সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:২৫ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ
ভৈরবে মাদক সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ ১০ দফা দাবিতে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের মানববন্ধন মাইগ্রেশনের দাবি আইচি মেডিকেলের ১৫০ শিক্ষার্থীর ভৈরবে হাসপাতালে ভর্তির পর খোঁজ নেননি পরিবার, ৪৮দিন পর ব্যক্তির মৃত্যু আইবিটিআরএ-তে ‘সার্টিফিকেশন কোর্স অন ট্রেজারি ডিলিংস’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালা শুরু শহীদ ছাত্র জনতার আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও আলোচনা সভা চকবাজার থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের বিক্ষোভ মিছিল সিলেটে তাপমাত্রা ৩৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের আয়োজনে ‘ইনভেস্টমেন্ট অপারেশনস্ অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ মেট্রোরেলে ১৮ দিনে আয় ২০ কোটি টাকা

পতিত জমিকে চাষের আওতায় আনতে সরকার নিরলস কাজ করছে- কৃষিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : সোমবার, ৯ মে, ২০২২
  • ৩৮ Time View

বরিশাল: কৃষি মন্ত্রী কৃষিবিদ ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক এমপি বলেছেন, বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ। শুধু মাত্র রাস্তাঘাট, বড় বড় বিল্ডিং করলেই দেশের উন্নয়ন হবেনা। কৃষকদের উন্নতির উপর দেশের উন্নয়ন নির্ভরশীল। এজন্য প্রয়োজন বেশি করে শষ্য ফলানো। আর সেজন্য কৃষকদের কৃষি বীজ, কৃষি যন্ত্রপাতিসহ প্রয়োজনীয় সব সুযোগ সুবিধা দিতে হবে।
তিনি বলেন, টাকা কোন সমস্যা নয়। মাননীয় প্রধান মন্ত্রী দক্ষিণাঞ্চলের কৃষি ক্ষেত্রে সফলতার জন্য একটি বড় মেগা প্রকল্প তৈরী করতে বলেছেন। আমরা অচিরেই সেই প্রকল্পের মাধ্যমে দক্ষিণাঞ্চলের কৃষি কৃক্ষে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটাবো।
তিনি আরো বলেন, পটুয়াখালী, ভোলাসহ উপকূলের পতিত জমিকে চাষের আওতায় আনতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। 
তিনি বলেন, এ অঞ্চলের বেশির ভাগ জমিতে বছরে একটি মাত্র ফসল আমন ধান হয়, আর বাকী সময় পতিত থাকে। এ বিপুল পতিত জমিকে চাষের আওতায় আনতে সরকার নিরলস কাজ করছে।
আজ সোমবার বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার বাকেরকাঠি ও নন্দপাড়া গ্রামে পতিত জমিতে বোরো ধান আবাদের ফসল কর্তন উৎসব ও মাঠ দিবসে কৃষিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. রহুল আমিন তালুকদার, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক শাহজাহান কবীর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

মন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে দেশের বিজ্ঞানীরা উন্নত জাতের ধান, মুগ ডাল, তরমুজসহ বিভিন্ন ফসলের জাত উদ্ভাবন করেছে। এর মধ্যে লবণসহিষ্ণু জাতও রয়েছে। এসব জাতের দ্রুত সম্প্রসারণ করা হচ্ছে।
বাকেরকাঠি গ্রামে প্রায় ১০০ বিঘা জমিতে প্রথমবারের মতো পতিত জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়েছে। লো-লিফট পাম্পের (এলএলপি) মাধ্যমে সেচের ব্যবস্থা করে কৃষকদেরকে চাষে উদ্বুদ্ধ করেছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট। অনুষ্ঠানে কৃষকেরা লো-লিফট পাম্পের অভাব, খাল না থাকা ও পাওয়ার টিলার না থাকাকে জমি পতিত থাকার ক্ষেত্রে মূল সমস্যা হিসাবে মন্ত্রীর সামনে তুলে ধরেন।
এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, লো-লিফট পাম্প, খাল খনন-পুনঃখনন ও পাওয়ার টিলার সরবারহ করার জন্য দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। স্থানীয় প্রশাসন, কৃষি মন্ত্রণালয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে সম্পৃক্ত করে এ সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেয়া হবে বলে জানান মন্ত্রী। 
তিনি বলেন, এটি করতে পারলে এসব এলাকার কৃষিতে বিরাট পরিবর্তন আসবে। পতিত জমি চাষের আওতায় আসবে। অন্যদিকে এক ফসলি জমি দুই-তিন ফসলি জমিতে রূপান্তরিত হবে।

কৃষকদের সাথে মতবিনিময় শেষে তিনি বিরুপ আবহাওয়ার মধ্যেও একটি বোরো ক্ষেতে নেমে বোরো ধানের ফলন দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং কৃষকদের পতিত জমিতে বেশি করে শষ্য উৎপাদন করার আহবান জানান।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোঃ আলমগীর হোসেন, জেলা প্রশাসক জসিন উদ্দিন হায়দার, উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শামসুল আলম চুন্নু, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাধবী রায়, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুছা ইবনে সাইদ, রঙ্গশ্রী ইউপি চেয়ারম্যান বসির উদ্দিন সিকদার, কৃষক হারুন হাওলাদার। 


পরে দুপুরে কৃষিমন্ত্রী পটুয়াখালীর সদর উপজেলার বদরপুর ও করমজাতলা গ্রামে মুগ ডালের মাঠ পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি বলেন, পটুয়াখালী, ভোলাসহ এ অঞ্চলে মুগ ডালের সম্ভাবনা অনেক। এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সরকার কৃষকদেরকে উন্নতমানের বীজসহ সব ধরণের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত উন্নত জাতের বারি মুগ ডাল-৬ এর উৎপাদনশীলতা অনেক ভাল। বিঘাতে ৫ থেকে ৬ মণ। এ বছর শুধু পটুয়াখালী জেলাতেই প্রায় এক লাখ হেক্টর জমিতে মুগ ডাল চাষ হয়েছে। আর পটুয়াখালী ও ভোলা দুই জেলা মিলে বছরে ২ লাখ টন মুগ ডাল উৎপাদন হয়।


মুগ ডালের মাড়াই সমস্যা সমাধানের জন্য যন্ত্র দেয়ার কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে আমাদের বিজ্ঞানীরা মাড়াইযন্ত্র তৈরি করেছে, যার দাম ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা। আগামী বছর ভর্তুকি মূল্যে এ যন্ত্র কৃষকদের দেয়া হবে। এর ফলে দাম পড়বে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা।

বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলায় চলতি মৌসুমে বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। ঈদের আনন্দ শেষ হতে না হতেই কৃষকরা আনন্দের সাথে প্রাণভরে ধান কেটে মাড়াই কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। সেই সঙ্গে কৃষানীরাও বসে নেই। তারাও মনের আনন্দে ধান শুকিয়ে গোলায় তোলার কাজে সাহায্য করছেন। ধানের ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে।
দুধল ইউনিয়নের বোরো চাষি ইউনুছ হাওলাদার জানান, আরো ৮/১০ দিন পর পুরো বোরো ধান কাটা শেষ হবে। যারা আগাম জাতের ধান আবাদ করেছে তারা মনের আনন্দে ধান কাটছেন।উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, চলতি বোরো মৌসুমে পৌর শহর সহ উপজেলায় ১৪ টি ইউনিয়নে হাইব্রিড বোরো ৪৫০ হেক্টর উফশী বোরো ৪৫৭০ হেক্টর ও স্থানীয় বোরো ৮০ হেক্টর মোট ৫১০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। মৌসুমের শুরু থেকে আবহাওয়া ও প্রকৃতি ধান চাষের অনুকূলে থাকায় মাঠে তেমন কোনো রোগ বালাইয়ের আক্রমণ দেখা যায়নি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ মৌসুমে ফলন ভাল হয়েছে। পৌর শহরের ৮ নং ওয়ার্ড এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় কৃষক হায়দার ফকির আগাম জাতের ধান কাটছেন। কৃষকরা ব্যস্ত এখন সময় পার করছেন। এ উপজেলায় হাইব্রিড বোরো, উফশী বোরো ও স্থানীয় বিভিন্ন প্রজাতির ধান চাষ করা হয়েছে।
রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের মালেক ফকির বলেন, আগাম জাতের ধান এরইমধ্যে কাটা শুরু হয়েছে। তিনি আশা করছেন আগামী ৩-৪ দিনের মধ্যে তার ধান কাটা শেষ হবে। এবার ফলন ভালো হয়েছে। কোনো প্রকার পোকার উপদ্রব ছিল না।
রঙ্গশ্রী ইউপির ১ নং ওয়ার্ডের কৃষক মো: রফিক মৃধা বলেন, বর্তমানে ধান জমির অবস্থা ভালো। এক সপ্তাহের মধ্যে তার জমির ধান কাটা হবে। তবে প্রথম দিকে বোরো ধানে বিভিন্ন রকম ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দিলে মাঠে কিটনাশক দিতে হয়েছে। এ কারনে কিছুটা আর্থিক সমস্যায় আমাদের পরতে হয়েছে।
তবে এখন জমির দিকে তাকালে মন জুড়িয়ে যায়। এবার বড় ধরনের ঝড় বা শিলা বৃষ্টি না হওয়ায বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুসা ইবনে সাঈদ জানান, প্রতি বছরের তুলনায় এ বছর অনেক বেশি বোরো ধানের চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বোরো ধানের ফলন ভাল হয়েছে। উপজেলায় হাইব্রিড বোরো, উফশী বোরো ও স্থানীয় বিভিন্ন প্রজাতির মোট ৫১০০ হেক্টর জমিতে ধান চাষ করা হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2024 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS