রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:১০ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ
বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে হস্তক্ষেপ: ৬ কোটি ডলার কিনল বাংলাদেশ ব্যাংক ৫ মাসে শুল্ক ও কর আদায়ে ঘাটতি ২৪ হাজার ৪৭ কোটি টাকা পূর্বাচলে বিএনপির জনসমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে উপজেলা তাঁতীদলের প্রস্তুতি সভা চুয়াডাঙ্গায় প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের কর্পোরেট জোন অফিসের শুভ উদ্বোধন ও উন্নয়ন সভা অনুষ্ঠিত পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকাকে উন্নয়নের মূলধারায় সম্পৃক্ত করতে হলে, তাদের নিজস্ব ভাষায় শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে, এবং জাবারাং এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে এবারও ফ্রিজ, এসি ও টিভিতে দেশসেরা ব্র্যান্ডের গৌরব অর্জন করলো ওয়ালটন রাণীনগরে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার ময়মনসিংহ বিভাগীয় পর্যায়ে আন্তঃকলেজ ফুটবল টুর্নামেন্ট ২০২৫ শুভ উদ্বোধন ময়মনসিংহে জেলা মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভা অনুষ্ঠিত বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত

ব্যাংক ঋণনির্ভরতা বিনিয়োগ ও মূল্যস্ফীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ১ জুন, ২০২৩
  • ১৯৮ Time View

আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বিশাল বাজেটে ঘাটতি পূরণে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে সরকার। এই ঋণ বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ এবং মূল্যস্ফীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশংকা প্রকাশ করেছে মেট্রপলিট্যান চেম্বার অফ কমার্স এণ্ড ইণ্ডাষ্ট্রী (এমসিসিআই)।

আজ বৃহস্পতিবার (১ জুন) রাতে পাঠানো এক বাজেট প্রতিক্রিয়ায় এই আশংকা প্রকাশ করেছে সংগঠনটি। এর আগে একইদিন বিকালে অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল জাতীয় সংসদে আগামী অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন।

এমসিসিআই বলেছে, ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে সরকারের ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা হলো ১৩২,৩৯৫ কোটি টাকা, যা ২০২২-২৩ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট (১১৫,৪২৫ কোটি টাকা) থেকে ১৪.৭০ শতাংশ বেশী। ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে সরকার দুই ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে পারে। প্রথমত, ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি অর্থনীতিতে একটি crowding out প্রভাব তৈরি করতে পারে, যার ফলে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগকারীদের জন্য তহবিলের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। দ্বিতীয়ত, সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ নিলে মূল্যস্ফীতির চাপ বাড়াতে পারে।

এমসিসিআইয়ের প্রতিক্রিয়ায় বলা হয়েছে,  জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা, যা বর্তমান বছরের চেয়ে ১৬.২০ শতাংশ বেশি। আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভ্যাট কর্তৃপক্ষকে ১ লাখ ৬৩ হাজার ৮৩৭ কোটি, আয়কর কর্তৃপক্ষকে ১ লাখ ৫৩ হাজার ২৬০ কোটি এবং শুল্ক কর্তৃপক্ষকে ১ লাখ ১২ হাজার ৯০৩ কোটি টাকা সংগ্রহ করতে হবে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। তবে বাজেটকে সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে হলে বাজেট ব্যবস্থাপনার গতিশীলতা, কর নীতি সংস্কার,  কর ব্যবস্থার অটোমেশন, কর সংগ্রহে সামগ্রিক সিস্টেম লস কমানো এবং কর প্রশাসনের সক্ষমতা বৃদ্ধি তথা জনগণের যথাযথ সেবা প্রদানে আরো  মনোযোগী হতে হবে।

চেম্বার মনে করে যে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে গরীবমুখী ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির উপর অধিকতর নজর দেওয়া উচিত। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর মাধ্যমে দরিদ্র মানুষদের সহায়তার পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করা উচিত। প্রস্তাবিত বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর জন্য প্রস্তাবিত বরাদ্দ ১২৬,২৭২ কোটি টাকা, যা ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১১৩,৫৭৬ কোটি টাকা ছিল, এই খাতে ১২,৬৯৬ কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে। এমসিসিআই এই খাতে বরাদ্দ যৌক্তিকভাবে বাড়ানো প্রয়োজন মনে করছে।

এমসিসিআই বিশ্বাস করে যে, অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা ও অবকাঠামো, ইউটিলিটির সুষম বন্টনব্যবস্থা এবং আমলাতান্ত্রিক জটিলতা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য এখনো প্রধান অন্তরায় হিসেবেই থাকছে। এছাড়াও, দুর্বল রাজস্ব আদায় ব্যবস্থা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) বাস্তবায়নের নিম্ন হার অর্থনীতির জন্য উদ্বেগের কারণ। সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার জন্য উচ্চ আমদানি প্রবণতা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বিপর্যয় বিবেচনা করে আমাদেরকে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। বিদ্যুৎ, গ্যাস ও সারের দামে উচ্চ ভর্তুকি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, অন্যথায় ভর্তুকি ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে আরো বৃদ্ধি পাবে বলে এমসিসিআই মনে করে।

কর্পোরেট কর হারের ক্ষেত্রে নগদ লেনদেনের শর্তাবলী পুনর্বিবেচনা বিষয়ে কোনো প্রস্তাবনা না থাকায় এমসিসিআই হতাশা ব্যক্ত করছে। বাংলাদেশের ৮০ শতাংশ অপ্রাতিষ্ঠানিক অর্থনীতির (Informal Economy) বিবেচনায় এই ধরনের শর্তাবলী সামঞ্জ্যপূর্ণ নয়। অপরদিকে, চেম্বার কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে এমন নির্মাণ, অবকাঠামো, ইত্যাদি পরিষেবাতে উৎসে কর কর্তনের (টিডিএস) হার কমানোর পরামর্শ দিচ্ছে। তদুপরি বাংলাদেশে কার্যকরী করহার অত্যন্ত বেশী। উৎসে কর কর্তনের (টিডিএস) হারকে যৌক্তিকীকরণের মাধ্যমে কার্যকরী করহার কমানোর জন্য যুগোপযোগী একটি পদক্ষেপ চেম্বার আশা করে।

করমুক্ত আয়কর সীমা ব্যতিরেকে সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে ন্যূনতম কর দুই হাজার টাকা প্রদান করে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়া, আয়কর দাতাদের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। একই সাথে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পখাতকে (এসএমই) প্রাতিষ্ঠানিক খাতে রূপান্তরের প্রক্রিয়াকে এই করহার বাধাগ্রস্ত করবে বলে চেম্বার মনে করে। সুতরাং, অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতসমূহে এই করহার পুনঃবিবেচনা করার জন্য এমসিসিআই পরামর্শ দিচ্ছে।

অপরপক্ষে, কর আদায়করণকে সহজীকরণের লক্ষ্যে “কর প্রতিনিধি” নিয়োগ আয়কর আইনে সন্নিবেশিত বিধান বাস্তবায়নের পূর্বে বিস্তারিত বিশ্লেষণ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে করার জন্য এমসিসিআই পরামর্শ প্রদান করছে। কর প্রতিনিধিগণকে স্বচ্ছতার সাথে প্রয়োজনীয় ব্রিফিং, প্রশিক্ষণ ও নির্দেশনা দেওয়া প্রয়োজন বলেও এমসিসিআই মনে করছে। অন্যথায় করপ্রদানকারী ও করআদায়কারীর মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটার আশংকা রয়েছে।

এমসিসিআই রপ্তানিমুখী শিল্পের বিকাশে সরকারের পদক্ষেপসমূহের প্রশংসা করছে। সকল রপ্তানীমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানের উৎসে কর কর্তনের (টিডিএস) হার ১% থেকে কমিয়ে ০.৫০% করলে রপ্তানীমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহ অনেকাংশে লাভবান হতো বলে চেম্বার বিশ্বাস করে। বর্তমান বিশ্বঅর্থনীতিতে বাংলাদেশের রপ্তানি বিবেচনায় টিডিএস-এর হার যৌক্তিকীকরণ করা প্রয়োজন বলে এমসিসিআই মনে করে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS