বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:০৫ পূর্বাহ্ন

৫ মাসে ব্যাংকের কার্ডে ই-কমার্স লেনদেন বেড়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : শনিবার, ২৭ জানুয়ারী, ২০২৪

অনলাইন কেনা-কাটায় ব্যাংকের কার্ডধারীদের মধ্যে আগ্রহ প্রতিনিয়ত বাড়ছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) ব্যাংকের কার্ডে ই-কমার্স খাতে লেনদেন হয়েছে ৭ হাজার ৫৬৩ কোটি টাকা। আগের অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে লেনদেন হয়েছিল ৫ হাজার ৪১৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ আগের বছরের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ২ হাজার ১৪৬ কোটি টাকা।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) ব্যাংকের কার্ডে ই-কমার্স খাতে লেনদেন হয়েছে ৭ হাজার ৫৬৩ কোটি টাকা। এরমধ্যে অর্থবছরের শুরুতে অর্থাৎ জুলাই মাসে লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৪২৬ কোটি টাকা ৬৮ লাখ টাকা। এর পরের মাসে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিলো। আগস্টে অনলাইন কেনাকাটায় লেনদেন হয় ১ হাজার ৪৮০ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। এরপর সেপ্টেম্বর মাসে ব্যাংকের কার্ডে ই-কমার্স খাতে লেনদেন হয়েছিলো ১ হাজার ৪৪৮ কোটি টাকা। পরের মাস অক্টোবরে লেনদেন দেড় হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। মাসটিতে ই-কমার্সে লেনদেন হয় ১ হাজার ৫৮৫ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এর পরের মাসেও লেনদেন দেড় হাজার কোটি টকার উপরে ছিলো। নভেম্বর মাসে লেনদেন হয়েছিলো ১ হাজার ৬২২ কোটি ১২ লাখ টাকা।

সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, দেশের ই-কমার্স খাতে সরকার বিশেষ নজর দিয়েছে। এর ফলে খাতটিতে প্রতারণা অনেকটাই কমে এসেছে। এ ছাড়া ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকের কাছ থেকে সংগ্রহ করা অর্থ নিজস্ব সেটেলমেন্ট হিসেবে নেওয়াসহ নানা নীতির কারণে এই খাতে আস্থা ফিরছে মানুষের। গ্রাহকদের আগ্রহ যদি বাড়তে থাকে তাহলে এই খাত আরও বড় হবে।

এদিকে ই-কমার্স খাতে ব্যাপক অনিয়মের তথ্য বেরিয়ে এলে এই খাতে গ্রাহকদের আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছিলো। অনেক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান অগ্রিম টাকা নিয়ে দীর্ঘদিনেও পণ্য বা সেবা সরবরাহ করছিলো না। এ নিয়ে ২০২১ সালের জুনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় একটি নির্দেশিকা জারি করে। বাংলাদেশ ব্যাংক ওই নির্দেশনার আলোকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছিলো, পরিশোধ সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকের কাছ থেকে সংগ্রহ করা অর্থ নিজস্ব সেটেলমেন্ট হিসেবে ধারণ করবে। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান পণ্য সরবরাহের পর দাম পাবে। লেনদেন নিষ্পত্তিতে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ব্যাংক, এমএফএস বা ই-ওয়ালেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান কাজ করতে পারবে।

ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, দেশের মানুষের অধিকাংশ এখনো নগদ টাকায় লেনদেন করছে। তবে কার্ডের মাধ্যমেও লেনদেন বাড়ছে। অনলাইন কেনাকাটায় মানুষের আগ্রহ প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এক্ষেত্রে ব্যাংকের কার্ডের ব্যবহার করা হচ্ছে। ব্যাংকগুলোর বিভিন্ন উদ্যোগের কারণে দিন দিন কার্ডে লেনদেন বাড়ছে।

এদিকে ই-কমার্স খাতে অনিয়ম বন্ধে কঠোর হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। খাতটিতে শৃঙ্খলা ফেরাতে এসক্রো সার্ভিস নামের বিশেষ সেবা চালু করেছে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এটি বাস্তবায়নেও কাজ চলমান রয়েছে বলে জানায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘মার্চেন্ট অ্যাকোয়ারিং ও এসক্রো সেবা নীতিমালা ২০২৩’ শীর্ষক নীতিমালায় ই-কমার্স ব্যবসায়ের বিভিন্ন শর্তের কথা বলা হয়েছে। মূলত অনলাইন কেনাকাটায় প্রতারণা থেকে ক্রেতা ও বিক্রেতা এ দুই পক্ষকেই সুরক্ষা দেওয়ার জন্য এই নীতিমালা তৈরি হয়েছে।

নীতিমালায় বলা হয়েছিলো, ই-কমার্সের লেনদেনের ক্ষেত্রে বিক্রেতা ও ক্রেতার কাছ থেকে ব্যাংক, পিএসও, এমএফএস এবং পিএসপি প্রতিষ্ঠান কোনো ধরনের মাশুল নিতে পারবে না। এছাড়া এতে যুক্ত হওয়া কুরিয়ার সার্ভিসের প্রতিষ্ঠানগুলোকে কুরিয়ার সার্ভিস লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের ও বাংলাদেশ মেইলিং অপারেটরের মাধ্যমে অনুমোদিত হতে হবে। পাশাপাশি সরকারের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় কুরিয়ার হাব প্রতিষ্ঠার পর সব কুরিয়ার প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় কুরিয়ার হাবে যুক্ত হবে। শুধু কেন্দ্রীয় কুরিয়ার হাব কর্তৃক ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড (ওটিপি) ভেরিফিকেশন সম্পন্ন হবে।

অপরদিকে অলনাইন কেনাকাটায় এসক্রো সুবিধা নিশ্চিত করতে অর্থ পরিশোধ সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হতে হবে। তাদের পক্ষে গ্রাহকের কাছ থেকে পণ্য বা সেবামূল্য সংগ্রহ করবে। এক্ষেত্রে অর্থ পরিশোধ সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট মার্চেন্ট অ্যাকোয়ারের বা ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানকে সেবার আওতায় নিয়ে আসতে মুখ্য ভূমিকা পালন করে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS