
সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখভাগের অকুতোভয় যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে ওসমান হাদির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ ও ইনকিলাব মঞ্চের ফেসবুক পেজে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ওই পোস্টে বলা হয়, ‘ভারতীয় আধিপত্যবাদের মোকাবিলায় মহান বিপ্লবী ওসমান হাদিকে আল্লাহ শহীদ হিসেবে কবুল করেছেন।’
এদিকে আজ বিকেলে গুলিবিদ্ধ শরিফ ওসমান হাদি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছেন বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ। ওই বিবৃতিতে বলা হয়, সিঙ্গাপুরেই তাঁর অস্ত্রোপচার করার অনুমতি দিয়েছে পরিবার।
ওসমান হাদির জন্য দোয়া চেয়েছে সংগঠনটি। তারা বিবৃতিতে ওসমান হাদি যদি মারা যান, তাহলে পুরো বাংলাদেশের স্বাধীনতাকামী মানুষকে সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করতে শাহবাগে জড়ো হওয়ার অনুরোধ জানায়। বিবৃতিতে বলা হয়, খুনিরা গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত আমরা শাহবাগে অবস্থান করব এবং পুরো বাংলাদেশকে অচল করে দেওয়া হবে। খুনি ভারতে পালিয়ে গিয়ে থাকলে সে দেশের সঙ্গে আলোচনা করে যেকোনো মূল্যে তাঁকে ফেরত আনার ওপর জোর দেওয়া হয় বিবৃতিতে।
এর আগে গতকাল রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস উইংয়ের এক বার্তায় শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন বলে জানানো হয়। আজ উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে শরিফ ওসমান বিন হাদির স্বাস্থ্য নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তাঁর চিকিৎসার দেখভাল করতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গতকাল সিঙ্গাপুর পৌঁছেছেন বলেও জানানো হয়।
এদিকে ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণকারী হিসেবে ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল করিম মাসুদ নামে একজনকে চিহ্নিত করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তাঁর সহযোগী আলমগীর শেখ মোটরসাইকেলের চালক ছিলেন বলে তথ্য পেয়েছে পুলিশ ও র্যাব। এই দুজন অবৈধভাবে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে পালিয়ে গেছেন বলে কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৪ জনকে আটক ও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও র্যাব। তাঁদের মধ্যে ফয়সালের বাবা মো. হুমায়ুন কবির (৭০) ও মা মোসা. হাসি বেগম (৬০), স্ত্রী সাহেদা পারভিন সামিয়া ও শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ সিপু রয়েছেন। ফয়সালের বাবা–মা ছাড়া বাকিরা হলেন মো. নুরুজ্জামান নোমানী ওরফে উজ্জ্বল, মো. কবির, আব্দুল হান্নান, মো. হিরন, মো. রাজ্জাক, ফয়সালের বান্ধবী মারিয়া আক্তার এবং হালুয়াঘাট সীমান্তে মানব পাচারকারী হিসেবে পরিচিত সিমিরন দিও ও সঞ্জয় চিসিম।
জুলাই অভ্যুত্থানের পরিচিত মুখ ওসমান হাদি ঢাকা-৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার জন্য প্রচার চালাচ্ছিলেন। গত শুক্রবার ১২ ডিসেম্বর দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট সড়কে তাঁকে গুলি করা হয়। এরপর তাঁকে নেওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসা শেষে রাতেই এভারকেয়ার হাসপাতালে আনা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ১৫ ডিসেম্বর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুর নেওয়া হয়। তিনি এখন সেখানেই রয়েছেন।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply