ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনার যথাযথ কৌশল তৈরি করে তা বাস্তবায়ন করা বাংলাদেশ সরকারের উচিত হবে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।
বুধবার (৮ মে) সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এমন পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি।
আইএমএফ আরও বলেছে, টেকসই আর্থিক খাত তৈরির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের উচিত হবে চলমান ঝুঁকিভিত্তিক তদারকি ব্যবস্থার কাজটিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। পাশাপাশি দরকার করপোরেট সুশাসনের উন্নয়ন ও আইনি কাঠামোর সংস্কার।
আইএমএফের সঙ্গে বাংলাদেশের ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ কর্মসূচি রয়েছে। এ কর্মসূচি থেকে দুই কিস্তিতে ১০০ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। আইএমএফের নির্বাহী পর্ষদের অনুমোদন সাপেক্ষে তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার পাওয়ার কথা চলতি মাসেই।
এর আগে দুই সপ্তাহের জন্য ঢাকায় এসে আইএমএফের দল ঋণ কর্মসূচির দ্বিতীয় পর্যালোচনা বৈঠক শুরু করে গত ২৪ এপ্রিল। অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খানের সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে গতকাল তা শেষ করে আইএমএফ।
এরপর গতকালই সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে আইএমএফের গবেষণা বিভাগের উন্নয়ন সামষ্টিক অর্থনীতি শাখার প্রধান ক্রিস পাপাজর্জিও বলেন, ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চমধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে বাংলাদেশকে বাণিজ্য বহুমুখীকরণ, বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে, ব্যবসায়ের পরিবেশ উন্নয়ন ও সুশাসনে জোর দিতে হবে।
সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেছেন, মানি লন্ডারিং নিয়ে আইএমএফ কখনো কোনো কথা বলে না। বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ক্রিস পাপাজর্জিও বলেন, আইএফএফের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নীতি হচ্ছে, অর্থ পাচার নিয়ন্ত্রণ। যে সুশাসন প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়, তার মধ্যেই কিন্তু অর্থ পাচার রোধের সমাধানের কথা বলা আছে।
বাংলাদেশ মাসে মাসে জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয় ব্যবস্থা চালু করায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে আইএমএফের দলটি। ক্রিস পাপাজর্জিও বলেন, ‘সরকার এ ব্যাপারে কাঠামোগত সংস্কার করেছে। বিনিময় হারের ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগকেও আমরা স্বাগত জানাই। সুদের হারও যত দূর সম্ভব নমনীয়। সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি আরও বজায় থাকলে মূল্যস্ফীতির চাপ কমবে।’
আইএমএফ বলেছে, বাংলাদেশের কর-জিডিপির (মোট দেশজ উৎপাদন) হার নিম্নতম। কর সংগ্রহে অগ্রাধিকার দিতে হবে এবং সে জন্য প্রয়োজনীয় কৌশল প্রণয়ন করতে হবে। কর বেশি সংগ্রহ করতে পারলেই তা সামাজিক কল্যাণে ব্যয় করা সম্ভব হবে এবং উন্নয়নমূলক কাজেও বেশি করে হাত দেওয়া যাবে। জিডিপির দশমিক ৫ শতাংশ হারে কর-রাজস্ব যাতে বাড়ে, আগামী বাজেটে সে জন্য প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply