হাতীবান্ধা(লালমনিরহাট)প্রতিনিধি : একদিকে গুরুত্বপূর্ণ জমির দলিল ও রেকর্ডপত্রাদি , অন্যদিকে রাইজ কুকার-পাতিল, চুলা আর ধোঁয়া। চিত্রটি কোনো গ্রামের সাধারণ রান্নাঘরের নয়, এটি একটি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের রেকর্ড রুমের বাস্তব চিত্র।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই ইউনিয়নের ভুমি উপ-সহাকারি কর্মকর্তা হরি শংকর রায় নিজ কক্ষ ছেড়ে পাশের রুমে বসে অফিস করছেন। আর অন্যদিকে ওই অফিসের রেকর্ড রুমে রাইস কুকারে রান্না বসিয়েছেন। পাশাপাশি রুমে দেখা যাচ্ছে পাতিল, তেল, লবনসহ রান্না করার সরঞ্জামাদি। এবং শোয়ার জন্য একটি চৌকি, বিছানা বালিশও রয়েছে। এই দৃশ্যের ছবি তুলতে গেলে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের বাঁধা দেন এবং চরাও হন তিনি।
স্থানীয়রা বলছেন, সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন ভূমি অফিসের রেকর্ড রুমটি ব্যবহার করা হচ্ছে রান্নাঘর হিসেবে। রেকর্ডের ফাইলপত্রের পাশে মজুত রাখা হয়েছে রাইস কুকার, রান্নার উপকরণসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম। এতে করে কাগজপত্রে আগুন লাগার আশঙ্কা যেমন বাড়ছে, তেমনি নষ্ট হচ্ছে মূল্যবান রেকর্ডপত্রও।
ভূমি অফিসে সেবা নিতে আসা সোলেমান গণি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমরা জমির খতিয়ান, পর্চা বা দলিল দেখতে আসি, অথচ এখানে এসে দেখি ধোঁয়ার মধ্যে ফাইল খোঁজা হচ্ছে।” এমনকি যে কোন মুহুর্তে সেখানে আগুন লেগে নথিপত্র পুড়ে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। নথি হারিয়ে গেলে আমরা পাব কোথায় ?
এ বিষয়ে (তহশিলদার) হরি শংকর রায় এর কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রথমে বিষয়টি অস্বীকার করেন। পরে সাংবাদিকদের কাছে ভিডিও ও ছবি আছে জানতে পারলে তিনি বলেন, শুধু আজকেই রান্না করেছি। আমি এর আগে রান্না করিনি।
সিন্দুর্না ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট আরিফুল ইসলাম বলেন, সরকারি অফিসের রেকর্ড রুমে এমন অনিয়ম শুধু দায়িত্বজ্ঞানহীনতা নয়, এটি একটি দন্ডনীয় অপরাধও বটে। জরুরি ভিত্তিতে তদন্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমি রেকর্ড ধ্বংস হয়ে যেতে পারে, যার দায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদেরকেই নিতে হবে।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীম মিঞা বলেন,রেকর্ড রুমকে লিভিং রুম বানানোর কোন সুযোগ নেই। যদি এরকম কোন ঘটনা ঘটে থাকে তবে তার বিরুদ্ধে আমরা খুব দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply