
বাংলাদেশে স্থানীয় সুশাসন ব্যবস্থা শক্তিশালী করার রূপরেখা এবং উপজেলা পরিচালন ও উন্নয়ন প্রকল্পের (ইউজিডিপি) অর্জনগুলো তুলে ধরতে আজ এক কর্মশালার আয়োজন করেছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) বাংলাদেশ। অনুষ্ঠানটি সমন্বয় করেন ইউজিডিপির প্রকল্প পরিচালক ও যুগ্ম সচিব ড. আবু নাসের মোহাম্মদ আবদুল্লাহ।
এছাড়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মোবাশ্বের মোনেম, সম্মানিত অতিথি ছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নজরুল ইসলাম এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন জাইকা বাংলাদেশ অফিসের জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধি মরিকাওয়া ইউকো। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী।
উপজেলা পরিষদগুলোকে তৃণমূল পর্যায়ে সেবা প্রদানের কার্যকর প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে দেশজুড়ে বাস্তবায়িত ইউজিডিপি প্রকল্পের মাধ্যমে পারফরমেন্সভিত্তিক অর্থায়ন, ডিজিটাল সুশাসন ব্যবস্থার বিভিন্ন উপকরণ এবং সক্ষমতা উন্নয়ন কার্যক্রম চালু করা হয়। কর্মশালায় নীতিনির্ধারক, উন্নয়ন সহযোগী এবং স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে বক্তারা কৌশলগত, পরিমাপযোগ্য, জবাবদিহিমূলক ও প্রযুক্তিনির্ভর ‘স্মার্ট’ সুশাসন ব্যবস্থার বাস্তবায়নের অগ্রগতি ও বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।
প্রধান অর্জনসমূহ
স্থানীয় পর্যায়ে টেকসই উন্নয়নে একটি কার্যকর মডেল গড়ে তুলতে ইউজিডিপি প্রকল্পে বহুমুখী উদ্ভাবনী উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থাপিত উল্লেখযোগ্য অর্জনের মধ্যে রয়েছে পারফরমেন্সভিত্তিক বরাদ্দ (পিবিএ) চালু করা। তুলনামূলক নতুন এ ধারণায় সুশাসনব্যবস্থার ফলাফলের সাথে আর্থিক উদ্যোগকে যুক্ত করা হয়; যা জবাবদিহিতা বৃদ্ধি করে এবং ইতিবাচক আচরণগত পরিবর্তনে উৎসাহিত করতে ভূমিকা রাখে। এ প্রকল্পের আওতায় স্থানীয় সরকারের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে ডিজিটাল উদ্ভাবনের অংশ হিসেবে ওয়েবভিত্তিক গভর্নেন্স পারফরম্যান্স মূল্যায়ন ব্যবস্থা চালু করা হয়। পাশাপাশি, এ প্রকল্পের অধীনে উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের জন্য লক্ষ্যভিত্তিক প্রশিক্ষণসহ অন্তর্ভুক্তিমূলক সক্ষমতা উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়। প্রকল্পে স্থানীয় নারী ও তরুণদের জীবিকার মানোন্নয়ন ও আয় বৃদ্ধিকে অগ্রাধিকার প্রদান করে সক্ষমতা উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
শিক্ষণীয় বিষয়
কর্মশালায় ইউজিডিপি বাস্তবায়নের অভিজ্ঞতা থেকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য উঠে আসে। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে আর্থিক প্রণোদনা—সংস্কার প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে আর্থিক প্রণোদনা। পাশাপাশি, সংস্কারমূলক কার্যক্রম টেকসই করে তুলতে প্রাতিষ্ঠানিকরণ জরুরি এবং প্রকল্পের প্রভাব দীর্ঘস্থায়ীকরণ ও সম্প্রসারণে শক্তিশালী নেতৃত্ব ও কার্যকর সমন্বয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বলেও অনুষ্ঠানে আলোচনা করেন বক্তারা। একইসাথে, ধারাবাহিক সক্ষমতা উন্নয়ন শক্তিশালী শাসনব্যবস্থার মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করে বলেও প্রকল্পের অভিজ্ঞতা পর্যালোচনায় উঠে আসে। আলোচনায় বক্তারা বলেন, ডিজিটাল সুশাসনব্যবস্থায় স্বচ্ছতা বৃদ্ধির মাধ্যমে কার্যকর ফল পেতে সমন্বিত বা হাইব্রিড তদারকি ব্যবস্থার প্রয়োজন রয়েছে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের জাতীয় ব্যবস্থায় ইউজিডিপির উদ্ভাবনী উদ্যোগগুলো মূলধারায় অন্তর্ভুক্ত করতে জাইকার অব্যাহত অঙ্গীকার তুলে ধরা হয়। অগ্রগতি ধরে রাখতে পারফরমেন্সভিত্তিক অর্থায়নের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়া, ডিজিটাল ব্যবস্থা সংযুক্ত করা এবং টেকসই এবং সহনশীল স্থানীয় উন্নয়নের পথ তৈরিতে অন্তর্ভুক্তিমূলক সংস্কার এগিয়ে নেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করা জরুরি বলে অনুষ্ঠানে উল্লেখ করা হয়।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply