হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি: হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার বিরাট গ্রামের কৃষক বেনু মিয়া এবার ধান পেয়েছিলেন পাঁচশ’ মনের বেশি। কিন্তু খোরাকের জন্য মাত্র ৫০ মন রেখে বাকি ধান মাঠ থেকেই বিক্রি করে দিয়েছেন। বেনু মিয়া বলেন, ঋণ করে ক্ষেত করেছি। ধান কাটার পরই পাওনাদার এসে বসে থাকে টাকার জন্য। তাই সব ধন বিক্রি করে দিয়ে পাওনা মিঠাইছি। লাভ বলতে ৫০ মন ধান সিদ্ধ দিয়ে ঘরে নিয়েছে, এটাই। বেনু মিয়ার মতো অবস্থা হাওরের অধিকাংশ কৃষকের। বোরো মৌসুমের শুরু থেকে ধান কাটা পর্যন্ত- যে টাকা খরচ হয়, পুরোটাই আনতে হয় ঋণ করে। ফলে ধান কেটে প্রথমেই শোধ করতে হয় ঋণের টাকা। যে কারণে বছরের খোরাক রেখে বাকি ধান মাঠ থেকে বিক্রি করে দিতে হয় কৃষকদের। কৃষকদের এই দুর্বলতার সুবিধা ভোগ করেন পাইকার ও ফরিয়ারা তারা মাঠ থেকেই কৃষকের কাছ থেকে কাচা ধান কিনে নেন।
সেই ধান মাঠ থেকেই পাঠিয়ে দেন উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় আন-চাল ব্যবসায়িদের তথ্যমতে, এরই মধ্যে জেলায় উৎপাদিত ধানের চার-তৃতীয়াংশ চলে গেছে পাইকার ও ফরিয়াদের হাতে। তাদের মাধ্যমে প্রতিদিন সড়ক পথে কয়েক হাজার টন ধান চলে যায় উত্তরের জেলা দিনাজপুর, নওগাঁ, কুষ্টিয়া এবং বগুড়াসহ বিভিন্ন জেলায়। আর আজমিরীগঞ্জে তিনটি নৌ-ঘাট থেকে প্রতিদিন ধান যায় আশুগঞ্জ মোকামে, ব্যবসায়িরা বলছেন, জেলায় উন্নতমানের চালকল না থাকা এবং উত্তরাঞ্চলে মোটা ধানের চাষ কম হওয়ায় হবিগঞ্জের ধানের বড় বাজার তৈরী হয়েছে উত্তরবঙ্গে। এছাড়া হবিগঞ্জে ধান রাখার মতো বড় কোন গোদাম না থাকাও এর বড় কারণ বলছেন ব্যবসায়িরা ধান-চাল ব্যবসায়ি মিজানুর রহমান মিজান বলেন।
প্রতিদিন একশ ট্রাকের বেশি ধান বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে মূলত অটোমেটিক মেশিন না থাকায় ধানগুলো বাইরের জেলায় চলে যাচ্ছে তিনি বলেন, হবিগঞ্জে যে চালকলগুলো আছে সেগুলো খুবই পুরনো। সামান্য কিছু ধান ভাঙানোর সক্ষমতা আছে এগুলোর। অথচ উত্তরবঙ্গে যে চালকল আছে, সেগুলোতে একসাথে শতশত টন ধান ভাঙানো সম্ভব। এছাড়া এগুলো কাচা ধান থেকেই চাল হয়ে বেরিয়ে আসে যে কারণে বাধ্য হয়ে আমাদেরকে ধান উত্তর বঙ্গে পাঠানো লাগে।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply