বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫, ১১:৩২ অপরাহ্ন

আজ জমজমাট এশিয়া কাপ শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : বুধবার, ৩০ আগস্ট, ২০২৩

এশিয়ান দেশগুলোর শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই ‘এশিয়া কাপ’-এর পর্দা উঠছে আজ। টুর্নামেন্টটির ১৬তম আসরে অংশ নিতে নিজেদের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি সেরেছে বাংলাদেশসহ ৬টি দেশ। বিশ্বকাপের প্রস্তুতির মঞ্চ হিসেবে এশীয়রা এই প্রতিযোগিতামূলক আসরকে কাজে লাগাতে চাইবে। কারণ দুটো টুর্নামেন্টই যে হবে ওয়ানডে সংস্করণে। সর্বোচ্চ ৭ বারের চ্যাম্পিয়ন ভারত, ৬ বার শ্রীলঙ্কা এবং দুইবারের শিরোপাজয়ী পাকিস্তানের পাশে বাংলাদেশ বেশ পিছিয়েই আছে। তিনবার ফাইনাল খেললেও টাইগারদের এখনও শিরোপা জেতা হয়নি।

এশিয়া কাপের উদ্বোধনী ম্যাচে পাকিস্তানের লাহোরে দেশটির মুখোমুখি হবে ‘আন্ডারডগ’ নেপাল। সবগুলো ম্যাচই শুরু হবে আজ বাংলাদেশ সময় বিকাল সাড়ে ৩টায়।এবারের এশিয়া কাপের আয়োজক ছিল পাকিস্তান। কিন্তু পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে অনেক আগে থেকেই চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ক্রিকেট মাঠেও ছড়িয়েছে। ফলে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে যৌথভাবে ইভেন্টটি আয়োজন করছে পাকিস্তান। টুর্নামেন্টের ৪টি ম্যাচ পাকিস্তানে এবং ৯টি অনুষ্ঠিত হবে শ্রীলংকায়।

১৯৮৪ সালে যাত্রা শুরু হয়েছিল এশিয়া কাপ টুর্নামেন্টের। দুই বছর পরে অনুষ্ঠিত আসর থেকেই বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করে আসছে। তবে তিনটি আসরে অনুপস্থিত ছিল টিম টাইগার্স। এছাড়া বাংলাদেশ সর্বোচ্চ পাঁচবার এশিয়া কাপও আয়োজন করেছিল। সর্বশেষ ২০১৮ সালে সর্বশেষ ওয়ানডে ফরম্যাটে হওয়া এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ভারতের বিপক্ষে শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি তারা ৩ উইকেটে হেরে যায়।

এশিয়া কাপের ‘এ’ গ্রুপে রয়েছে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশ ভারত, পাকিস্তান ও নেপাল। ‘বি’ গ্রুপে অবস্থান বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তানের। প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপে অংশ নেওয়া নেপাল ছাড়া বাকি পাঁচ দলই ভারত বিশ্বকাপে খেলবে। এজন্য এশিয়া কাপকে তারা ‘ড্রেস রিহার্সাল’ ধরে নিয়ে নামবে। সেই লড়াইয়ে স্বাভাবিকভাবেই সবচেয়ে ফেভারিট ভারত ও পাকিস্তান। সম্প্রতি পাকিস্তান ওয়ানডে ফরম্যাটের র‌্যাংকিংয়ে শীর্ষ স্থান দখল করেছিল। ভারতের চেয়ে তারা বড় টুর্নামেন্টে পিছিয়ে থাকলেও ভিন্ন কিছুরই আভাস দিয়ে রেখেছে।

ভারত-পাকিস্তান দুই দলই শক্তিশালী একাদশ নিয়েই নামছে এই টুর্নামেন্টে। ব্যাটিং-বোলিংয়ে তাদের প্রধান তারকারাই নেতৃত্ব দেবেন। রোহিত শর্মার নেতৃত্বাধীন দলে দীর্ঘদিন পরে ফিরেছেন পেসার জসপ্রিত বুমরাহ। ব্যাটিংয়ে আছে তরুণ-অভিজ্ঞদের ভারসাম্যপূর্ণ কম্বিনেশন। বাবর আজমের নেতৃত্বে পাকিস্তানও বেশ ফুরফুরে মেজাজে আছে। ওয়ানডে শীর্ষে থাকা দলটির ব্যাটিংয়ে তরুণদের আধিক্য আর বোলিংয়ে শাহিন আফ্রিদির নেতৃত্বে অভিজ্ঞ বোলিং বিভাগ।

অন্যদিকে, ওয়ানডে ফরম্যাট সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে পছন্দের ফরম্যাট। যেখানে ২০১৫ বিশ্বকাপের পর থেকে ফরম্যাটটিতে টাইগাররা দারুণ ধারাবাহিকতা রক্ষা করে চলেছে। সেই ধারাবাহিকতায় সাকিব আল হাসানদের বিশ্বাস, তারা যেকোনো দলের বিপক্ষে যেকোনো কন্ডিশনে জিততে পারেন। তবে ওপেনিংয়ে চোটে থাকা তামিম ইকবাল এবং জ্বরে ভোগা লিটন দাসের জন্য দুশ্চিন্তায় আছে চন্ডিকা হাথুরুসিংহের দলটি। এছাড়া চোট ছিটকে দিয়েছে পেসার এবাদত হোসেনকেও।

ফর্মে থাকা শ্রীলঙ্কার কপালেও চিন্তার ভাঁজ তৈরি করেছে একের পর এক চোটের থাবা। লঙ্কান বোলিং বিভাগের বড় দুই শক্তির জায়গা ছিলেন দুশমান্থ চামিরা এবং ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। তাদের অনুপস্থিতি দাসুন শানাকার দলের শক্তি কমিয়ে দিয়েছে। এছাড়া করোনায় পজিটিভ হয়েছেন দেশটির আরও দুই ক্রিকেটার।

আফগানিস্তানের বড় শক্তির জায়গা স্পিন বিভাগ। রশিদ খান, মুজিব-উর রহমান ও নুর আহমেদ প্রতিপক্ষের বড় চিন্তার কারণ হয়ে উঠতে পারে। এছাড়া ব্যাটিংয়েও তাদের বেশ সামর্থ্যের প্রমাণ মিলেছে। নতুন করে আসরটিতে যুক্ত হওয়া নেপালের সময়টাও স্বপ্নের মতো। অভিজ্ঞতা ও শক্তির দিক থেকে তারা অনেক পিছিয়ে থাকলেও, যেকোনো অঘটন ঘটলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না!

২০১৮ সাল থেকে ওয়ানডে ম্যাচের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, টুর্নামেন্টে অংশগ্রহনকারী ছয় দলের মধ্যে সবচেয়ে সফল হচ্ছে ভারত ও বাংলাদেশ। বিগত ৫ বছরের পরিসংখ্যানে ভারতের জয়ের হার ৬১.৯০ শতাংশ। এই সময়ে মোট ৮৪টি ম্যাচে অংশ নিয়ে ভারত জয় পেয়েছে ৫২টি ম্যাচে। অপরদিকে বাংলাদেশের জয়ের হার ৫৯.০৯ শতাংশ। ৬৬টি ম্যাচ খেলে ৩৯টিতে জয় পেয়েছে টাইগাররা।

৫৭টি ম্যাচে অংশ নিয়ে ৩০ ম্যাচে জয় পাওয়া পাকিস্তানের জয়ের হার ৫২.৬৩ শতাংশ। ৭১ ম্যাচে অংশ নিয়ে শ্রীলংকা জয় পেয়েছে ৩১টি ম্যাচে, জয়ের হার ৪৩.৬৬ শতাংশ। আফগানিস্তানের জয়ের হার ৪০.৯০ শতাংশ। তারা ৪৪টি ম্যাচ খেলে জিতেছে ১৮টিতে।

এদিকে, আসন্ন টুর্নামেন্টে কোন একটি দলকে ফেভারিট বলতে রাজি নন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক ও কিংবদন্তী ফাস্ট বোলার ওয়াসিম আকরাম। তিনি বলেছেন, ‘সবগুলো দলের জন্যই এই টুর্নামেন্টটি বেশ কঠিন হবে।’ সেইসঙ্গে তিনি এটিও বলেছেন, ‘আসরে হালকাভাবে নেওয়া যাবে না বাংলাদেশ ও শ্রীলংকাকেও। কারণ ট্রফি জয়ের মতো ক্ষমতা দুই দলেরই রয়েছে।’

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS