বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ১১:০০ পূর্বাহ্ন

১০ ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি সাড়ে ৩১ হাজার কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : শুক্রবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ২৭৭ Time View

বিতরণ করা ঋণের গুণমান বিবেচনায় নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) হিসেবে জমা রাখতে হয় ব্যাংকগুলোকে। তবে চলতি বছরের জুন প্রান্তিক শেষে ১০টি ব্যাংক প্রভিশন রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। চার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকসহ এসব ব্যাংকের ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩১ হাজার ৫৪৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে ব্যাংকগুলোর ভঙ্গুর আর্থিক অবস্থার প্রতিচ্ছবি উঠে এসেছে।

ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্র মালিকানাধীন অগ্রণী ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক। আর বেসরকারি খাতের মধ্যে রয়েছে ন্যাশনাল ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক এবং আইএফআইসি ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, বেসরকারি খাতের নানা সমস্যায় জর্জরিত ন্যাশনাল ব্যাংক সবচেয়ে বেশি প্রভিশন ঘাটতির মুখে পড়েছে। ব্যাংকটির প্রভিশন বা নিরাপত্তা সঞ্চিতি ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৭০৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম মতে, ব্যাংকগুলোকে পরিচালন মুনাফার ০.৫ থেকে ৫ শতাংশ সাধারণ ক্যাটাগরির ঋণের বিপরীতে নিরাপত্তা সঞ্চিতি হিসেবে রাখতে হয়। আর নিম্নমানের খেলাপি ঋণের বিপরীতে রাখতে হয় ২০ শতাংশ। কোনো সন্দেহজনক খেলাপি ঋণের বিপরীতে রাখতে হয় ৫০ শতাংশ। তবে মন্দ বা লোকসান ক্যাটাগরির খেলাপি ঋণের বিপরীতে ১০০ শতাংশ নিরাপত্তা সঞ্চিতি আলাদা রাখতে হবে।

নিরাপত্তা সঞ্চিতি বা প্রভিশন ঘাটতি ব্যাংকিং খাতের জন্য একটি অশনি সংকেত। এটি ব্যাংকগুলোর দুর্বল আর্থিক অবস্থার চিত্র তুলে ধরে। যা মূলত একটি ব্যাংকের উচ্চ খেলাপি ঋণের ফল। জুন পর্যন্ত ব্যাংকিং খাতের সার্বিক প্রভিশন ঘাটতি ছিল ২৪ হাজার ৮১০ কোটি ৪৯ লাখ টাকা, যা ১০টি ব্যাংকের চেয়ে কম।

খাত সংশ্লিষ্টরা এবিষয়ে বলেন, ব্যাংকের বর্তমান যে অবস্থা তাতে প্রভিশন ঘাটতি হবে। দিন দিন খেলাপি ঋণ বাড়ছে। সম্প্রতি খেলাপি ঋণ ২ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। বিশেষ করে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে বেশি, তাই প্রভিশন ঘাটতি বাড়বে। শতভাগ প্রভিশন রাখা দরকার এখানে। প্রভিশন বাড়তে থাকলে ব্যাংক দুর্বল হয়ে পড়বে। প্রভিশন কমাতে হলে আগে খেলাপি ঋণ কমাতে হবে। পাশাপাশি ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে যাছাই-বাছাই করে দিতে হবে, যাতে টাকাগুলো আবার ফেরত আসে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ প্রতিবেদন বলছে, জুন শেষে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা, যা ব্যাংকিং খাতের মোট ঋণের ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ। মার্চ পর্যন্ত ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৮২ হাজার কোটি টাকা। সে হিসাবে তিন মাসে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে ২৯ হাজার কোটি টাকার বেশি। একই এ সময়ে ঋণ বিতরণ বেড়েছে ৪২ হাজার ৫৪১ কোটি টাকা।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2024 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS