ফল আর সবজি আমাদের শরীরের জন্য উপকারী তা আমরা সবাই জানি। কিন্তু আপনি কি জানেন যে নির্দিষ্ট মসলারও অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে! এমনই এক জাদুকরী মশলা আদা।
আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে, আদা সব রোগের এক মহাষৌধ হিসেবে কাজ করে। কীভাবে তা কি জানেন? আপনি যখন প্রতিদিন আদা খান, তখন আপনার শরীরে পরিবর্তন ঘটতে শুরু করে। ঠিক কী ধরনের পরিবর্তন ঘটে আসুন জেনে নিই আজকের আয়োজনে-
আদা খুব শক্তিশালী একটি মশলা। আদা যদিও খুব সুস্বাদু নয়, তবে এর রয়েছে অনেক ঔষধি গুণ। আদার মধ্যে রয়েছে জিঞ্জেরল, শোগাওল, জিঞ্জিবেরিন এবং প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং খনিজ। আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রে আদা প্রায় সব ধরনের রোগ নিরাময়ে ব্যবহৃত হয়। নিয়মিত আদা খাওয়ার অভ্যাস আপনার শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
আদার মধ্যে জিঞ্জেরল রয়েছে, একটি জৈব-সক্রিয় পদার্থ যা বমি বমি ভাব এবং বমি হওয়ার মতো উপসর্গ কমাতে সাহায্য করে। এই পদার্থটি ফোলা জয়েন্টগুলো কমাতেও সাহায্য করে। এটি ক্যানসার এবং হৃদরোগের বিরুদ্ধেও শরীরে কাজ করে।
আদা হজমের জন্য বিশেষভাবে ভালো। আদার একটি অ্যান্টি-ডায়াবেটিক প্রভাব রয়েছে। এটি মস্তিষ্কের কার্যকারিতা এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করে।
প্রতিদিন আদা খাওয়ার অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। প্রতিদিন ১.৫ সেন্টিমিটার সাইজের একটি আদা খাওয়ার অভ্যাস করলে-
১. এটি আপনার ত্বককে কুচকে যেতে দেবে না।
২. এতে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান শরীরে প্রদাহ দ্রুত দূর করে।
৩. প্রতিদিন আদা খেলে বমি বমি ভাব কমে যাবে। বিশেষ করে গর্ভবতী নারী এবং কেমোথেরাপি নিচ্ছেন এমন রোগী এর থেকে উপকৃত হতে পারেন।
৪. আদা পেশীর ব্যথা কমাতে দারুণ কার্যকর। এটি মেয়েদের পিরিয়ডের তীব্র ব্যাথা কমাতেও সাহায্য করে।
৫. আপনি যদি দীর্ঘদিন কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগে থাকেন তাহলে নিয়মিত আদা খাওয়ার অভ্যাস করুন। প্রতিদিন আদা খাওয়ার অভ্যাস আপনার মলত্যাগের গতি বাড়িয়ে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
৬. এক মাস ধরে প্রতিদিন আদা খাওয়ার অভ্যাস শরীরের ‘খারাপ’ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করতে পারে। আদার মধ্যে থাকা বিশেষ উপাদান রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইডের পরিমাণ কমায়।
৭. আদার মধ্যে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে। আপনি ইতিমধ্যে ঠান্ডা বা ভাইরাস দ্বারা প্রভাবিত হয়ে থাকলে আদা আপনাকে দ্রুত পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করবে।
৮. বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমাশয় কিংবা পেটের বিভিন্ন রোগ, হাঁপানি ও ফুসফুসের সমস্যায়, অস্টিওআর্থ্রাইটিস, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, হাড়ের জয়েন্টের ব্যথা, হৃদরোগ, জ্বর, মাইগ্রেন, সাইনাস, গলা ও মাথাব্যথা, কফ-কাশি-উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ এমনকি পাকস্থরি-লিভার-ত্বকের সুরক্ষাতে দারুণ কার্যকরী আদা।
তাই পরিবার ও নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে প্রতিদিন এক টুকরো আদা খাওয়ার অভ্যাস করুন।
-আজতাক বাংলা
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply