সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:২৯ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ
ভৈরবে মাদক সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ ১০ দফা দাবিতে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের মানববন্ধন মাইগ্রেশনের দাবি আইচি মেডিকেলের ১৫০ শিক্ষার্থীর ভৈরবে হাসপাতালে ভর্তির পর খোঁজ নেননি পরিবার, ৪৮দিন পর ব্যক্তির মৃত্যু আইবিটিআরএ-তে ‘সার্টিফিকেশন কোর্স অন ট্রেজারি ডিলিংস’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালা শুরু শহীদ ছাত্র জনতার আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও আলোচনা সভা চকবাজার থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের বিক্ষোভ মিছিল সিলেটে তাপমাত্রা ৩৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের আয়োজনে ‘ইনভেস্টমেন্ট অপারেশনস্ অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ মেট্রোরেলে ১৮ দিনে আয় ২০ কোটি টাকা

মাইগ্রেশনের দাবি আইচি মেডিকেলের ১৫০ শিক্ষার্থীর

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৩৯ Time View

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ছয় বছরেও মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে ব্যর্থ হওয়া, কলেজ কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন অনিয়ম, জালিয়াতি, দুর্নীতি ও অবহেলাসহ মাইগ্রেশন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্তকরণে অসাধু উপায় অবলম্বনের অভিযোগ তুলেছেন রাজধানীর বেসরকারি আইচি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে অন্যত্র মাইগ্রেশনের দাবিও জানিয়েছেন তারা।

রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে দ্রুত মাইগ্রেশন চেয়ে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন কলেজটির শিক্ষার্থীরা। এ সময় ২০১৮-১৯ থেকে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির ১৫০ জনের অধিক শিক্ষার্থীর জীবন এখন অনিশ্চয়তা এবং সংকটাপন্ন অবস্থায় রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তারা।

সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষার্থীদের মাইগ্রেশনের অনাপত্তিপত্র দিলেও শিক্ষার্থীরা জানান, মাইগ্রেশন ঠেকাতে নানা টালবাহানা শুরু করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। তাদের অভিযোগ, এ বছরের জুন মাস থেকে সব ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম বর্জন করে আসছেন। তাতেও মালিক পক্ষের কোন সাড়া পাওয়ায় তারা আগস্ট মাসে তাদের কাছে কলেজের অনুমোদনের ব্যাপারে উদাসীন কেন জানতে চান। তারা তাদের ভবিষ্যতের কথা তুলে ধরলে আইচি মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ কলেজের অনুমোদনের ব্যাপারে ২৮ আগস্ট অপরাগতা প্রকাশ করে। শিক্ষার্থীদের অন্য কলেজের মাইগ্রেশনে তাদের কোন আপত্তি নেই বলে জানায়।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীদের পক্ষে শাফিন আহমেদ বলেন, বেসরকারি আইচি মেডিকেল কলেজ ২০১৩ সালে ঢাকার উত্তরায় প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠাকাল থেকে প্রথম তিন ব্যাচ ভর্তি করিয়ে এমবিবিএস নীতিমালা অনুযায়ী সাময়িক অনুমোদন পায়। কলেজের যথেষ্ট মানোন্নয়ন না করায় বেসরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপনা ও পরিচালনা নীতিমালা-২০১১ (সংশোধিত) বাস্তবায়নের জন্যে আইচি মেডিকেল কলেজকে কিছু শর্তারোপ করা হয়। কিন্ত তা প্রতিপালনকালে ব্যর্থ হওয়ায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়আইচি মেডিকেল কলেজকে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে এমবিবিএস কোর্সে ভর্তি কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ করে। পরবর্তী সময়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে দুজন, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ৪৯ জন, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ৪৯ জন, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে ৪৯ শিক্ষার্থী ভর্তি করান। যদিও অটোমেশন পদ্ধতির কারণে দুই ব্যাচ ২০২২-২৩ ও ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে পারেননি।

কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ করে তিনি বলেন, ভর্তির সময়ে বিভিন্ন ডকুমেন্টে আমাদের স্বাক্ষর নেওয়া হয়। ভর্তির কিছুদিন পর জানতে পারি স্বাক্ষর করা বেশিরভাগ কাগজপত্রই ভুয়া ছিল। স্বাক্ষর নিতে বিভিন্ন মিথ্যা তথ্য, অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। কলেজের অনুমোদনের ব্যাপারে জানার পর ২০২০ সাল থেকেই আমরা অনুমোদন ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে কলেজ কর্তৃপক্ষকে বারবার তাগাদা দিয়েছি। কিন্তু কর্তৃপক্ষ থেকে কোনো সাড়া দেয়নি। অনুমোদনের ব্যাপারে তৎকালীন অধ্যক্ষের কাছে জানতে চাইলে, তিনি বিভিন্ন হুমকি-ধামকি দিয়ে শিক্ষার্থীদের দমিয়ে রাখতেন।

আন্দোলন দমনে বল প্রয়োগের অভিযোগ করে তারা বলেন, অনুমোদন ফিরিয়ে আনতে ধারাবাহিক আন্দোলন ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে তীব্র আকার ধারণ করলে ১৮ ফেব্রুয়ারি কলেজ কর্তৃপক্ষ আন্দোলন দমন করতে ভাড়াটে গুন্ডা দিয়ে কলেজ ক্যাম্পাসে মেয়ে শিক্ষার্থীদের শ্লীলতাহানি, হত্যার হুমকি ও দেশীয় অস্ত্র সহকারে আক্রমণ করে। এ সময় অভিভাবকসহ প্রায় ২০ জন আহত হন। যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়। তারপরেও কলেজ প্রাঙ্গণকে ভালোবেসে এবং ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে মালিকপক্ষের অনুরোধে স্টাম্প কাগজে শর্তাবলিসহ অনুমোদন ফিরিয়ে আনতে ছয় মাস সময় নিয়ে স্বাক্ষর করে। বরাবরের মতোই তা প্রতিপালনে ব্যর্থ হয়। অনুমোদন ফিরিয়ে আনতে ছয় মাসের কথা থাকলেও দেড় বছরের অধিক সময় নিয়েও কলেজের উন্নয়নসহ অন্যান্য শর্তাবলির কোনো তোয়াক্কা করেনি। এতে আমাদের শিক্ষাজীবন হুমকির মুখে।

শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অধ্যক্ষ মিথ্যাচার করছে উল্লেখ করে বলা হয়, গত ১৯ সেপ্টেম্বর কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ডা. তানজিমা বেগম মেডিকেল কমিউনিটির অনলাইন পোর্টাল ‘মেডিভয়েজ’ কে বলেছেন, কলেজ কর্তৃপক্ষ মাইগ্রেশন দিতে যে অনাপত্তিপত্র জারি করেছেন তা মালিকপক্ষকে ‘গানপয়েন্টে’ রেখে শিক্ষার্থীরা স্বাক্ষর নিয়েছে। এধরনের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। যার প্রমাণ আমাদের কাছে আছে। তিনি গানপয়েন্ট বলতে কী বুঝিয়েছেন? আমরা গান (অস্ত্র) ঠেকিয়ে কর্তৃপক্ষকে স্বাক্ষর করিয়েছি? এমন কাণ্ড ঘটায় সন্ত্রাসীরা। তিনি কি আমাদের সন্ত্রাসী তকমা দিচ্ছেন? আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং সে শিক্ষককে আমরা বর্জন করছি। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তিনি শিক্ষার্থীদের কাছে তার স্টেটমেন্টের পক্ষে প্রমাণ দেবেন, অন্যতায় তার বিরুদ্ধে আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মন্ত্রণালয় থেকে মাইগ্রেশনের জন্য তাদের কাছে বিভিন্ন ডকুমেন্ট চাইলে তারা যথাসময়ে তা জমা দিয়েছেন। কিন্তু অতি সম্প্রতি কলেজ কর্তৃপক্ষ উদাসীনতা শুরু করেছে। গুটিকয়েক শিক্ষক বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে মাইগ্রেশনকামী শিক্ষার্থীদের কলেজে রাখার প্রচেষ্টা শুরু করেছে বলে অভিযোগ তাদের।

জানা গেছে, ২০১৭ সালে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপনা ও পরিচালনা নীতিমালা-২০১১ (সংশোধিত) এর বাস্তবায়নের জন্য কলেজটিকে কিছু শর্তারোপ করে। এটি পালনে ব্যর্থ হওয়ায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে আইচি মেডিকেল কলেজকে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে এমবিবিএস কোর্সে কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ করার বিষয়ে চিঠি দেয়।

পরে এ নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে মন্ত্রণালয়ের জারি করা সাময়িক ভর্তি স্থগিতাদেশকে চ্যালেঞ্জ করে একটি রিট আবেদন করে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি করায়। কিন্তু ওই ছাত্র-ছাত্রীরা বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল কর্তৃক রেজিস্ট্রেশন ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক তালিকাভুক্ত হননি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2024 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS