মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৫৭ পূর্বাহ্ন

সব শ্রেণির পাঠ্যবই পরিমার্জিত হচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ১১২ Time View

অভিভাবক, শিক্ষক ও শিক্ষাবিদ—সবার মতামত উপেক্ষা করেই নতুন কারিকুলাম চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। পাঠ্যবইয়ে ইচ্ছেমতো বিষয়বস্তু প্রকাশ করা হয়েছে। শিক্ষা ও নৈতিকতা বাদ দিয়ে ‘রাজনৈতিক’ বিবেচনায় তৈরি করা হয়েছিল পাঠ্যবই।

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বইয়ের নানা অসংগতি বাদ দিয়ে বইয়ের পরিমার্জনের কাজ শুরু হয়েছে। দ্রুতগতিতেই চলছে এই কাজ। শিক্ষাবিদরা বলছেন, আওয়ামী লীগ সরকার পাঠ্যবইয়ে ইতিহাস বিকৃত করে ছাপিয়েছে। সেগুলো সংশোধন ছাড়া কোনোভাবেই প্রকাশযোগ্য নয়। তাই বই পরিমার্জন করা জরুরি। বিকৃত ও ভুল তথ্য সংযোজিত বই আগে দেওয়ার চেয়ে পরিমার্জিত বই দেরিতে দেওয়াও ভালো।

২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের একাদশের ক্লাস শুরু হয়েছে। তবে এখনো ছাপা হয়নি উচ্চমাধ্যমিকের পাঠ্যবই। মেলেনি সিলেবাসও। এ স্তরের পাঠ্যবইয়ে পরিমার্জনের কাজ চলমান থাকায় বই পেতে আরও বেশ কিছু দিন অপেক্ষা করতে হবে।

চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে বইয়ের পরিমার্জনের কাজ শেষ করে পাণ্ডুলিপি প্রেসে পাঠানো যাবে বলে জানিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। উচ্চমাধ্যমিকে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের বিষয়গুলো বাদে বাংলা, ইংরেজি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি—এ তিনটি বিষয়ের চারটি পাঠ্যবই জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃক প্রণীত হয়ে থাকে। সর্বশেষ ২০১৪ সাল থেকে বাংলা সাহিত্য পাঠ ও সহজপাঠ, ২০১৫ সাল থেকে ইংলিশ ফর টুডে এবং ২০২১-এ প্রণীত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বই এখনো শিক্ষার্থীদের পাঠ্য। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর উদ্যোগ নেয় পরিমার্জনের। বাংলা বইয়ের কাজ শেষ হলেও বাকি এখনো ইংরেজি ও আইসিটি।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান এ কে এম রিয়াজুল হাসান বলেন, আমাদের নতুন শিক্ষাক্রমের বইও প্রস্তুত আছে। কনটেন্টের কিছু বিষয় পরিবর্তন হবে। চলমান শিক্ষাক্রমের বইয়ের সেনসিটিভ বিষয়গুলো বাদ দেওয়ার জন্য একটি টিম কাজ করছে। বইয়ের প্রচ্ছদসহ ভেতরের ছবিসহ অনেক কিছুই পরিবর্তন করতে হবে। যারা শিক্ষাক্রম বিষয়ে কথা বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক তারাও এ পরিমার্জনের কাজে জড়িত রয়েছেন।

তথ্য অনুযায়ী, প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত নতুন শিক্ষাক্রম অনুসারে বই পরিমার্জন করে আগামী বছর দেওয়া হবে। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের বর্তমান শিক্ষাক্রমের বই দেওয়া হলেও সেটি পরিমার্জন করে দেওয়া হবে। তবে নবম ও দশম শ্রেণিতে ২০১২ সালের শিক্ষাক্রমের সংশোধিত পাঠ্যবই দেওয়া হবে। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত কীভাবে প্রশ্নকাঠামো হবে, সে অনুযায়ী সিলেবাসও তৈরি করা হচ্ছে। প্রশ্নকাঠামো ও সিলেবাস ২০১২ সালের শিক্ষাক্রমের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। চলতি বছর নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা ২০২৬ সালে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা দেবে। এ বছর তারা নতুন শিক্ষাক্রমের আলোকে রচিত পাঠ্যবই পড়ছে। ষান্মাসিক মূল্যায়নে অংশ নিয়েছে। তবে বছরের শেষদিকে এ শিক্ষার্থীরা নতুন শিক্ষাক্রমের আলোকে রচিত বইয়ের ওপর আগের মতো সৃজনশীল পদ্ধতির পরীক্ষায় বসবে। আগামী বছর বই পরিবর্তন হবে। এমনকি আগের মতো বিভাগ বিভাজনও থাকবে। জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০১২-এর আলোকে প্রণীত সংশোধিত ও পরিমার্জিত পাঠ্যবই তাদের সরবরাহ করা হবে। সে কারণে তাদের ওপর বাড়তি চাপ এড়াতে ২০২৬ সালের এসএসসি পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে, সৃজনশীল পদ্ধতিতে হবে। নবম এবং দশম শ্রেণির বই আগে দুই বছর পড়ানো হতো। চলতি বছর সেটি আলাদা করে লেখা হয়েছিল। আগামী বছর থেকে দশম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রমের বই যাওয়ার কথা ছিল। তবে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা চলতি বছর নতুন শিক্ষাক্রমের বই পড়ছে। আগামী বছর তারা পড়বে আগের শিক্ষাক্রমের বই।

এনসিটিবি চেয়ারম্যান বলেন, আগামী বছর যারা দশম শ্রেণিতে উঠবে, তারা পুরোনো শিক্ষাক্রমের বই পড়বে। তাদের যে ঘাটতি হয়েছে, সেটি আমরা সিলেবাস কমিয়ে বা অন্য কোনো উপায়ে পরীক্ষা নেব। এখন যে বার্ষিক পরীক্ষা হবে, থিউরোটিক্যাল যে বিষয়গুলো কমানো হবে, তা তো বর্তমান নতুন বইতেও আছে। পুরোনো বইয়েও ছিল। এর সামঞ্জস্য দেখার জন্য আমরা নতুন একটি প্রশ্ন কাঠামো তৈরি করছি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2024 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS