গৃহায়ণ ও গণপূর্ত এবং শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেছেন, সকল ধর্মের মানুষ একত্রিত হয়ে বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে পারে। বাংলাদেশের কোন মানুষ, কোনো নাগরিক যেন আর নিজেকে বঞ্চিত মনে না করেন। তাঁরা সমাজের মূল ধারার বাইরে আছেন সেটাও যেন তারা না ভাবেন। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সেটাই বাস্তবায়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ সকলের ও বহুমাত্রিক দেশ। সকল ধর্মের মানুষ, সকল ভাষাগত ও নৃগোষ্ঠীর মানুষ একত্রে বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে পারে।
আজ শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) রাজধানীর উত্তরায় বৌদ্ধ মহাবিহার চত্বরে বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতি ঢাকা অঞ্চলের উদ্যোগে আয়োজিত ‘বাংলাদেশ বৌদ্ধ সর্বজনীন মহাশ্মশানের ভিত্তি স্থাপন’অনুষ্ঠানে আদিলুর রহমান খান এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতি ঢাকা অঞ্চলের সভাপতি দীপাল চন্দ্র বড়ুয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন, শ্রীলঙ্কার হাইকমিশনার মি. ধর্মপালা ওইয়ারাকোদ্দি, নরওয়ের রাষ্ট্রদূত হাকন অ্যারাল্ড গুলব্রানসেন ও রাজউকের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. ছিদ্দিকুর রহমান সরকার।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বৌদ্ধ মহাবিহারের অধ্যক্ষ মুদিতাপাল থেরো, বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতির ঢাকা অঞ্চলের সাধারণ সম্পাদক স্বপন বড়ুয়া চৌধুরী, দীপ্তিময় বড়ুয়া সেলু, দেবাশীষ বড়ুয়াসহ বৌদ্ধ নেতারা।
আদিলুর রহমান খান আরও বলেন, “জুলাইয়ের ৩৬ দিন সমস্ত ধর্মের তরুণ- যুবকেরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে রক্ত দিয়েছেন। বাংলাদেশকে নিয়ে তাঁরা যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেটার কিছু বাস্তবায়নের দায়িত্ব আমরা পেয়েছি। তা পালনের চেষ্টা করছি। এক্ষত্রে আপনারা আমাদের পাশে থাকবেন।”
আদিলুর রহমান খান আরও বলেন, আমরা চেষ্টা করছি যেসব কাজ বাকি আছে, দীর্ঘদিন ধরে পড়ে আছে সেগুলো এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা যে কাজগুলো করার চেষ্টা করেছি এবং যে কাজগুলো বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছি, তার মধ্যে সকলের মধ্যে সমতা প্রতিষ্ঠা অন্যতম।
ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, প্রাচীনকালে বহুবছর ধরে আমাদের জনপদ বৌদ্ধদের শাসনাধীনে ছিল। নেপালের লুম্বিনীতে বাংলাদেশর অর্থায়নে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ও বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় একটি বৌদ্ধ বিহার ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপনে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে এ প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদিত হয়েছে।
ধর্ম উপদেষ্টা এসময় সকলকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য সমুন্নত রেখে পরস্পরের হাত ধরে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার অনুরোধ জানান। এছাড়া তিনি বৌদ্ধ মহাশ্মশানের সীমানা প্রাচীর ও চুল্লি স্থাপনে ধর্ম, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত এবং পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের যৌথ ব্যবস্থাপনায় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের আশ্বাস দেন।
মেজর জেনারেল (অব.) মো. ছিদ্দিকুর রহমান সরকার বলেন, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মহোদয় দেড় মাস আগে নির্দেশ দিয়েছিলেন, মহাশ্মশানের জন্য জায়গা দিতে হবে। আমরা এক সপ্তাহের মধ্যে জায়গার ব্যবস্থা করেছি।
উল্লেখ্য, অন্তর্বর্তী সরকার প্রথমবারের মতো বৌদ্ধদের মহাশ্মশানের জন্য জায়গা বরাদ্দ দিয়েছে। নির্দিষ্টস্থানে ঢাকাবাসী বৌদ্ধদের অন্তিম শেষকৃত্য (শবদাহ) করার জন্য রাজউক ঢাকার উত্তরায় ১৬ নম্বর সেক্টরে ২৩ (তেইশ) কাঠার প্লট বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতির অনুকূলে বরাদ্দ দিয়েছে।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply