প্রকৃতির এক বিস্ময়কর বীজের নাম কালোজিরা। একমাত্র মৃত্যু ছাড়া সব রোগের ওষুধ ধরা হয় কালোজিরাকে। বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (স.)-ও বলেছেন নিয়মিত এ বীজ খাওয়ার। কিন্তু কেন জানেন কী?
কালোজিরের মধ্যে রয়েছে নাইজেলোন, থাইমোকিনোন, লিনোলিক অ্যাসিড, ওলিক অ্যাসিড, ক্যালসিয়াম, আয়রন, জিংক, ম্যাগনেশিয়াম ,ফসফেট, সেলেনিয়াম, ভিটামিন-এ, ভিটামিন-বি, ভিটামিন-বি ২, নায়াসিন, ভিটামিন-সি, ফসফরাস, কার্বোহাইড্রেট। সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতে তাই নিয়মিত কালোজিরা খাওয়া প্রয়োজন।
কালোজিরা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে পরিপূর্ণ যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, কালোজিরায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলো ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ এবং স্থূলতাসহ বিভিন্ন ধরনের দীর্ঘস্থায়ী রোগ থেকে রক্ষা করতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিডনির সুস্থতায় নিয়মিত কালোজিরা খাওয়া দারুণ কাজ করে। এ খাবারটি নিয়মিত খেলে কিডনির ব্লাডার সুরক্ষিত থাকে। কিডনিতে জমে থাকা পাথরও দূর হয়।
শুধু তাই নয়, আরও নানা উপকারী গুণ রয়েছে কালোজিরার। এগুলো হলো-
১. উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে: উচ্চ রক্তচাপ থেকেই অনেক সময় হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের আশঙ্কা দেখা যায়। এটি নিয়ন্ত্রণে দারুণ কার্যকরী কালোজিরা। যেকোনো পানীয়ের সঙ্গে আধা চা চামচ কালোজিরা মিশিয়ে খেলেই তা নিয়ন্ত্রণে রাখবে উচ্চ রক্তচাপ।
২. হৃদরোগ প্রতিরোধে: যাদের হৃদরোগ আছে, তারা সুস্বাস্থ্য পেতে পান করুন কালোজিরা মেশানো দুধ। দুই বেলা এই দুধ দশদিন খাওয়ার পর এক বেলা করে খাবেন। হৃদরোগের কষ্ট কমার পাশাপাশি হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা এটি কমিয়ে আনবে অনেকটাই।
৩. শ্বাসকষ্ট সারাতে: অ্যাজমা এবং ক্রনিক কাশির সমস্যায় যারা ভোগেন তাদের ক্ষেত্রেও ওষুধের মতো কাজ করে কালোজিরা। সকালে নাশতা খাওয়ার আগে গরম পানিতে মধু আর কালোজিরা মিশিয়ে টানা ৪০ দিন খেলে শ্বাসকষ্ট দূর হবে। এই সময়টুকুতে অবশ্য ঠান্ডা থেকেও নিজেকে রাখতে হবে দূরে। এভাবে ৪০ দিন কাটাতে পারলে কাশি এবং শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তি মিলবে নিশ্চিতভাবেই।
৪. স্মৃতিশক্তি বাড়াতে: শিশু এবং বৃদ্ধ- যাদের কোনো কিছু মনে রাখতে সমস্যা হয়, তাদের জন্য দারুণ উপকারী কালোজিরা। কালোজিরা ফোটানো পানিতে লেবু ও পুদিনা মিশিয়ে খেলে তা স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করবে বহুগুণ। কালোজিরা ভর্তাও খেতে পারেন রোজ ভাতের সঙ্গে। এটিও মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করবে বহুগুণ।
৫. পাইলসের সমস্যা দূর করতে: কোষ্ঠকাঠিণ্যের সমস্যা যাদের আছে তারাই জানেন এটি কতটা কষ্টদায়ক। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে রং চায়ের সঙ্গে কালোজিরা মিশিয়ে খান প্রতিদিন।
৬. মুখের ব্রণ দূর করতে: দামি ক্রিম, ফেসওয়াশ আর বিউটি পার্লারে ফেসিয়ালের পেছনে হাজার টাকা ব্যয় না করে পাশের মুদি দোকান থেকে কিনে আনুন আধা কেজি কালোজিরা। কালোজিরা বেটে তাতে লেবুর রস আর চিনি মিশিয়ে মিশ্রণটি মাখুন পুরো মুখে। ১০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহখানেক এই পদ্ধতি অনুসরণ করুন, দেখবেন ব্রন পালাবে বাপ বাপ করে।
৭. সুস্থ দাঁতের জন্য: যাদের দাঁতে ব্যথা হয়, তারা কালোজিরা তেল ভিনেগারে মিশিয়ে তা দিয়ে কুলকুচি করুন। দাঁতে ব্যথা সেরে যাবে। মাড়ি থেকে রক্ত পড়ার সমস্যা থাকলে টক দইয়ে কালোজিরা বাটা মিশিয়ে মিশ্রণটি মাড়িতে লাগিয়ে রাখুন। দুই মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহখানেক পর মুক্তি মিলবে এই সমস্যা থেকে।
৮. ওজন কমাতে: রোজ ঘুমাতে যাওয়ার আগে আধা কেজি টকদইয়ের সঙ্গে কালোজিরা বাটা মিশিয়ে খেয়ে দেখুন। ওজন কমবে আগের চেয়ে অনেক দ্রুত।
৯. চুল পড়া রোধে: কালোজিরার তেলের সুখ্যাতি আছে চুলপড়া রোধে। এই তেল কেবল চুল পড়াই রোধ করে না, মাথার তালুতে যোগায় আদ্রতা। ফলে চুলের বৃদ্ধিও বেড়ে যায় বহুগুণে।
১০. কিডনি রোগের সমাধান: বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিয়মিত কালোজিরা খেলে কিডনির ব্লাডার সুরক্ষিত থাকে। ফলে কিডনিতে জমে থাকা পাথরও দূর হয়।
-এনডিটিভি
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply