শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৩৫ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ
রাণীনগরে অবৈধভাবে পুকুরের মাটি বিক্রির অভিযোগে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স বাড়ায় দেশের রিজার্ভ ৩২.৫৭ বিলিয়ন ডলার সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইনকিলাব মঞ্চ নেতা ওসমান হাদি মারা গেছেন পুঁজিবাজারের তথ্য দিতে ইনফরমেশন হেল্প ডেস্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে: আছাদুর রহমান ২.১৪ কোটি টাকার শেয়ার কিনবেন স্যালভো কেমিক্যালের এমডি নুজহাত আনোয়ার ডিএসইর নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি (পুনাক) এর আয়োজনে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠিত কমিউনিটি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ৭১তম সভা অনুষ্ঠিত ইসলামী ব্যাংকের বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত ASYCUDA World সিস্টেমে Truck Movement সাব-মডিউল চালু করেছে NBR

সোনালী লাইফের তিনজনের ব্যাংক হিসাব জব্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪
  • ১৪৭ Time View

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সোনালী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানির তিনজনের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। ব্যাংক হিসাব জব্দ হওয়া ব্যক্তিরা হলেন কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার পরিচালক ও সদ্যবিদায়ী চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস, তাঁর আগের চেয়ারম্যান নূর ই হাফজা এবং বরখাস্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মীর রাশেদ বিন আমান।

বিএফআইইউ সম্প্রতি দেশের সব ব্যাংকে চিঠি পাঠিয়ে আলোচ্য তিন ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব জব্দ করতে বলেছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ২০১২ এর (২৩)( ১) (গ) ধারার ক্ষমতাবলে এ চিঠি দিয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, কোম্পানিটির এ তিন ব্যক্তির নামে কোনো হিসাব পরিচালিত হয়ে থাকলে সেসব হিসাবের লেনদেন ১৫ দিন অবরুদ্ধ থাকবে। ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ১৫ মার্চ পর্যন্ত তাঁদের ব্যাংক হিসাবের বিবরণী বিএফআইইউর কাছে দাখিল করতে বলা হয়েছে ব্যাংকগুলোকে।

মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস গত ১৮ জানুয়ারি সোনালী লাইফের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরে দাঁড়ান। এরপর নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে আসেন স্বতন্ত্র পরিচালক কাজী মনিরুজ্জামান। মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের আগে চেয়ারম্যান ছিলেন নূর ই হাফজা।

এদিকে আইন লঙ্ঘন করে আর্থিক অনিয়মের মাধ্যমে গ্রাহকের স্বার্থহানি এবং কোম্পানির অর্থ আত্মসাৎ সংক্রান্ত ১৪টি অভিযোগ তদন্তের জন্য বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) বিমা কোম্পানিটিতে গত ৩১ ডিসেম্বর নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান হুদা ভাসী চৌধুরী অ্যান্ড কোম্পানিকে নিয়োগ দেয়।

হুদা ভাসী চৌধুরী অ্যান্ড কোম্পানি গত ২৩ জানুয়ারি আইডিআরএর কাছে এক আবেদনে জানায়, কার্যপরিধি অনুযায়ী তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য–উপাত্ত সরবরাহ করা হচ্ছে না এবং কোম্পানির কম্পিউটার বেজ অ্যাকাউন্টিং সিস্টেমে প্রবেশাধিকার দেওয়া হচ্ছে না। সরবরাহকৃত ফটোকপির যথার্থতা যাচাইয়ের জন্য মূল দলিলপত্রও দেওয়া হচ্ছে না এবং তদন্তকার্য পরিচালনায় পর্ষদ আশানুরূপ সহযোগিতা করছে না।

আইডিআরএ গত জানুয়ারিতে এক চিঠিতে সোনালী লাইফকে জানিয়েছে, তাদের কাছে তথ্য রয়েছে যে কোম্পানির স্থায়ী হিসাবের (এফডিআর) বিপরীতে সাউথ বাংলা ব্যাংকে হিসাব খোলা এবং ওই হিসাব থেকে ৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ও একই ব্যাংকে আরেক সঞ্চয়ী হিসাব থেকে ১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা তুলে নিয়ে ৪ জন পরিচালকের শেয়ার কেনার মূল্য পরিশোধ করা হয়েছে।

সংস্থাটির কাছে আরও তথ্য রয়েছে, ২০২২ সালে কোম্পানির পর্ষদে পারিবারিক কর্তৃত্ব বজায় রাখার লক্ষ্যে একই পরিবারের ৪ জন সদস্যের নামে বিপুলসংখ্যক শেয়ার বিনা মূল্যে হস্তান্তর করা হয়। ২০২৩ সালে চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস তাঁর ব্যক্তিগত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ড্রাগন সোয়েটারের জন্য প্রতি মাসে ৩ কোটি টাকা কোম্পানির হিসাব থেকে জনতা ব্যাংকে পরিশোধ করেন।

এ ছাড়া মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের মালিকানাধীন ইম্পিরিয়াল ভবন সোনালী লাইফের জন্য কেনার নাম করে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, সাউথ বাংলা অ্যাগ্রিকালচার ব্যাংক ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকে ১৫২ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার পাশাপাশি এর বিপরীতে ৩ বছরে প্রায় ১৫ কোটি টাকার বেশি সুদও নেওয়া হয়।

আইডিআরএর চিঠিতে আরও বলা হয়, মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের মালিকানাধীন ইম্পিরিয়াল ভবন কেনার জন্য ৩৫০ কোটি টাকায় সমঝোতা চুক্তি হয়। আইডিআরএর অনুমতি ছাড়াই দুই বছরে ইম্পিরিয়াল ভবনের মূল্য বাবদ মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস ৫৩ কোটি ৪৭ লাখ টাকা নেন। একই সময়ে কোম্পানির তহবিল থেকে মোট ৬১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা সরিয়ে নেওয়া হয় মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের মালিকানাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে।

কোম্পানির পরিচালকেরা অবৈধভাবে মাসিক বেতন–ভাতা বাবদ নিয়েছেন ৩ কোটি ১৯ লাখ টাকা। আইডিআরএর নির্দেশনা অমান্য করে মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের জন্য ১ কোটি ৭০ লাখ টাকায় কেনা হয় বিলাসবহুল অডি গাড়ি। পরিচালকেরা কোম্পানির ঘোষিত লভ্যাংশের অতিরিক্ত লভ্যাংশ গ্রহণ করেন। গোলাম কুদ্দুসের বিদেশে চিকিৎসার যাবতীয় খরচ এবং নিজের ও পরিবারের সদস্যদের ভ্রমণ ও শপিং খরচ, বিদেশে পড়ালেখার খরচ অবৈধভাবে কোম্পানির তহবিল থেকে ব্যয় করা হয়।

কোম্পানির পরিচালক শেখ মোহাম্মদ ড্যানিয়েল ব্যক্তিগত অফিস পরিচালনা করেন সোনালী লাইফের ভেতরে। তিনি গ্রুপ বিমা পলিসি থেকে বড় অঙ্কের কমিশন নেন। তিনি ঋণখেলাপি হওয়ার কারণে ২০২০ সালের ১২ সেপ্টেম্বর সোনালী লাইফের পরিচালক পদ থেকে বাদ পড়েন। কিন্তু এরপর পরিচালক না হয়েও পর্ষদ সভায় অংশ নেন এবং সম্মানী-বোনাসসহ সব সুবিধা ভোগ করেন।

সোনালী লাইফ ২০১৩ সালে নিবন্ধন পাওয়া একটি নতুন প্রজন্মের জীবনবিমা কোম্পানি, যার ২০৫টি শাখা আছে। এর ৭ লাখের বেশি বিমা গ্রাহক রয়েছে। এজেন্ট আছে ৩০ হাজারের মতো। কোম্পানিটির কর্মকর্তা-কর্মচারী সংখ্যা প্রায় ৮০০।

এদিকে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে কোম্পানির করা এক মামলায় ১৩ মার্চ থেকে কারাগারে রয়েছেন মীর রাশেদ বিন আমান। মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস ও মীর রাশেদ বিন আমান সম্পর্কে শ্বশুর-জামাতা।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS