জেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস, কাস্টমস ও বন্দর কর্তৃপক্ষ পৃথক চারটি কমিটি গঠন করেছে। এছাড়া প্রশাসনের পক্ষ থেকে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা মো. আলমগীর জানান, কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে হতাহতদের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, শনিবার রাত ১০টার দিকে সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের পরই ডিপোতে থাকা আমদানি ও রফতানির বিভিন্ন মালামালবাহী কনটেইনারে আগুন ধরে যায়। এই বিস্ফোরণে শব্দে আশেপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকা কেঁপে উঠে।
পরে চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের সবগুলো ইউনিট চেষ্টা করেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। পরে রাত সাড়ে ৩টার দিকে ফেনী, নোয়াখালী ও কুমিল্লা থেকে অগ্নি নির্বাচক গাড়ি পাঠাতে অনুরোধ করা হয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে সেনা সদস্যরা যোগ দিয়েছেন। আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের ২৯টির বেশি ইউনিট কাজ করেছে।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply