বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৫৯ অপরাহ্ন

তুহিনের হত্যাকারীদের বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৩

                 
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ তরুন মেধাবী ছাত্র শাহ কামাল তুহিনের হত্যাকারী আজাহার ও তার সহযোগীদের বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন মুন্সীগঞ্জবাসী। ১৮ এপ্রিল মঙ্গলবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে মওলানা আকরাম খাঁ হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নিহত তুহিনের পিতা মোঃ শাহ আলম সরকার ওরফে আলমগীর সরকার তুহিনের মা বিউটি বেগম, মামা আরিফুর রহমান মিলন ও মোল্লাকান্দি ইউনিযনের চেয়ারম্যান রিপন পাটোয়ারী ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরহাদ খান প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে নিহত শাহ কামাল তুহিনের পিতা মোঃ আলম সরকার (আলমগীর সরকার) হত্যাকান্ডের লিখিত বক্তব্যে বলেন হৃদয়ের বেদনা নিয়ে জানাচ্ছি যে, আমার পুত্র তরুণ মেধাবী ছাত্র শাহ কামাল তুহিন (২৫), সাং- হাজী কেয়ালী রোড ফাজিল সরদার গলি পুকুরপাড়, পোঃ ফরিদাবাদ কদমতলী, ঢাকা। বর্তমানে সাং- মোল্লাকান্দি পোঃ-চর ডুমুরিয়া, থানা ও জেলা মুন্সীগঞ্জ। আমার ভাইয়ের ছেলে ফাহাদ (২৮) পিতা ফেরদৌস সরকার এবং আমার নাতী সবুজ (৩১) পিতাঃ বাতেন মিজি সহ টঙ্গীবাড়ী থানাধীন পুরা ডিসি উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে আমার ভাগ্নির স্বামী দুদু মিয়ার বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার পথে ১৩ মার্চ ২০২৩ সন্ধ্যা ৭-৪৫ মিনিটের সময় পুরা ডিসি উচ্চ বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনের পিছনে জনৈক ইসমাইল হোসেন খান বাবুর বালি ভরাটকৃত মাঠে পৌছানো মাত্র পূর্ব বিরোধকে কেন্দ্র করে আজাহারের নির্দেশে ২৫ জন একযোগে শাহ কামাল তুহিনকে সশস্ত্র আক্রমণ করে। আজাহার ও তাঁর ২৫ সহযোগী পূর্ব-পরিকল্পিতভাবে হত্যাকান্ড সংঘঠিত করার উদ্দেশ্যে রামদা, লোহার রড, চাইনিজ কুড়াল, চাঁপাতি, বাঁশের লাঠি, কাঠের ডাসা ও ককটেল সহ দেশীয় অস্ত্রে সজ্জীত হয়ে আজাহার মোল্লার হুকুমে বাবু কাজীর হাতে থাকা ধারালো রামদা দিয়ে আমার ছেলে শাহ কামাল তুহিনের মাথা লক্ষ্য করে হত্যা করার জন্য কোপ মারিলে মাথার উপরি ভাগে লাগলে গুরুতর জখম হয়। আজাহারের আরেক সহযোগী সিফাত সরদারের হাতে থাকা চাইনিজ কুড়াল দিয়ে মাথায় আবার আঘাত করলে আরো গুরুতর জখম হয়, আজাহারের আরেক সহযোগী সানি সরদার তার হাতে থাকা চাপাতি দিয়ে পিঠের নীচে আঘাত করলে গুরুত্বর জখম হয়। এরপর মাহমুদ্ উল্লাহ নামে আরেক জন লোহার রড দিয়ে তুহিনের ঘাড়ে বারবার আঘাত করলে ঘাড়ের রগ ছিড়ে রক্ত ঝরতে থাকে। জাকির ও নাজির নামে দুই জনের হাতে থাকা বাঁশের লাঠি ও তারকাটা যুক্ত কাঠের ডাসা দিয়ে পিঠে আঘাত করলে তারকাটা পিঠে ডুকে যায়। বারবার আক্রমণ ও আঘাতের ফলে এক পর্যায়ে শাহ কামাল তুহিন মাটিতে লুটিয়ে পড়লে জিয়া সরদার, শওকত দেওয়ান (মোক্তার হোসেন দেওয়ান), কামাল কাজী, রানা, অনিক, দরবার খান, নুরুদ্দিন, আইনুদ্দিন খান আমার ছেলে শাহ কামাল খান তুহিনের পিঠে, গলায় পেটে পারা দিয়া নাচঁতে থাকে। আমার ছেলে শাহ কামাল আক্রমণকারীদের কাছ থেকে ছুটে যাওয়ার চেষ্টা করলে আমানুউল্লাহ ও রহমত উল্লাহ তার পথরোধ করে রাখে এবং অন্য আরো সহযোগীরা আমার ছেলেকে বাচাঁতে আসলে ভাতিজা ফাহাদ ও নাতী সবুজকে এলোপাথাড়ী কিল ঘুষি ও লাথি মারিয়া তাদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলাফুলা জখম করে। পরে আমার ছেলে মারা গেছে মনে করিয়া চলে যায় এবং যাওয়ার সময় হৈ হুল্লোড় করিয়া নাচতে থাকে এবং বীরদর্পে ঘটনা স্থল ত্যাগ করে। পরে আমার ছেলেকে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় ও ভাতিজা ফাহাদ, নাতী সবুজ উদ্ধার করে মুন্সীগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য রেফার্ড করলে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়। সেখান থেকে আবার ল্যাব এইড হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। ল্যাব এইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় ১৪ মার্চ বেলা ১২.২৩ মিনিটে শাহ কামাল তুহিন মৃত্যুবরণ করে। পরে পোস্টমর্টেম রিপোর্ট হাতে নিয়ে আমার ভাতিজা ফাহাদ ও নাতী সবুজের কাছ থেকে সব শুনে ১৮ মার্চ কিছুটা বিলম্বে ২৫ জনের নামে মামলা করি কিন্তু দুঃখের বিষয় আসামীরা হাইকোর্ট থেকে ২৪ দিনের জামিন নিয়ে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং বাদীকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরহাদ খান ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রিপন পাটোয়ারী বলেন আজাহার ও তার সহযোগীরা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় ত্রাসের সৃষ্টি করে রেখেছে তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে ১৭ থেকে ১৮ টি মামলা। এই সন্ত্রাসী আজাহার গং রাজনৈতিক ভাবে প্রভাব বিস্তার করতে গিয়ে শুধুমাত্র বিরোধীতার কারণে একাধিক খুন খারাবী করেছে, এলাকায় একের পর এক ত্রাস সৃষ্টি করছে। নিহতের মামা আরিফুর রহমান মিলন বলেন, মেধাবী ছাত্র শাহ কামাল তুহিন নিরীহ প্রকৃতির ছেলে ছিল এবং ইটালি চলে যাবার ভিসাও  হয়েছিল কিন্তু দূঃখজনক তার আগেই সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিল। মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব রিপন পাটোয়ারী বলেন, এই হত্যাকান্ডে জড়িত সকল সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় এনে কঠোর থেকে কঠোরতম শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে সবাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপির দৃষ্টি আকর্ষণ করে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বন্ধ ও হত্যাকারী আজাহার সহ তার সহযোগীদের বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS